Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মিয়ানমার সীমান্তে দু’দফা ভূমি মাইন বিস্ফোরণে নিহত ৩

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের উদ্বেগ

শামসুল হক শারেক এবং জাকের উল্লাহ চকোরী, মিয়ানমার সীমান্ত থেকে : | প্রকাশের সময় : ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বাংলাদেশী যুবকসহ হতাহত ৮
বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্তের নোম্যান্স ল্যান্ডে শত শত ভূমি মাইন স্থাপনের কারণে প্রতিদিন আরাকান থেকে পলায়নপর রোহিঙ্গা ছাড়াও হতাহত হচ্ছে বাংলাদেশী লোকজন। এতে করে বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্তে নতুন করে উদ্বেগ বাড়ছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) ভোরে আবারো দু’দফা ভূমি মাইন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে মিয়ানমার সীমান্তের তুমব্রু পয়েন্টের নোম্যান্স ল্যান্ডে।
শনিবার রাত ১০টার দিকে রেজু আমতলি সীমান্তের জিরো লাইনের কাছে স্থলমাইন বিস্ফোরণ হলে ৩ রোহিঙ্গা নিহত ও একজন আহত হন। সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে হতাহতের এ ঘটনা ঘটে। আহত আবদুল করিমকে চিকিৎসার জন্য উখিয়া হাসপাতালে আনা হলেও লাশগুলো ওপারের জিরো লাইনেই পড়ে রয়েছে।
গতকাল ভোরে তুমব্রু সীমান্তের বাংলাদেশ-মিয়ানমার ৩৭-৩৮নং পিলারের মধ্যস্থানে নোম্যান্স ল্যান্ডের ভাজাবনিয়ার উত্তরে মোরইঙ্গা খাল পয়েন্টে স্থলমাইন বিস্ফোরণের অন্য ঘটনাটি ঘটে। এ সময় ঘুমধুমের বাইশফাঁড়ি এলাকার বাসিন্দা আবুল খায়েরের ছেলে বাংলাদেশী যুবক মো. হাসানসহ (৩২) ৫ জন আহত হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, ভোরে ঘুমধুমের তুমব্রু সীমান্ত দিয়ে হাসান গরু আনতে গেলে বিকট শব্দে মায়ানমার সেনাবাহিনীর পুঁতে রাখা স্থলমাইন বিস্ফোরণে তার একটি পা উড়ে গেছে এবং চোখেও আঘাত লেগেছে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ৩৪ ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মঞ্জরুল হাসান খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। আহত বাংলাদেশী যুবক আবুল খাইরের ছেলে মোহাম্মদ হাসান (২৬) এর নাম জানাগেলেও তাৎক্ষনিকভাবে আহত রোহিঙ্গাদের নাম জানা যায়নি। এভাবে গত ১৫ দিনে অন্তত অর্ধশত ভূমি মাইন বিস্ফোরণের ঘটনায় আহত হয়েছে শতাধিক নারী-পুরুষ।
আগে থেকেই অভিযোগ উঠেছে মিয়ানমার সেনারা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে সীমান্তের নোম্যান্স ল্যান্ডে অজস্র ভূমি মাইন পুঁতে রেখেছে। সেনা-পুলিশের নিষ্ঠুর নির্যাতন ও গণহত্যা থেকে পালাতে গিয়েও যেন অসহায় রোহিঙ্গারা বাচঁতে না পারে সেজন্যই নাকি এই ভূমি মাইন পুঁেত রাখে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।
৯০ এর দশকের আগে পরে মিয়ানমার সেনারা সীমান্তে বিদ্রোহ দমনের অজুহাতে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীান্তের প্রায় ৭০/৮০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে শত শত স্থল মাইন স্থাপন করেছিল। তখন শুধু অর্ধশতাধিক বাংলাদেশী কাঠুরিয়া নিহত হয়েছিল। আহত হয়েছিল দুই শতাধিক।
হিউমেন কনর্সাণ নামের একটি স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠন ও বিআরসিটি নামক একটি মানবাধিকার সংগঠনের যৌথ লেখালেখির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মহলের চাপ পড়ে। তখন মিয়ানমার সীমান্তে ভূমি মাইন স্থাপনের কথা স্বীকার করে এবং ওই সময় কিছু ভূমি মাইন তুলে নিতে বাধ্য হয়েছিল।
সম্প্রতি আরাকানে মিয়ানমার সেনারা নতুন করে গণহত্যা শুরুকরার পর সীমান্তে আবারো ভূমি মাইন স্থানের কথা জানাগেলো। ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল মিয়ানমার সীমান্তে ভূমি মাইন বিস্ফোরণে নিরীহ মানুষ হতাহতের ব্যাপারে উদ্বেগ জানিয়েছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এক প্রতিবেদনে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলে, বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী স্থল বোমা বা ল্যান্ড মাইন পেতে রাখার বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে বৃটেনের মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। তারা বলেছে, এভাবে আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ স্থাল বোমা পেতে রেখে রাখাইনের হাজার হাজার মানুষের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। পলায়নরত রোহিঙ্গাদের অনেকে এতে মারা যাচ্ছেন। শিশুসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন। একজন নিহত হয়েছেন। ৯ সেপ্টেম্বর অম্যানেস্টির ওয়েবসাইটে পোস্ট করা এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়। এতে বলা হয়, অ্যামনেস্টি নিশ্চিত হয়েছে যে, বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে মানব বিরোধী আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ স্থল বোমা পুঁতে রেখেছে মিয়ামনারের সেনাবাহিনী। এতে দুটি শিশুসহ কমপক্ষে তিনজন মারাত্মক আহত হয়েছে। নিহত হয়েছেন কমপক্ষে একজন।
এতে বলা হয়, প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষাতকার ও অস্ত্র বিষয়ক বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণে অ্যামনেস্টি এ বিষয়টি প্রামাণ্য আকারে দেখতে পেয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, রাখাইন থেকে সংকীর্ণ পথে এসব স্থল বোমা পুঁতে রাখা হয়েছে। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায় গত ১৫ দিনে কমপক্ষে দুই লাখ ৭০ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন। বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে রয়েছেন বর্তমানে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ক্রাইসিস রেসপন্স ডিরেক্টর তিরানা হাসান।
তিনি বলেছেন, রাখাইনে ভয়াবহ এক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী পলানোর পথে ভয়ঙ্কর অস্ত্র পুঁতে রেখেছে। এতে সাধারণ মানুষের জীবন অকল্পনীয় ঝুঁকিতে রয়েছে। উত্তর কোরিয়া, সিরিয়ার মতো বিশ্বের অল্প কিছু দেশের মতো মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কাছে এই স্থল বোমা রয়েছে। পলায়নরত মানুষ অথবা যারা এরই মধ্যে পালিয়ে গেছেন তাদের বিরুদ্ধে এমন অমানবিক চর্চা অবিলম্বে বন্ধ করা মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের উচিত বলে মন্তব্য করেন অ্যামনেস্টি কর্মকর্তা।
মিয়ানমারের সেনা, পুলিশ, সীমান্তরক্ষীসহ উগ্র বৌদ্ধদের হাতে ১৮ জন আক্রান্ত রোহিঙ্গা মুসলিম এখন কক্সবাজারের চকরিয়ার মালুমঘাট মেমোরিয়াল খ্রিষ্টান হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। তাদের মধ্যে ৪ শিশু, ১ বয়স্ক মহিলা ও ১৩ যুবক রয়েছে। সূত্র মতে, গত ৭ সেপ্টেম্বর সকালে মিয়ানমারের বুচিদং, মন্ডু ও কিয়াংদং, বলি বাজার, সাহেব বাজার এলাকায় বাড়িঘরে অগ্নি সংযোগ করে এলাকার লোকজনকে এলোপাতাড়ি গুলি বর্ষণ করে হত্যা করছিল। চোখের সামনে অনেকে চটপট করে মৃত্যুর যন্ত্রণা দেখে প্রাণভয়ে পালাতে গিয়ে আজিজুল হক (১৫), মোহাম্মদ ইউছুপ (৩৫), জুবাইর (৩৩), আইয়ুব (১৬), জুবাইর (৪০), রিদুয়ান (২২), মোঃ ওহাব (৩০), কামাল (৪০), হাবিবুল্লাহ (২২), মোঃ সোহাইব (৮), আব্দুন্নবী (২৫), মাহমুদুল হাসান (২৬), ছাবেকুন্নাহার (৫৫), কাউছার বিবি (৪), মিনারা বেগম (৮), তাছনিম আরা (১০), জোহরা (৫) গুলিবিদ্ধ ও বোমায় অনেকের শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে যায়। এতে ২টি পা হারিয়েছে ছাবেকুন্নাহার (৫৫) ও ১টি পা হারিয়েছে কাউছার বিবি (৪), ১টি হাত হারিয়েছে জোহরা (৫)। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তাদেরকে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুনধুম ও উখিয়া সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে। পরে তাদেরকে স্থানীয় লোকজন মালুমঘাট হাসপাতালে এনে ভর্তি করে। আহতদের পরিচর্যাকারী ইসমাঈল নামক মিয়ানমারের এক নাগরিক দাবী করেছেন, একটি বেসরকারি সংস্থার সহায়তায় তারা মালুমঘাট হাসপাতালে চিকিৎসা করা হচ্ছে। গতকাল রোববার ১ টার দিকে হাসপাতালে গিয়ে শয্যায় কাতরানো মিয়ানমারের আহত রোহিঙ্গা মুসলমানদের দেখে মনে হয়েছে তারা সুস্থ হয়ে উঠতে বেশ কিছুদিন সময় লাগতে পারে। তবে সুস্থ হলেও অধিকাংশই চিরতরে পঙ্গুত্ব বরণ করবে। বোমায় ঝলসে যাওয়া মোহাম্মদ জুবাইর দাবী করেছেন, বর্মী বাহিনী প্রতিনিয়ত রোহিঙ্গা মুসলমানদের পাড়ায় পাড়ায় অভিযান চালিয়ে যুবকদের হত্যা ও যুবতীদের ধর্ষণের পর হত্যা করছে। আর বাড়িতে অগ্নি সংযোগের পূর্বে পরিত্যক্ত বাড়ির মালামাল লুট করছে বৌদ্ধ যুবকেরা।
অপ্রতুল ত্রাণ তৎপরতা খাবারের জন্য রোহিঙ্গাদের হাহাকার
রোহিঙ্গারা সন্ত্রাসী, রোহিঙ্গারা বাঙালি- এমন অভিযোগ এনে মিয়ানমার সরকার আর বৌদ্ধরা মিলে তাদের দেশ ছাড়া করার মিশনে নেমেছে। দেশটির সেনাবাহিনী যেন দুর্ভাগা ও নিরস্ত্র রোহিঙ্গাদের নিশানা করে রাইফেল তাক করে রেখেছে। সেনাবাহিনীর ছত্রচ্ছায়ায় বৌদ্ধ স¤প্রদায়ের মগ-মারমা সন্ত্রাসীদের হিংসার আগুনে জ্বলছে আবাল-বৃদ্ধ-বণিতাসহ সব রোহিঙ্গাগোষ্ঠী। নিজ দেশে নির্যাতিত হয়ে ছুটেছে আশ্রয়ের সন্ধানে। রাত-দিন কাটছে পথের ধারে। দু’মুঠো ভাতের জন্য উন্মূখ তারা। খাবার ও পানীয় জলের জন্য হাহাকার চলছে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের মাঝে। আরাকানের জমিদাররা এখানে আজ ফকির, পথের মানুষ। নেই তাদের মাথা গোঁজার ঠাই।
উখিয়া থেকে টেকনাফ পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে, নাফনদীর পাড়ে, তুমব্রু আর নাইক্ষ্যংছড়ির গহিন অরন্য পথে এবং বিস্তৃত বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্তে এখন রোহিঙ্গা আর রোহিঙ্গা। লাখ লাখ এই রোহিঙ্গারা মিয়ানমার এর আরাকান রাজ্য থেকে মিয়ানমার সরকারের নির্যাতনের মূখে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।
দুচোখ যে দিকে যাবে শুধু মানুষ আর মানুষ। কোলে শিশু নিয়ে, কাঁধে বৃদ্ধ মা-বাবাকে নিয়ে ছুটছে আশ্রয়র আশায়। সম্বল বলতে পরনের কাপড় ছাড়া কিছু নেই তাদের। সড়কে খাদ্যবাহী কোন গাড়ি দেখলে পেছন পেছন ছুটছে তারা।
সংবাদকর্মীদের গাড়ি থামিয়ে জানালায় খাবার আর পানির আকুতি জানাচ্ছে রোহিঙ্গারা। এ সংখ্যায় নারী-শিশুদের পরিমাণ বেশী। কখনও কখনও সংবাদকর্মীদের কাপড় টেনে ধরে থামিয়ে দেয় ভুবুক্ষ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষরা। নারীরা তাদের বাচ্চাদের দেখিয়ে খাবার ভিক্ষা চায়।
আগের নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প গুলোতে ইউএনইচসিয়ারসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার খাদ্য কর্মসূচী চালু থাকলেও ২৪ আগষ্টের পর বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মাঝে এখনো সমন্বিত কোন ত্রাণ বিতরণ হচ্ছে না। বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন সীমিত আকারে ত্রাণ বিতরণ করলেও সমন্বয় এর অভাবে কেউ পাচ্ছে আর কেউ এই অবস্থা।
কক্সবাজার শহর থেকে ৪৭ কিলোমিটার দূরে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের পাশে উখিয়ার কাস্টমস ঘাট। বাংলাদেশ টেলিভিশনের স¤প্রচার উপকেন্দ্রের অবস্থান এখানে। এই কেন্দ্রের বিপরীতে রাবার বাগানে বাঁশ আর পলিথিন মুড়িয়ে তৈরী করা হয়েছে নতুন রোহিঙ্গাপল্লী। এখানে আশ্রয় নিয়েছে কমপক্ষে ১০ হাজার রোহিঙ্গা। মিয়ানমারের আরাকান (রাখাইন) রাজ্য থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে যারা উখিয়ার কুতুপালং অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা শিবিরে আশ্রয় পায়নি, তাদের একটি অংশ রাবার বাগানে আশ্রয় নিয়েছে।
গতকাল সকালে সরেজমিন দেখা যায়, কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের দুই পাশে রোহিঙ্গাদের স্রোত। কেউ মাথায় ঝুঁড়ি, কাপড়-চোপড় নিয়ে হাঁটছে। খোঁজছে আশ্রস্থল। কেউ খাবারের টাকার জন্য হাত পাতছে। গাড়ি দেখলেই তারা ছুটে যাচ্ছিল খাদ্য ও পানির আশায়।
সরকারের পক্ষ থেকে বা সরকারী দল ও রাজনৈতিক দল গুলোর পক্ষ থেকে ব্যাপক আকারে এখনো ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে না। তবে বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তির উদ্যোগে বিচ্ছিন্নভাবে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে।
প্রয়োজনীয় খাবার আর পানির অভাবে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে তাদের জীবন। কোনও রকমে নিজেদের জন্য মাথা গোঁজার ঠাঁই করে নিলেও তারা ক্ষুধা-তৃষ্ণার যন্ত্রণা থেকে রেহাই পাওয়ার পথ পাচ্ছে না। এমন বিপন্নতার মধ্যেই বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ৫৭ কোটি ১২ লাখ টাকার সহায়তা ঘোষণা করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন। তবে এই সহায়তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সামান্য।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর একজন শীর্ষ কর্মকর্তা স্পষ্ট স্বীকারোক্তি দিয়েছেন, এই বিপুল পরিমাণ মানুষকে প্রয়াজনীয় সহায়তা দিতে তারা অক্ষম।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মিয়ানমার সরকারের বিচার হওয়া উচিত : মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান
আরাকানে গণহত্যা চালানোর দায়ে মিয়ানমার সরকারের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক। গতকাল রোববার সকালে কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।
কাজী রিয়াজুল হক বলেন, আরাকান রাজ্যে মিয়ানমার বাহিনী যেটি করছে, সেটি গণহত্যার শামিল। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে যা ঘটেছিল, মিয়ানমারের আরাকানে অনুরূপ ঘটনাই ঘটেছে। রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে আমরা এ তথ্যই পেয়েছি।
তিনি বলেন, ওপারে নির্যাতন থেকে প্রাণে বাঁচতে বাংলাদেশে আশ্র নেয়াটাই রোহিঙ্গা সমস্যার মূল সমাধান নয়। পরিস্থিতি শান্ত হলেই তাদের পুনরায় নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে। প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে আন্তর্জাতিকভাবে মিয়ানমারকে চাপ দেয়ার আহŸান জানান তিনি।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হকের আসার কথা থাকলেও তিনি এক ঘণ্টা আগে সকাল সাড়ে ৯টায় টেকনাফের কুতুপালংয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌঁছান। সেখানে ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের উদ্দেশে রওনা হন।



 

Show all comments
  • Md Masud Rana ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ২:১৫ পিএম says : 0
    আল্লাহ তুমি রক্ষা কর।
    Total Reply(0) Reply
  • Sowdud Ahmed Sumon ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ৩:১৫ পিএম says : 0
    হে আল্লাহ্ তুমি রহিঙ্গা মুসলিম দের রহম করো । এ নির্যাতনেরর শেষ কোথায়?
    Total Reply(0) Reply
  • হাফিজ বদরুল আলম ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ৩:২৮ পিএম says : 0
    stop killing ruhinga muslim
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ