Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাজনৈতিক কারণে রোহিঙ্গার পাশে সরকার

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রোহিঙ্গা ইস্যুতে জিয়াউর রহমানের দৃষ্টান্ত অনুসরণের আহŸান আমীর খসরু
 মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের প্রতি মানবতা বা নৈতিক কারণে নয়, রাজনৈতিক কারণে সরকার পাশে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগ যখন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তখন রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ জন্য রোহিঙ্গাদের বিষয়ে প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের করা দৃষ্টান্ত অনুসরণ করতে সরকারের প্রতি আহŸান জানান তিনি। গতকাল মলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরাম ওই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
আমীর খসরু বলেন, ১৯৭৮ সালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। রোহিঙ্গাদের স্বাগত জানিয়েছেন এবং মিয়ানমার সরকারকে বাধ্য করেছেন রোহিঙ্গাদের ফেরত নিয়ে যাওয়ার জন্য। সেটা একটা চুক্তির মাধ্যমে হয়েছে। এটা মৌখিক কোনো বিষয় নয়। এটা দেখুন। এটা জাতীয় ইস্যু। এটা বিএনপি, আওয়ামী লীগের কোনো ইস্যু নয়। বিএনপি বিষয়টি সফলভাবে করতে পেরেছে বলে আপনারা সে চুক্তিগুলোকে সামনে এনে, সে দৃষ্টান্ত গুলোকে সামনে এনে এর সমাধান করবেন না? এবং জাতিকে বড় ধরনের বিপদের দিকে ঠেলে দেবেন সেটা তো হতে পারে না।
গত ২৪ আগস্টের পর থেকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে বহু রোহিঙ্গা কক্সবাজার ও বান্দরবানের বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে। জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত চার লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলমান প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থা অস্পষ্ট দাবি করে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এটি বাংলাদেশের জন্য স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিরাপত্তার প্রশ্ন। সুতরাং রাজনৈতিক অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকারের অবস্থান আমি মনে করি পরিষ্কার না। আমীর খসরু বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুর শুরুতে যখন মানবেতর অবস্থায়, তখন পুশব্যাক করা হলো। তখন এটাই ছিল বাংলাদেশের অফিসিয়াল অবস্থান। তখন রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী বলা হলো, কেউ কেউ মাদক পাচারকারী বলল। বিশ্ব নেতৃবৃন্দ যখন আসছেন, ত্রাণ আসছে, বিশ্ব জাগ্রত বিবেকবান মানুষের অবস্থান যখন পরিষ্কার, তারা যখন জাতি নিধন এবং এটা গণহত্যা বলা শুরু করল। দেশের সব মানুষ যখন মানবতার পক্ষে, দেশ ও দেশের বাইরের চাপ শুরু হলো, তখন সরকারের সুরে পরিবর্তন এসেছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলতে পারছেন না রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচার আন্তর্জাতিক আদালতে হবে কি না? যদি রাজনৈতিক অবস্থান থেকে দেশের মানুষকে বোকা বানিয়ে রোহিঙ্গা ইস্যুতে অবস্থান নিয়ে থাকেন তবে এর ফল শুভ হবে না।
তিনি বলেন, এই অঞ্চলের দেশগুলোর অবস্থান দেখেছি। সব দেশই নৈতিকতার দিক থেকে হেরে গেছে। যারা সু চি’র পক্ষে অবস্থান নিয়েছে তারা হেরে গেছে। তারা একটি উগ্র জাতীয়তাবাদী চিন্তাকে উস্কে দিচ্ছে। একটি জাতিকে স্টেটলেস করলে, সেই জাতির ভয় চলে যায়। সেক্ষেত্রে অর্থনৈতিক লাভের চিন্তা দূরে থাক, নিরাপত্তার জন্য ভয়ংকর দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করা হচ্ছে। এজন্য রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে। েেরাহিঙ্গা ইস্যুতে বিএনপি রাজনীতি করতে এমন সমালোচনারও জবাব দেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যু একটি বড় রাজনৈতিক বিষয়, এটা নিয়ে রাজনীতি হবেই। এই ইস্যুতে মতামত প্রকাশ করবে, বাংলাদেশের পক্ষে অবস্থান করবে এটাই স্বাভাবিক। এসময় তিনি বলেন, ত্রাণ দেয়া বন্ধ করতে পারবেন, কিন্তু জনগণকে ভোট দেয়া থেকে বিরত রাখতে পারবেন না। জনগণের ভোটের মাধ্যমেই জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ