Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

রাখাইনে সহায়তা স্থগিত করতে জাতিসংঘকে বাধ্য করেছে মিয়ানমার সরকার

ইনকিলাব ডেস্ক: | প্রকাশের সময় : ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মিয়ানমার সরকারের কড়াকড়ি ও অসহযোগিতার কারণেই রাখাইন রাজ্যের উত্তরাঞ্চলে অসহায় বেসামরিকদের জন্য খাদ্য, পানি ও ওষুধ সরবরাহ স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে জাতিসংঘ। মিয়ানমারে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধির কার্যালয়ের বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান খবরটি জানিয়েছে। রাখাইন রাজ্যে সা¤প্রতিক সামরিক অভিযান শুরুর পর বেসামরিকদের বিপন্নতার মধ্যেই ২ সেপ্টেম্বর রাজ্যের উত্তরাঞ্চলে ত্রাণ সরবরাহ স্থগিত করার ঘোষণা দেয় জাতিসংঘ।
নিরাপত্তাজনিত সঙ্কটকে কারণ দেখিয়ে ত্রাণ সরবরাহ বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে মিয়ানমারের জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধির কার্যালয় গার্ডিয়ানকে ইঙ্গিত দিয়েছে, মিয়ানমার সরকারই তাদেরকে কাজ করার অনুমতি দিচ্ছে না। হঠাৎ করে ত্রাণ সরবরাহ বন্ধের কারণ কী সে ব্যাপারে গার্ডিয়ানকে আবাসিক প্রতিনিধির কার্যালয় জানায়, ‘নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং মাঠ পর্যায়ের পরিদর্শনে সরকারের পক্ষ থেকে কড়াকড়ির কারণে আমরা সহায়তা দিতে পারিনি। যত দ্রæত সম্ভব যেন মানবিক সহায়তা কার্যক্রম শুরু করা যায় তা নিশ্চিত করতে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে যাচ্ছে জাতিসংঘ।’ রাখাইন রাজ্যের অন্য অংশগুলোতে মানবিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছে তারা।
জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর), জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) এবং জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক তহবিল (ইউনিসেফ) এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে রাখাইন রাজ্যের উত্তরাঞ্চলে মাঠ পর্যায়ের কোনও কাজ করেনি। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডবিøউএফপি) জানায়, রাখাইনের অন্য এলাকাগুলোতে তাদেরকে কার্যক্রম স্থগিত করতে হয়েছে। এতে নিয়মিত খাদ্য যোগাড় করতে না পারা কয়েক লাখ মানুষ অনিশ্চয়তায় পড়েছে। অক্সফাম ও সেভ দ্য চিলড্রেনসহ বিশ্বের বড় বড় ১৬টি মানবিক সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠানও অভিযোগ করেছে মিয়ানমার সরকার তাদেরকে সংঘাতপূর্ণ এলাকায় যেতে দিচ্ছে না। জাতিসংঘের মানবিক সহায়তাবিষয়ক সংস্থার মিয়ানমার কার্যালয়ের মুখপাত্র পিয়েরে পেরন বলেন, ‘চলমান সহিংসতায় লাখো মানুষের পরিণতি নিয়ে ত্রাণ সংগঠনগুলো গভীর উদ্বেগে আছে।’
সা¤প্রতিক ক্লিয়ারেন্স অপারেশনের লক্ষ্যে রাখাইন রাজ্যে সেনা মোতায়েন শুরুর কয়েকদিনের মাথায় ২৪ আগস্ট পুলিশ চেকপোস্টে হামলা হয়। মিয়ানমারের ডি-ফ্যাক্টো সরকার এক বিবৃতিতে রাখাইন রাজ্যের ‹বিদ্রোহী রোহিঙ্গা›রা ২৪টি পুলিশ চেকপোস্টে সমন্বিত হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করে। দাবি অনুযায়ী রাতভর সংঘর্ষে বিদ্রোহী-পুলিশ-সেনাসদস্য মিলে অন্তত ১০৪ জন নিহত হয়েছে বলে জানায় সেনাসূত্র। এই হামলার দায় স্বীকার করে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ)। ওই হামলার পর থেকে রোহিঙ্গাবিরোধী অভিযান জোরদার হয়।
শুক্রবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এবং সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের এক যৌথ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারে সা¤প্রতিক সেনা অভিযান শুরুর পর থেকে গেল এক সপ্তাহে উত্তর-পশ্চিম রাখাইন রাজ্যে ৪শ’ জন নিহত হয়েছে। মিয়ানমারের ডি-ফ্যাক্টো সরকারের সেনাবাহিনী নিহত ৪শ’ জনের মধ্যে ৩৭০ জনকে সন্ত্রাসী বলে উল্লেখ করেছে। সূত্র : দ্যা গার্ডিয়ান।



 

Show all comments
  • md masud rana ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ৫:৫৪ পিএম says : 0
    আন্তর্জাতিক সম্পদায়ের প্রতি সরকার আলোচনা করলেই তো পারে।।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ