মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
সা¤প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বে ঘটা যাওয়া সবচেয়ে বড় ও নিষ্ঠুর জাতিগত নিধনযজ্ঞের ঘটনা রোহিঙ্গা নিপীড়ন। রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলাকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে, মিয়ানমার সেনাবাহিনী পুড়িয়ে দিয়েছে রাখাইনের বহু গ্রাম। আতঙ্কিত হয়ে লাখ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে গেছে। জাতিসংঘ কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, মিয়ানমারে কয়েক প্রজন্ম ধরে বাস করা সত্তে¡ও রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব বাতিল করে দেয়া হয়। বিগত ২৫ আগস্ট, রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিত্ব করার দাবি করে একটি ছোট বিদ্রোহী দল বেশকিছু পুলিশ পোস্ট ও সেনাবাহিনীর শিবিরে হামলা চালায়। ওই হামলায় প্রায় ডজনখানেক নিরাপত্তাকর্মীকে হত্যা করে তারা। ওই হামলার পর থেকে রাখাইন রাজ্যে স্কর্চড-আর্থ অভিযান চালানো শুরু করে মিয়ানমার সামরিক বাহিনী। উল্লেখ্য, স্কর্চড-আর্থ অভিযান হচ্ছে সামরিক বাহিনীর এমন এক অভিযানে যেটিতে শত্রুপক্ষের কাজে আসতে পারে এমন যেকোন কিছুকে টার্গেট করা হয়। এই স্কর্চড-আর্থ অভিযানে এখন পর্যন্ত রাখাইনের ৪৭১ টি রোহিঙ্গা গ্রামের মধ্যে ১৭৬টি গ্রাম পুরোপুরি শূন্য হয়ে গেছে। স্যাটেলাইট-ছবিসহ মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সংগ্রহ করা প্রমাণে দেখা যায়, বহু গ্রাম একেবারে পুড়ে ছারখার হয়ে গেছে। মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সংস্থাটি ৬২টি গ্রামে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার প্রমাণ পেয়েছে। এছাড়া আরও ৩৫ টি গ্রাম এরকম হামলায় ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয়েছে। সীমান্তে কার্যরত সাংবাদিকরা মিয়ানমার অঞ্চল থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখার খবর দিয়েছেন। রাখাইনে সাংবাদিক, ত্রাণকর্মী ও কূটনীতিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে রেখেছে মিয়ানমার সরকার। এ কারণে আরও অঞ্চলটির ভেতরে কি ঘটছে তার বিস্তারিত বর্ণনা সম্বলিত প্রতিবেদন প্রকাশ হচ্ছে না। রাখাইনে সংঘটিত এই অপরাধ, ২০০০ সালের শুরুর দিকে সুদানের দারফুর ও ১৯৯০ সালে ঘাটে কসোভোতে ঘটা নিধনযজ্ঞের চেয়ে কোন অংশে কম নয়। তবে রোহিঙ্গা নিধন নিয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া বিস্ময়করভাবে দুর্বল। রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ এক রুদ্ধদ্বার বৈঠক করে। বৈঠক শেষে পরিষদের সর্বনি¤œ পর্যায়ের বিবৃতি প্রকাশ করে যেটিতে এই নির্যাতনের প্রতি নিন্দা জানানো হয়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও একই রকম সতর্কতা অবলম্বন করেছে। অন্যদিকে, মিয়ানমারের কার্যত নেত্রী অং সান সুচির ওপর দেয়া হয়েছে ব্যাপক নজর। এই সহিংসতা নিয়ে এখনও মুখ খুলেননি তিনি। এর নিন্দাও জানাননি। পাশাপাশি সামরিক বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতাও তার হাতে নেই। যেটা এখন দরকার তা হচ্ছে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর ওপর সরাসরি চাপ সৃষ্টি করা। ওবামা প্রশাসন দেশটিতে গণতান্ত্রিক ধারা প্রবর্তনের চেষ্টায়, সামরিক বাহিনীর জেনারেলদের ও তাদের নিয়ন্ত্রণকারী ব্যবসায়ীদের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নিয়েছে। কিন্তু এখন অর্থমন্ত্রণালয়ের উচিৎ তা পুনরায় আরোপ করা। কোন কোন কর্মকর্তা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিলে তারা অং সান সুচি ও তার বেসামরিক সরকারের বিরুদ্ধে চলে যেতে পারে। এমন উদ্বেগও প্রকাশ করা হয়েছে যে, সুচি চাইলে স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যে তার বিরুদ্ধে করা আন্তর্জাতিক সমালোচনাগুলোকে ব্যবহার করতেও পারেন। জাতিসংঘে মিয়ানমারকে আগলে রেখেছ চীন। মিয়ানমারে চলা অত্যাচার নিয়ে চীনের মাথাব্যথা নেই। বরঞ্চ, এই সুযোগে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে মিয়ানমারের সম্পর্ক খারাপ হওয়ার বিষয়টিকে স্বাগতমই জানাচ্ছে চীন। তাই জাতিসংঘের কখনও উচিত হবেনা জোর করে নিরাপত্তা পরিষদের কোন সিদ্ধান্ত এই নিধনযজ্ঞ থামাতে চাপিয়ে দেয়া। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের যত বেশি প্রমাণ মিলবে- নির্যাতনকারীদের তত বেশি মূল্য দিতে বাধ্য করা হোক (নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে)- তাহলে তত জলদি এই নির্যাতন থামবে। ওয়াশিংটন পোস্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।