গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
রাজধানীর মিরপুরের দারুসসালাম থানাধীন বুদ্ধিজীবী কবরস্থানের পাশে ‘জঙ্গি আস্তানায়’ আজ সকালে ফের অভিযানে চালায় র্যাব। এ সময় বিস্ফোরণে ৫ জন নিহত হয়েছে। এছাড়া র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) চার সদস্য আহত হয়। র্যাব ধারণা করছে, হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
গতকাল মঙ্গলবার সর্বশেষ রাত পৌনে ১২টার দিকে অভিযান স্থগিতের ঘোষণা দেন র্যাবের মিডিয়া শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান। তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখন রাতের আঁধারে আমরা ভবনের ভেতরে প্রবেশ করতে চাইনি। সকালে পুনরায় অভিযান শুরু করব। জঙ্গি আস্তানাটি কর্ডন করে রাখা হয়েছে।’
টাঙ্গাইলের কালিহাতি উপজেলার এলেঙ্গার মসন্দি এলাকার একটি বাড়ি থেকে গত সোমবার রাতে জঙ্গি সন্দেহে দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই ‘ফলোআপ’ হিসেবে সোমবার রাত থেকে মিরপুরে এ অভিযান চালায় র্যাব।
যে বাড়িটিতে অভিযান চলছে, সেই বাড়িটির নম্বর ২/৩/বি। এর মালিক টিঅ্যান্ডটির কর্মকর্তা মোহাম্মদ আজাদ। বাড়িটির নাম ‘কমলপ্রভা’। আজাদ সাহেব স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে বাড়ির দ্বিতীয় তলায় থাকেন।
র্যাব জানায়, ‘জঙ্গি আবদুল্লাহ বাড়িটি ভাড়া নিয়ে আস্তানা তৈরি করে। সেখানে আবদুল্লাহ, তার দুই স্ত্রী, দুই সহযোগী, দুই সন্তানসহ সাত জঙ্গি অবস্থান করছে। আবদুল্লাহর বড় ছেলের বয়স ১০ বছর আর ছোট ছেলের আড়াই বছর। গতকাল মঙ্গলবার দিনভর তাদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হয়। দুপুরে ‘জঙ্গি’ আবদুল্লাহর বোন মেহেরুন্নেসা বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে র্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে র্যাব। এ সময় ওই বাড়ির ২৩টি ফ্ল্যাট থেকে ৬৫ বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়।
পরে সন্ধ্যা ৬টায় মুফতি মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, ওই ভবনে থাকা ‘জঙ্গি’ আবদুল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়েছে। আবদুল্লাহ রাত ৮টার মধ্যে আরো ছয়জন নিয়ে আত্মসমর্পণ করবেন বলে জানান।
রাত ৮টার পর আবার যোগাযোগ করা হলে আরো ৩০ মিনিট সময় চান আবদুল্লাহ।
কিন্তু রাত ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে ওই ভবন থেকে বোমা বিস্ফোরণের বিকট শব্দ পাওয়া যায়। একে একে পাঁচটি বোমা বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। এর মধ্যে তিনটি বিস্ফোরণের শব্দ ছিল অনেক বেশি। পরে দেখা যায়, ওই ভবনে আগুন জ্বলছে। বোমা বিস্ফোরণের পর ওই ভবনের একাংশ ধসে পড়ে।
পরে র্যাব কর্মকর্তা মুফতি মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, ‘জঙ্গি’রা আত্মসমর্পণ না করে নিজেরাই ওই ভবনে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে ভবনটির পঞ্চম তলায় আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিস কাজ করবে। র্যাবের আহত সদস্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
বিস্ফোরণের পর ওই ভবনের ভেতরে থাকা মানুষের কি অবস্থা—এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মুফতি মাহমুদ বলেন, ‘এখনো স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। অভিযানের পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার পর গণমাধ্যমে তা জানানো হবে।’
মুফতি আরো জানান, অভিযানের শুরু থেকেই র্যাবের উদ্দেশ্য ছিল ভবনের অন্য বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া, যা সম্ভব হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।