Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

গোটা বিশ্ব হত্যার নিন্দা জানিয়েছে এ হত্যা বন্ধ করতে হবে -পররাষ্ট্রমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মিয়ানমারে রাখাইন নির্যাতন ও হত্যা বন্ধ করার তাগিদ দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, মিয়ানমারে যেভাবে রাখাইন হত্যাকান্ড ও বর্বর নির্যাতন চলছে, তাতে গোটা বিশ্ব নিন্দা জানিয়েছে। এ ধরণের হত্যা গ্রহণযোগ্য নয়, এটি বন্ধ করতে হবে।
গতকাল রোববার রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর যে সহিংসতা চলছে, তাতে এ পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার লোক প্রাণ হারিয়েছে।
গতকাল বিকেলে কূটনীতিকদের ব্রিফিংয়ে বিভিন্ন সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী নিহতের এ তথ্য দেন।
রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চলছে। প্রচেষ্টাগুলো পাবলিকলি বললে পরিকল্পনা নষ্ট হয়ে যায় এমন মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অভিযোগ উঠেছে গতমাসে মিয়ানমার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপর রোহিঙ্গারা হামলা চালিয়েছে। ধরে নিলাম রোহিঙ্গারা হামলাও চালিয়েছে, সেজন্য সবগুলো রোহিঙ্গাদের ঘর বাড়ি জ্বালিয়ে দিতে হবে। এটি কোন ধরণের নীতি? কোন ধরণের মন মানসিকতা।
রোহিঙ্গারা ঐতিহাসিকভাবে মিয়ানমারের নাগরিক বলে উল্লেখ করে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী বলেছেন, রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান মিয়ানমারকেই করতে হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে রোহিঙ্গা বিষয়ক বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি বিভিন্ন তথ্য তোলে ধরেন।
তিনি বলেন,প্রমাণপত্র ছাড়া রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ঢুকতে দেয়া হবে না সেদেশের একজন কর্মকর্তার বক্তব্যের প্ররিপ্রেক্ষিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ‘মিয়ানমারের সিকিউরিটি কাউন্সিল সদস্য এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সদস্য বলেছেন, মিয়ানমারের নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র ছাড়া কাউকেই গ্রহণ করবে না মিয়ানমার। আমার প্রশ্ন হচ্ছে- রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। কীভাবে প্রমাণপত্র থাকবে?’
মাহমুদ আলী বলেন, ‘রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক। এটা ঐতিহাসিক সত্য। বিভিন্ন গবেষণা এবং ইতিহাসের পাতায় সেসব লিপিবদ্ধ আছে।’ মন্ত্রী এ সময় মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে রোহিঙ্গাদের ঐতিহাসিক বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন।
কূটনৈতিক ব্রিফিং শেষে যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত জোয়েল রিফম্যান জানান, কফি আনানের নেতৃত্বে রাখাইন পরামর্শক কমিশনের রিপোর্টের বাস্তবায়ন দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। সিনেটে রোহিঙ্গা বিষয়ে একটি রেজুলেশন গৃহীত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত বিবৃতি দিয়েছে।
ব্রিফিং শেষে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, নরওয়ের শীর্ষ কূটনীতিকেরা জানান, এ পর্যন্ত বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ায় বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে। রোহিঙ্গাদের নিয়ে এখন যে সমস্যা তৈরি হয়েছে, তা দূর করতে কীভাবে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করা যায়, এ নিয়ে ব্রিফিংয়ে আলোচনা হয়েছে। আন্তর্জাতিক স¤প্রদায় এ সমস্যা মোকাবিলায় বাংলাদেশের পাশে থাকার প্রতিশ্রæতি দিয়েছে।
প্রথমে পাশ্চাত্যের দেশগুলোর কূটনীতিকদের সঙ্গে এবং পরে মুসলিম দেশের কূটনীতিকদের আলাদাভাবে ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। পরবর্তীতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বিকেল চারটার দিকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের কূটনৈতিকদের ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে তিনি আলোচনা করেন।
জাতিসংঘ বলেছে, গত দুই সপ্তাহে ২ লাখ ৭০ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। বাংলাদেশের শরণার্থীশিবিরগুলোতে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের থাকার মতো যথেষ্ট জায়গা হচ্ছে না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী আরো বলেন, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর যে সহিংসতা চলছে, তাতে এ পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার লোক প্রাণ হারিয়েছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ