Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নির্যাতন বন্ধ করুন রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিন

কুতুপালং ক্যাম্প পরিদর্শনকালে মিয়ানমারকে ৪০ দেশের প্রতিনিধি

শামসুল হক শারেক, দ্বীপন বিশ্বাস উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে ফিরে : | প্রকাশের সময় : ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১:০২ এএম, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

প্রতিনিধিদের উপস্থিতকালেই আগুনে পুড়ছে রোহিঙ্গাদের ৭০-৮০টি ঘর-বাড়ি
কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন ৪০টি দেশের রাষ্ট্রদূত ও কুটনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। গতকাল বুধবার বাংলাদেশের পরাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মোহাম্মদ আলীর নেতৃত্বে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, চীন, ভারত, অষ্ট্রেলিয়াসহ ৭০ সদস্য বিশিষ্ট বিশ্বের প্রভাবশালী রাষ্ট্রদূতরা উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে আসেন। পরিদর্শন শেষে তারা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করে সাংবাদিকদের সামনে এক সংক্ষিপ্ত ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘একসঙ্গে এত মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য সত্যিই বাংলাদেশ প্রশংসার দাবি রাখে। আমরা আন্তরিকভাবে এই পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে তুলে ধরবো। মিয়ানমার সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাবো, এই হামলা বন্ধ করে তারা যেন স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনে ও রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়। রোহিঙ্গাদের এই পরিস্থিতিতে আমরা উদ্বেগ প্রকাশ করছি।’ ব্রিফিংয়ে ব্রিটেন, চীন ও ভারতের কূটনীতিকরা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। গতকাল বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে কুতুপালং নিবন্ধিত শরণার্থী ক্যাম্পে পৌঁছান বিদেশি কূটনীতিকরা। এরপর ক্যাম্পের বিভিন্ন বøক ঘুরে দেখেন এবং রোহিঙ্গাদের উপর মিয়ানমার বাহিনীর নির্যাতনের বর্ণনা শুনেন। 
মিয়ানমারের সামরিক জান্তার বর্বর নির্যাতন আর নিপীড়নের শিকার এদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের করুন পরিস্থিতি দেখতে এসেছে ভারত, চীন, যুক্তরাস্ট্রসহ ত্রিশটি দেশের রাষ্ট্রদূত ও ৬০ বিদেশী কুটনৈতিক।
রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে এক প্রশ্নের জবাবে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন,রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ইতিবাচক হাই কমিশনার বলেন, রোহিঙ্গাদের নিয়ে এ মানবিক বিপর্যয়ে বাংলাদেশের পাশে থাকবে যুক্তরাজ্য।
এসময় বাংলাদেশে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মোহাম্মদ আলী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ও পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। প্রতিনিধিদলটি বিকাল চারটা নাগাদ ঢাকায় ফিরে যান।
উল্লেখ্য গতবছর মিয়ানমারের আরাকান (রাখাইন) রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর মিয়ানমার সরকারী বাহিনীর নির্মম নিষ্ঠু নির্যাতনের প্রমানসহ ‘কফি আনান কমিশনের’ রিপোর্ট পেশ করার পরের দিন ২৪ আগষ্ট মিয়ানমার সেনা-পুলিশ ও মগদস্যুরা রোহিঙ্গাদের উপর হায়েনার মত হামলে পড়ে। গোটা আরাকানকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে বিরান ভূমিতে পরিনত করে। ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম কায়দায় রোহিঙ্গাদের উপর গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। ওই গণহত্যা থেকে প্রাণে বাঁচতে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেয়। এটি বাংলাদেশের উপর যেমন বোঝা, তেমনিভাবে জাতিসঙ্ঘের প্রতি মিয়ানমার সরকারের বৃদ্ধাংগুলি দেখানোর শামিল বলেই মনে করা হচ্ছে।
এদিকে, প্রতিনিধি দলের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনকালে গতকাল বুধবারেও আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে তুমব্রæ সীমান্তের কয়েক শত গজের মধ্যে রোহিঙ্গাদের ৭০-৮০টি ঘর-বাড়ি। বাংলাদেশের এপার থেকে আগুন জ্বলার দৃশ্য প্রত্যক্ষ করলেন শত শত মানুষ। দুপুরে ৮/১০ টি বাড়িতে আগুন দেয়া হলেও সন্ধ্যার দিকে ৭০/৮০টি বাড়িতে একসাথে আগুন ধরিয়ে দেয়। দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকা রোহিঙ্গা মুসলমানদের বাড়ি-ঘরগুলোর এ দৃশ্য এপারের শত শত মানুষ প্রত্যক্ষ করেছেন। বিকেল পৌনে পাঁচটায় তাদের নিয়ে যাওয়া বিমানে করেই ঢাকায় ফিরে যান প্রতিনিধিরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ