মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মিয়ানমারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তাÐবে ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গাদের কাছে ত্রাণ সহায়তা পাঠানোর জন্য প্যাকেজ প্রস্তুত করছে ইরানের রেড ক্রিসেন্ট। বৃহস্পতিবার দেশটির গণমাধ্যমের খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আগামীকাল শনিবার ইরানের ত্রাণবাহী বিমান বাংলাদেশে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। শুকনো খাবার, ওষুধ ও কাপড় থাকছে ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে। ত্রাণ বিতরণের সব আয়োজনও সম্পন্ন করেছে ইরান দূতাবাস।
ইরানের রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি বলছে, মিয়ানমারে নৃশংসতার শিকার রোহিঙ্গা মুসলমানদের কাছে ত্রাণ সামগ্রী পাঠানোর প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। রেড ক্রিসেন্ট এর একজন কর্মকর্তা মুর্তাজা সালিমি জানান, প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির নির্দেশে রোহিঙ্গাদের সহযোগিতার জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং ত্রাণ সামগ্রী পাঠানোর জন্য মিয়ানমার সরকার, আন্তর্জাতিক রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। মিয়ানমার সরকারের অনুমতি পেলে সেখানেও ত্রাণ পৌঁছে দেয়া হবে।
স¤প্রতি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা ও প্রেসিডেন্ট রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যা-নির্যাতনের নিন্দা জানিয়ে সমস্যা সমাধানের আহŸান জানিয়েছেন। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রোহিঙ্গা গণহত্যা বন্ধের জন্য মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহŸানের পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী ব্যাপক কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে।
জাতিসংঘ বলছে, জীবন বাঁচাতে কয়েকদিনে বাংলাদেশে প্রায় এক লাখ ৬৪ হাজার রোহিঙ্গা প্রবেশ করেছে। রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বিভিন্ন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং কূটনীতিকের সঙ্গে আলোচনা করছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত ঘোলাম আলি খোসরু। তিনি বলেন, বিভিন্ন মুসলিম দেশের রাষ্ট্রদূত এবং মন্ত্রী পর্যায়ের লোকের সঙ্গে আমি কয়েকদিনে কথা বলেছি। আগামি সপ্তাহে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে তাদের সঙ্গে এ নিয়ে আরও বিস্তারিত আলোচনা হবে বলে আমার বিশ্বাস। তিনি আরও বলেন, মিয়ানমারে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের এরকম দুরাবস্থা বন্ধে সকল মুসলমানের এগিয়ে আসা উচিত বলে মনে করেন তিনি।
মিয়ানমারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের প্রস্তাব কুয়েতের
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর চলমান নৃশংসতা গণহত্যার সমান বলে মন্তব্য করেছেন কুয়েতের সংসদ সদস্যের একটি দল। সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের বর্বোরোচিত হত্যার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক মহলের ‘লজ্জাজনক নিরবতা’র মধ্যে তারা এ ধরনের মন্তব্য করেন।
কুয়েতের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দেশটির সংসদ সদস্যরা মিয়ানমারের সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য উপসাগরীয় দেশগুলো এবং মুসলিম বিশ্বের প্রতি আহŸান জানিয়েছেন।
সহিংসতা বন্ধের জন্য মিয়ানমারের সরকারের প্রতি চাপ প্রয়োগের জন্য দ্রæত এবং সঠিক পদক্ষেপ নেয়ার আহŸানও জানান তারা।
সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল ইনেজি বলেন, কুয়েতের উচিত মিয়ানমারের সঙ্গে সব ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা এবং সেখানকার নির্যাতিতদের সহায়ত করা।
এছাড়া রোহিঙ্গাদের নির্যাতনের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আরও বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী খালিদ আল-জারুল্লাহ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, মিয়ানমারে ১৮ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা প্রাণ হারিয়েছেন। রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি দেখতে বাংলাদেশে এসেছেন তুরস্কের ফার্স্ট লেডি এমিনি এরদোগান। তিনি বলেছেন, আমরা রোহিঙ্গাদের ওপর ঘটে যাওয়া পাশবিকতার কথা শুনেছি। তাদের (রোহিঙ্গাদের) ওপর ঘটে যাওয়া নিপীড়ন বড়ই অমানবিক, বর্বর। তিনি আরও বলেন, নিজ দেশে এভাবে পাশবিকতার শিকার হওয়া কখনো কাম্য নয়। এটি বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে জাতিসংঘের আগামী অধিবেশনে উত্থাপন করা হবে।
লিখিত এক বিবৃতিতে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর যে অত্যাচার, নিপীড়ন ও গণহত্যা চালানো হচ্ছে তা বন্ধে আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ গ্রহণ এবং রোহিঙ্গাদের সমস্যা সমাধান করে তাদের উন্নত জীবন নিশ্চিত করতে কাজ করার আহŸান জানিয়েছে আরব পার্লামেন্ট।
রোহিঙ্গা নিধন ঠেকাতে কঠোর পদক্ষেপ চায় সার্ক
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিরস্ত্র এবং নিরপরাধ রোহিঙ্গা মুসলমানদের নিধন ঠেকাতে আন্তর্জাতিক মহলকে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার আহŸান জানিয়েছেন সার্ক চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ-সভাপতি ইফতিখার আলি মালিক। রোহিঙ্গাদের ওপর সা¤প্রতিক নিপীড়নের প্রতিবাদে বুধবার এ আহŸান জানান তিনি। রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু মুসলমানদের হয়রানি, নির্যাতনসহ হত্যাকাÐের ব্যাপারে বুধবার গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে ইফতিখার আলি মালিক মিয়ানমারের তীব্র নিন্দা জানান।
সেখানে বিচার বহির্ভূতভাবে শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে, পুড়িয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে। প্রাণের ভয়ে হাজার হাজার মানুষ বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। পরে তাদের ঘরবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে। বিনা কারণে নিরস্ত্র এসব মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করা বর্বোরোচিত এবং সন্ত্রাসী কর্মকাÐ ছাড়া আর কিছুই নয়। জঘন্য এই অপরাধের সম্পূর্ণ দায়ভার মিয়ানমার সরকারের বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ইফতিখার আরও বলেন, সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার দায়িত্ব আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়কেই নিতে হবে। ধর্ম ও বিশ্বাসের স্বাধীনতা রক্ষার ব্যাপারেও মানবিক ও নৈতিক দায়িত্ব পালন করতে হবে আন্তর্জাতিক মহলকে। মুসলিম বিশ্বের নেতারা বিশেষ করে সউদী আরব, পাকিস্তান, উপসাগরীয় দেশগুলো এবং জাতিসংঘকে এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে হবে। রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত মিয়ানমারের সঙ্গে মুসলিম দেশগুলোর কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন রাখা উচিত।
রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশের সীমানা একেবারে খুলে দেয়ারও কথা বলেন তিনি। যাতে করে সহিংসতার শিকার মানুষজন অন্তত বাংলাদেশে প্রবেশ করে জীবন বাঁচাতে পারে। জাতিসংঘের হিসাব মতে সা¤প্রতিক সহিংসতায় প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। সূত্র : ডেইলি মেইল, কুয়েত টাইমস ও বিজনেস রেকর্ডার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।