মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
রোহিঙ্গাদের খাদ্য সরবরাহে সহায়তা করবে ভারত। কিন্তু তারা মিয়ানমারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলবে না। ‘ইন্ডিয়া টু হেল্প বাংলাদেশ ফিড রোহিঙ্গাস, বাট উইল নট এমবেরেস মিয়ানমার’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ কথা লিখেছেন সাংবাদিক অনির্বাণ ভৌমিক।
তার এ লেখাটি আজ শনিবার প্রকাশিত হয়েছে ভারতের অনলাইন ডেকান হেরাল্ডে।
এতে বলা হয়েছে, ঢাকার চাপাচাপিতে ন্যাপিডকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ‘চেক’ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে নয়া দিল্লি। কিন্তু মিয়ানমার থেকে বাণের পানির মতো বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ছুটে আসার বিষয়ে সতর্ক পা ফেলবে নয়া দিল্লি। ওই প্রতিবেদনে অনির্বাণ ভৌমিক আরো লিখেছেন, টেলিফোনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে কথা বলেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
হাসিনার উপ প্রেস সচিব নজরুল ইসলাম বলেছেন, সুষমা স্বরাজ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন যে, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নৃশংসতা বন্ধে মিয়ানমারকে আহ্বান জানিয়েছে ভারত। দু’নেত্রীর মধ্যে এ কথোপকথন নিয়ে নয়া দিল্লি কিন্তু প্রকাশ্যে কোনো কথা বলে নি। হাসিনার সঙ্গে সুষমা স্বরাজের কথোপকথনের যে বিবৃতি দিয়েছেন নজরুল ইসলাম তা নিয়ে বাংলাদেশের মিডিয়ায় যে খবর প্রকাশিত হয়েছে সে বিষয়ে নয়া দিল্লি নিশ্চিতও করে নি। আবার প্রত্যাখ্যানও করে নি।
নয়া দিল্লির সূত্রগুলো ডেকান হেরাল্ডকে বলেছেন, প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গার জন্য খাদ্য ও অন্যান্য দরকারি সহযোগিতার বিষয়ে ভারত হাসিনার সরকারকে সব রকম সহযোগিতা দিতে চেয়েছে। এসব রোহিঙ্গা আগস্টের শেষ সপ্তাহ থেকে সহিংসতার হাত থেকে রক্ষা পেতে মিয়ানমার ছেড়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।
শুক্রবারে ভারত ৫৪ টন চাল, ডাল, বিস্কুট ও অন্যান্য সামগ্রী তুলে দিয়েছে বাংলাদেশের হাতে। এসব সহায়তা মিয়ানমার থেকে আসা শরণার্থীদের মধ্যে বিতরণের কথা। মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের দল বেঁধে বাংলাদেশে আসায় এটা ছিল বাংলাদেশকে দেয়া ভারতের দ্বিতীয় মানবিক সহায়তা। প্রথম দফায় ৭০ টন ত্রাণ সামগ্রী চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের মাধ্যমে বৃহস্পতিবার হস্তান্তর করা হয়।
ঢাকার সঙ্গে নয়া দিল্লির সম্পর্কের বিষয়ে ওয়াকিবহাল এমন সূত্রগুলো বলেছেন, রোহিঙ্গাদের মধ্যে খাদ্য ও আশ্রয়ে শেখ হাসিনার সরকারকে সহায়তা দেবে ভারত। যাতে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে এই ইস্যুকে ব্যবহার করার সুযোগ না পায় বাংলাদেশের কট্টরপন্থীরা।
২০০৯ সাল থেকে ঢাকায় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারে নেতৃত্ব দিচ্ছেন শেখ হাসিনা। তিনি বাংলাদেশের ধর্মীয় উগ্রবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান বজায় রেখে চলেছেন। বাংলাদেশে আগামী বছর ডিসেম্বরে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা। সেই নির্বাচনে তিনি টানা তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার চেষ্টা করবেন। তবে মিয়ানমার থেকে যেসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসছেন তাদের বিষয়ে কড়া সতর্কতা অবলম্বন করছে নয়া দিল্লি। কারণ, এ ইস্যুটির সঙ্গে ভারতের নিরাপত্তার বিষয়টি জড়িত। বিশেষ করে খবর প্রকাশিত হয়েছে যে, মিয়ানমারের ভিতরে যে রোহিঙ্গা উগ্রপন্থীরা তাদের কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে তাদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের যোগাযোগ রয়েছে।
নয়া দিল্লিতে সূত্রগুলো বলেছেন, মিয়ানমারে অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলার বিষয়টি সতর্কতার সঙ্গে এড়িয়ে যাচ্ছে ভারত। ওদিকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী, মিয়ানমারে গণতন্ত্রের পক্ষে লড়াই করে খ্যাতি কুড়ানো অং সান সু চির ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছেই। বিশেষ করে সর্বশেষ দফায় রাখাইনের সহিংসতা থেকে মুক্তি পেতে রোহিঙ্গাদের দেশ ত্যাগ শুরুর পর তা তীব্র হয়েছে।
দিল্লির জন্য এমন অবস্থা সৃষ্টির কোনো সুযোগ নেই, যাতে চীনের সঙ্গে মিয়ানমারে অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন সরকারের ঘনিষ্ঠতা বেড়ে যায়। এরই মধ্যে বেইজিং পরিষ্কার করে বলে দিয়েছে, রাখাইনে উগ্রপন্থীদের দমনপীড়নে ন্যাপিড’র পাশে আছে তারা। বেইজিং রাখাইনের এ সমস্যাকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
এ মাসের শুরুর দিকে ন্যাপিড সফরে গিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ সময় সুচি ও তার সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলা থেকে সতর্কতা অবলম্বন করেছে নয়া দিল্লি। মোদি বলেছেন, রাখাইনে উগ্রপন্থীদের সহিংসতায় মিয়ানমারের উদ্বেগ শেয়ার করে ভারতও। এমন কি তিনি রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতার কথাও উল্লেখ করে নি।
অনির্বাণ ভৌমিক আরো লিখেছেন, গত ৯ সেপ্টেম্বর ভারতের পররাষ্ট্র সচিব এস জয়শঙ্করের সঙ্গে সাক্ষাত করেন নয়া দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সৈয়দ মুয়াজ্জেম আলী। এর পরই নয়া দিল্লি তার নীরবতা ভাঙে। জয়শঙ্করকে মুয়াজ্জেম আলী বলেন যে, মিয়ানমার থেকে এত বিপুল সংখ্যক শরণার্থী বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর বিরাট চাপ ফেলেছে। তাই বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয় মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানাতে, যাতে তারা পরিস্থিতিতে পরিপক্বতার পরিচয় দেয় এবং নিবৃত থাকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।