Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোহিঙ্গাদের দেশত্যাগে মিয়ানমারে মাইকিং করা হচ্ছে

ইনকিলাব ডেস্ক: | প্রকাশের সময় : ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:১৫ এএম

শেষবারের মতো মাইকিং করে রোহিঙ্গাদের এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দিচ্ছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এরপরই ছোট ছোট গ্রামে আগুন দিচ্ছে তারা। গতকাল মিয়ানমারের বিভিন্ন এলাকা থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা এই তথ্য জানান।

তারা জানান, স্থানীয় মগদের দিয়ে সেনাবাহিনী মাইকিং করাচ্ছে। এরপরই আগুন দেয়। মংডুর ম্যারুল্লা পাড়া এলাকার মো. শফি (৫৫) বলেন, ‘বাড়ি থেকে হেঁটে নাফ নদীর তীরে আসতে আমাদের একদিন লেগেছে। কোনও টাকা পয়সা ছিল না। আল্লাহর ওয়াস্তে মাছ ধরার নৌকায় পার করে দিয়েছে। আমাদের বাড়ি আগে পোড়ায়নি। সোমবার মগরা মাইকিং করে ঘর থেকে বের হয়ে যেতে বলে। এরপর সেনাবাহিনী আমাদের ঘর-বাড়িতে আগুন দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘স্ত্রী বেগম বাহার, ছয় মেয়ে ও তিন ছেলেসহ মোট ১১ জনকে নিয়ে বাংলাদেশে এসেছি। আমাদের কোনও আত্মীয়-স্বজন নেই বাংলাদেশে। সরকার যদি জায়গা দেয় থাকবো।’
মঙ্গলবার বিকালে মংডুর নলবনিয়া থেকে টেকনাফে আশ্রয় নিয়েছেন জাহেদা বেগম। তিনি বলেন, ‘মংডু পৌরসভার পাশেই আমাদের বাড়ি। সোমবার সকালে কয়েকশ’ সেনাবাহিনী আসে। এর আগে মগরা মাইকিং করে ঘর থেকে বের হয়ে যেতে বলে। আমরা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে ঘরের পেছনে আশ্রয় নেই। কিন্তু মগরা ঠ্যা ঠ্যা গুলি করতে থাকে। এরপর যে যেভাবে পেরেছি দৌড়ে পালিয়েছি।’
এই নারীর স্বামীর নাম মো. জোহা। তিনি দিনমজুরের কাজ করতেন নলবনিয়ায়। বাংলাদেশে এসে এখনও কোনও সহযোগিতা পায়নি। কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্পে তারা আশ্রয় নেবেন।
মংডুর আংডাং এলাকার বাসিন্দা জামাল হোসেন (৩৮) গতকাল একই তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদের সবাইকে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলে। এজন্য আমরা চলে আসছি। মাইকিং করে সবাইকে বাড়ি ছাড়তে বলছে। এরপর আগুন ধরিয়ে দেয় মিলিটারি। জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে চলে এসেছি।’
তিনি আংডাং এলাকায় গাছ কাটার কাজ করতেন। মাঝিদের হাতে স্ত্রীর নাকফুল ও কানের দুল দিয়ে নাফ নদী পার হয়ে এসেছেন। স্ত্রী নূরজাহান বেগম বলেন, ‘টাকা পয়সা ছিল না, কানের আর নাকের ফুল দিয়ে নাফ নদী পার হয়েছি। ছেলে মেয়েসহ মোট আটজন বাংলাদেশে এসেছেন। গতকাল সকালও মংডুর নাফ নদীর তীরবর্তী এলাকায় আগুন দিতে জ্বলতে দেখা গেছে। শাহপরীর দ্বীপ থেকে দিনব্যাপী নৌকা গেছে রোহিঙ্গাদের আনতে। মংডুর নাফ নদীর তীরবর্তী এলাকা থেকে নৌকায় করে রোহিঙ্গা নিয়ে আসার সময় মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনও বাধা দিচ্ছে না। নিরাপদেই রোহিঙ্গাদের নিয়ে চলে আসতে পারছে মাছ ধরা নৌকাগুলো।
রোহিঙ্গাদের পার করায় গত রোববার অন্তত ৬ থেকে ৭টি মাছধরা ট্রলারে আগুন দিয়েছে কোস্টগার্ড। কিন্তু তারপরও রোহিঙ্গা পার করা কমেনি। প্রতিদিন রাতেই রোহিঙ্গা প্রবেশ করছে। এমনকি দিনের বেলাতেও নাফ নদী পার হয়ে শত শত রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করছে।
নাফ নদীর তীর ধরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা হেঁটে হেঁটে পাহারা দিলেও রোহিঙ্গা প্রবেশে তারা বাধা দিচ্ছে না। শাহপরীর দ্বীপের জেটির অদূরেই জেলেপাড়ায় ছোটছোট মাছধরা নৌকা থেকে রোহিঙ্গাদের নামতে দেখা যায়। সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন।

 



 

Show all comments
  • আকমান ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ৩:১১ এএম says : 0
    আল্লাহ তাআলা তুমি সবাই কে রক্ষা করো
    Total Reply(0) Reply
  • Mahmud Khondker ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ২:১৩ পিএম says : 0
    Muslim country should form a Muslim trade union and military alliance just like Europe union and NATO. so that who ever attack and kill innocent people will face commercial brooked if it is not work then take military option
    Total Reply(0) Reply
  • Azijur Rahman ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ২:১৬ পিএম says : 0
    Bangladesh government should take action.
    Total Reply(0) Reply
  • Ansur Ullah ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ২:৫৩ পিএম says : 0
    আল্লাহ তুমি যালিম মায়ানমার কে উচিৎ শিক্ষা দাও।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ