পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
১৬২ জন দালালকে গ্রেফতার বিভিন্ন মেয়াদে সাজা
শরণার্থী হিসেবে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের বাড়ি ভাড়া না দিতে ও কোন পরিবহনে না নেয়ার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। দমন-পীড়নের মুখে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ছড়িয়ে পড়ার খবর আসার প্রেক্ষাপটে গতকাল শনিবার পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এই নির্দেশনা পাঠানো হয়। অন্যদিকে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা কক্সাবাজার থেকে দেশের কোথাও যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সেজন্য চট্টগ্রামে ২৭ চেকপোস্টে বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে পুলিশ। চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি এস এম মনির-উজ-জামান দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, রোহিঙ্গাদের মানবিক কারনে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে যেন কোন সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি না হয় সেটা লক্ষ রাখা হচ্ছে। তাদের নিদিষ্ট্র এলাকায় থাকার ব্যবস্থা করছেন সরকার। এর বাইরে সারাদেশে যেন ছড়িয়ে না পড়ে সে জন্য ২৭টি চেকপোষ্ট বসানো হয়েছে। দু’টি জায়গায় রোহিঙ্গাদের পুনবাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কিন্তু দালাল চক্র রোহিঙ্গাদের নানাভাবে হয়রানী করছে। এর মধ্যে ১৬২জন দালালকে গ্রেফতার এবং বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে। ডিআইজি এস এম মনির-উজ-জামান আরো বলেন, সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী পুলিশ প্রশাসন সব ধরনের কাজ করছে। আশ্রিত রোহিঙ্গাদের কেউ যেন প্রতারনার মাধ্যমে প্রতারিত করতে না পারে সে বিষয়ে পুলিশ প্রশাসন সক্রিয় রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। সরকার রোহিঙ্গাদের জন্য নির্দিষ্ট বাসস্থান, খাওয়া, চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে। তাদের ব্যক্তিপর্যায়ে কোনো ধরনের বাড়িভাড়া, আশ্রয় কিংবা যাতায়াতে সাহায্য না করার আহŸান জানিয়েছে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স। গতকাল শনিবার দুপুরে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) সহেলী ফেরদৌস স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সা¤প্রতিক সময়ে মিয়ানমারের নাগরিক (রোহিঙ্গা স¤প্রদায়) যারা তাদের দেশ থেকে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন তারা নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন না করা পর্যন্ত নির্দিষ্ট ক্যাম্পে অবস্থান করবেন। তাদের অবস্থান এবং গতিবিধি শুধুমাত্র কক্সবাজারের নির্দিষ্ট ক্যাম্পে সীমাবদ্ধ থাকবে। তারা ক্যাম্পের বাইরে তাদের আত্মীয়স্বজন অথবা পরিচিত ব্যক্তিদের বাড়িতে অবস্থান ও আশ্রয় গ্রহণ করতে পারবেন না। তাদের নির্দিষ্ট ক্যাম্পের বাইরে কেউ বাড়িভাড়া দিতে পারবেন না। বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, রোহিঙ্গারা নির্দিষ্ট ক্যাম্পের বাইরে অন্যান্য স্থানে ছড়িয়ে পড়তে অথবা যাতায়াত করতে পারবে না। তারা সড়ক, রেল, নৌপথে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গমন করতে পারবে না। সবধরনের পরিবহনের চালক-শ্রমিক এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে রোহিঙ্গাদের পরিবহন না করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কেউ আশ্রয়, বাড়িভাড়া দেয়ার অথবা তাদের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ছড়িয়ে পড়ার অথবা অবস্থানের খবর জানলে স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। সূত্র জানায়, বাংলাদেশে দশকের পর দশক ধরে ৪ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী হয়ে আছে। এদের বিরুদ্ধে জঙ্গি তৎপরতাসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ার তথ্যও সরকারের কাছে রয়েছে। তিন সপ্তাহ আগে রাখাইনে নতুন করে সহিংসতা শুরুর পর ইতোমধ্যে ৪ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে পড়েছে। এই সংখ্যা আরও বাড়ছে। নতুন শরণার্থীদের জন্য কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালীতে আশ্রয় শিবির করেছে সরকার। সেখানে তাদের নিবন্ধনও করা হচ্ছে। তবে এরই মধ্যে চট্টগ্রামের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়েছেন রোহিঙ্গারা; বেশ কয়েকজনকে ধরার পর উখিয়ায়ও ফেরত পাঠানো হয়েছে। মধ্যাঞ্চলের মানিকগঞ্জ এবং পূর্বাঞ্চলের সুনামগঞ্জেও রোহিঙ্গা ধরা পড়েছে। এর মধ্যেই রোহিঙ্গাদের বাসা ভাড়া প্রদান বা চলাচলের ক্ষেত্রে নির্দেশনা জারি করে পুলিশ সদর দপ্তর। গত ২৪ আগস্ট রাখাইনে দুই ডজনের বেশি সেনা ও পুলিশ ক্যাম্পে হামলার পর রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের ধরার নাম করে সেনাবাহিনী মায়ানমারে ধারাবাহিক হামলা-নির্যাতন অগ্নিসংযোগ শুরু করে। নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পেতে হাজার হাজার রোহিঙ্গার ঢল নামে বাংলাদেশ মুখে। স¤প্রতি চট্টগ্রাম শহরসহ দেশের বিভিন্ন উপজেলায় রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঘটেছে। চট্টগ্রামের পতেঙ্গা, চান্দগাঁও, বাকলিয়া, হাটহাজারী, সীতাকুন্ড এলাকায় রোহিঙ্গাদের আটক করে ইতোমধ্যে কক্সবাজারে ফেরত পাঠিয়েছে পুলিশ। এরই প্রেক্ষিতে চেকপোস্টগুলোতে বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। কক্সবাজার থেকে রোহিঙ্গারা যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে, তা ঠেকাতে বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও চট্টগ্রামে পুলিশের মোট ২৭টি চেক পোস্ট বসানো হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে সতর্কতা বার্তায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা কক্সবাজার ও বান্দরবান থেকে পাহাড়ি ও সড়কপথে নানা কৌশলে চট্টগ্রাম মহানগরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় প্রবেশ করছে। রোহিঙ্গারা কক্সবাজার ও বান্দরবানের শরণার্থী ক্যাম্প থেকে যাতে কোনভাবে অনুপ্রবেশ করতে না পারে তার জন্য কঠোর অবস্থান ও ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।