Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দুই ঘাটে দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের ভোগান্তি

দৌলতদিয়া ও শিমুলিয়া ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় শত শত গাড়ি

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ঢাকায় ফিরছে মানুষ। বাস ও লঞ্চে স্বাভাবিক হলেও ঢাকামুখী ট্রেনে অস্বাভাবিক ভিড়। মহাসড়কে যানজট না থাকলেও দৌলতদিয়া ও শিমুলিয়া ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় শত শত গাড়ি। ওই সব গাড়ির হাজার হাজার যাত্রীকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ঈদের ছুটি শেষে অফিস আদালতে এখনও ঈদের আমেজ। যানজট আর জনজটের নগরীর সেই চিরচেনা রূপ পেতে এ সপ্তাহ লেগে যাবে। ঈদের একদিন আগে থেকেই ফাঁকা হয়ে গেছে ঢাকা। গতকালও তার ব্যতিক্রম ছিল না। রাস্তায় যানবাহন খুব একটা ছিল না। মার্কেট, বিপনীবিতানসহ পাড়া মহল্লার অধিকাংশ দোকানই ছিল বন্ধ।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী জানান, প্রতিদিন চট্টগ্রাম, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিশেষ ট্রেন ছাড়াও ৬৮টি ট্রেন ঢাকায় আসছে। প্রতিটি ট্রেনেই উপচে পরা ভিড়। ট্রেনের ছাদেও আসছে মানুষ। ঈদের আগে এবার ট্রেনের সিডিউল ভেঙ্গে পড়েছিল। ঈদের পর তা ঠিক হয়ে গেছে। অন্যদিকে, ঢাকামুখি দুরপাল্লার বাস আসছে যাত্রীবোঝাই করে। গতকাল মঙ্গলবার ভোরে বগুড়া থেকে আসা এক যাত্রী জানান, রাত ১১টায় বগুড়া থেকে বাসে উঠে ভোর সাড়ে ৪টায় ঢাকার গাবতলীতে পৌঁছেছেন। মাত্র সাড়ে ৫ ঘণ্টায় বগুড়া থেকে ঢাকায় পৌছাকে তিনি বিস্ময়কর বলে উল্লেখ করে বলেছেন, মহাসড়কের অবস্থা ভালো থাকলে এর চেয়ে কম সময়ে আসা যেতো। উত্তরাঞ্চলের রংপুর, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম, রাজশাহী, পাবনা, নীলফামারীর যাত্রীরা স্বাচ্ছন্দে ঢাকা ফিরতে পারলেও দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীরা পড়েছেন বিপাকে। দেশের গুরুত্বপূর্ণ নৌরুট দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ায় গতকাল সকাল থেকে ৪ কিলোমিটার যানজটে আটকা পড়েছে শত শত গাড়ি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল থেকে যানবাহনের চাপ লক্ষ্য করা যায়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির চাপ আরও বেড়ে যায়। সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় চার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে দুই লাইনে সারিবদ্ধ কয়েক হাজার যানবাহন আটকা পড়েছে। নদীতে তীব্র স্রোতের কারণে নদী পার হতে ফেরিগুলোর দ্বিগুণ সময় লাগাছে। এতে করে নদী পারের অপেক্ষায় দৌলতদিয়া প্রান্তে যাত্রীবাহী বাস, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাসসহ শত শত যানবাহন আটকে আছে। এতে করে ঢাকামুখি যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। বিআইডবিøউটিএ ও বিআইডবিøউটিসি সূত্রে জানা গেছে, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে যানবাহন ও যাত্রী পারাপারে ১৯টি ফেরি ও ২০টি লঞ্চ চলাচল করছে। যাত্রীরা জানান, নদী পারের অপেক্ষায় দৌলতদিয়া প্রান্তে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় রয়েছেন তারা। কখন ফেরি পাবেন আর কখন বাসায় পৌছতে পারবেন তা কেউ জানেন না। দৌলতদিয়া ট্রাফিক পুলিশ সার্জেন্ট আসাদুজ্জামান জানান, দৌলতদিয়া প্রান্তে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৪ কিলোমিটার এলাকায় যানবাহন নদী পারের অপেক্ষায় সিরিয়ালে ছিল।
অন্যদিকে, নাব্যতা সঙ্কটে ফেরি চলাচল বিঘিœত হওয়ার পর শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটের লৌহজং চ্যানেলে ড্রেজিং চলছে। রুটের ২১টি ফেরির মধ্যে ছোট আকারের চারটি ফেরি দিয়ে চালু রাখা হয়েছে পারাপার। গতকাল ভোর থেকে পদ্মার পানি আবারও কমতে থাকায় ছোট আকারের চারটি ফেরি চালু রেখে বাকিগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে জানান বিআইডবিøউটিসির শিমুলিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক গিয়াস উদ্দিন পাটোয়ারী। জানা গেছে, নাব্যতা সঙ্কটে গত রোববার রাত থেকে রায়পুরা ও যমুনা নামের দুইটা ফেরি অর্ধশত যানসহ লৌহজং চ্যানেলে আটকে যায়। যা এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। গত ৩১ অগাস্ট থেকে পদ্মার পানি ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকায় এ রুটে ফেরি চলাচল মারত্মকভাবে বিঘিœত হয়। এতে করে দক্ষিণাঞ্চলের শত শত গাড়ি আটকে থাকছে শিমুলিয়া ঘাটে। গতকাল সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখার সময়ও ঘাট এলাকায় প্রাইভেটকারসহ ছোট-বড় মিলিয়ে দুই শতাধিক যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় ছিল। রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লঞ্চে মানুষ অনেকটা স্বাচ্ছন্দ্যে রাজধানীতে ফিরতে পেরেছেন। বরিশালের সুরুজ মিয়া বলেন, ঈদের আগে সদরঘাট টার্মিনালে যাত্রীদের সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। সে তুলনায় অনেকটা আরামেই ঢাকায় ফিরতে পেরেছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভোগান্তি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ