Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চট্টগ্রামে টেস্ট লড়াইয়ের তোড়জোড়, বৃষ্টির শঙ্কায় কপালে চিন্তার ভাঁজ

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ৮:০৪ পিএম | আপডেট : ৮:০৯ পিএম, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যেকার সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট আগামীকাল সকাল ১০টায় জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু শেষ এ টেস্ট ম্যাচের প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বৃষ্টির শঙ্কা। গত তিনদিন চট্টগ্রামের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় বৃষ্টি দেখিয়েছে বেশ দাপট। ফলে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়া দলের খেলোয়াড়রা জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুশীলন করতে গিয়ে অনুশীলন করতে পারেনি খোলা মাঠে। শেষ পর্যন্ত উভয় দলের খেলোয়াড়রা ইনডোর প্র্যাকটিস গ্রাউন্ডে অনুশীলন করেছে। গত ১ সেপ্টেম্বর উভয় দল যখন বন্দরনগরী চট্টগ্রামে এসেছিল তখনো বৃষ্টি ছিল এখানে। বৃষ্টির এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে শেষ টেস্ট ম্যাচে ছন্দপতন ঘটতে পারে। এ ক’দিনে ভাদ্রের বৃষ্টি উদ্যোক্তাসহ চট্টগ্রামের ক্রীড়ামোদীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ এনে দিয়েছে।
গতকাল ভারী বৃষ্টিপাতের সময় পিচের কাভার ঠিকঠাকভাবে দেওয়া হয়েছে কিনা তা তদারকি করছিলেন জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের কিউরেটর জাহিদ রেজা বাবু। তবে বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পর পিচ থেকে যখন কাভার সরিয়ে উইকেটে রোল করা হচ্ছিল এবং পরিচর্যা চলছিল খুঁটিনাটি তখন দেখা গেল সেটির নির্দেশনা দিচ্ছেন ঢাকা থেকে আসা মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের কিউরেটর গামিনি সিলভা। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বাংলাদেশের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম পিচ দেখতে আসেন। তখন কোচ হাতুরাসিংও ছিলেন। এসময় মুশফিকুর রহিম, হাতুরাসিং ও গামিনি তাদের মধ্যে আলাপও সেরেছেন। এতে বোঝা গেল মনের মতো উইকেট পাওয়ার চলছে তোড়জোড়। মিরপুরে জয়ের পর চট্টগ্রামের উইকেট নিয়ে বেড়েছে কৌতূহল। তবে এ চট্টগ্রাম থেকে টার্নিং উইকেট বানিয়ে দেশের মাটিতে ফায়দা তোলার পরিকল্পনা শুরু হয়েছিল গত বছর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে। তাই পিচ কেমন হবে এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসা করা হলে কেউই মুখ খুলতে রাজি হয়নি। এ ম্যাচের তৈরি করা তিনটি পিচের মধ্যে দুইটিতে পরিচর্যা ও রোল করতে দেখা গেছে। সুতরাং কোন পিচে খেলা হবে এ ব্যাপারেও কেউ মুখ খুলছে না।
বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম বলেছেন, চট্টগ্রামের উইকেট যে রকম, ঠিক সেরকম এবারও। বৃষ্টির কারণে গত তিনদিন ধরে তারা সেভাবে কাজ করতে পারছে না। এরপরও যেভাবে আমরা বলেছি, সেভাবেই উইকেট বানানো হয়েছে। তবে উইকেট যেমনই হোক মনোযোগ দিয়ে মাঠে নিজেদের সেরা কাজটা ঠিকমতো করতে হবে। চট্টগ্রামের আবহাওয়া এখন যেভাবে চলছে খেলা চলাকালীন সময়ে তা অব্যাহত থাকলে শেষ হাসি কে হেসে মাঠ ছাড়বে তা বলা মুশকিল। বৃষ্টি ও খেলা একসাথে দু’টি চলতে থাকলে ক্ষণে ক্ষণে ম্যাচের দৃশ্যপটও বদলে যাবে। কেননা স্পিন বিষে ভরা জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের এ উইকেট। তার দলে রয়েছে স্পিন শক্তি পরীক্ষিত খেলোয়াড় ঠিক তেমনি স্টিভ স্মিথ দলেও। তাদের রয়েছে লায়ন, অ্যাগার এবং ও’কিফ। এ তিন খেলোয়াড় অস্ট্রেলিয়ার তুরুপের তাস। তবে আমার দলেও রয়েছে ঢাকা টেস্টে প্রমাণিত সাকিব, মিরাজ, তাইজুল। এই তিন খেলোয়াড়ের স্পিন দিয়ে ম্যাচ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা রয়েছে। তবে টাইগার ভক্তদের জন্য আশার কথা হলো, বৃষ্টি ম্যাচের ভাগ্য বদলাবে কিনা সে বিতর্কে না গিয়ে মাঠের খেলা খেলেই প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজ জয়ের ইতিহাস গড়ে মাঠ ছাড়তে চাইছেন মুশফিকুর রহিম। বৃষ্টি হলেও চট্টগ্রামের এ মাঠে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা খুবই ভালো। বৃষ্টির কারণে যদি অন্তত তিনদিন অথবা সাড়ে তিনদিনও যদি খেলা হয়, আমার মনে হয় খুব একটা ভালো টেস্ট হবে। ঢাকার মতো একটা রোমাঞ্চকর টেস্ট ম্যাচ দর্শকরা উপভোগ করবে। আমাদের দলে এমন কয়েকজন পারফর্মার রয়েছে যারা ধারাবাহিকভাবে ভালো করছে। আর সে লক্ষ্যে শেষ ম্যাচে সেরা একাদশে পরিবর্তনের আভাসও দিয়ে গেলেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। আমাদের যে ১৪ জন আছে সবাই পরীক্ষিত।
প্র্যাকটিস শেষে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ বলেছেন, পরাজয়ের পেছনে কোন অজুহাত না দিয়ে মেনে নিয়েছেন আগের টেস্টে বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠত্ব। তিনি বলেন, যতটা ভালো খেলতে পারতাম ততটা পারিনি। তাই বাংলাদেশের কাছে হেরেছি। ঢাকায় প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে পারলে অবশ্যই ভালো হতো। কিন্তু সেটাকে আমি কোন অজুহাত হিসেবে দাঁড় করাতে চাই না। নিজেদের কন্ডিশনে মুশফিক যখন সিরিজ জয়ের স্বপ্নে বিভোর তখন সিরিজে ফেরার লড়াইয়ে স্টিভেন স্মিথ। স্কোরলাইন যেটাই হোক আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সবসময় চাপের। তাই অস্ট্রেলিয়া দলপতি এখনো হাল ছাড়তে চাইছেন না। সমতায় শেষ করতে হলে আমাদের জিততেই হবে। জয়ের বিকল্প কিছুই ভাবছি না। গত সপ্তাহের চেয়ে আমাদের অনেক ভালো খেলতে হবে।
চট্টগ্রামে আজ (রোববার) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে ১২৫ দশমিক ৫ মিলিমিটার। পতেঙ্গা আবহাওয়া দপ্তরের আবহাওয়াবিদ শেখ হারুনুর রশিদ আজ সন্ধ্যায় আবহাওয়ার সর্বশেষ পূর্বাভাস সম্পর্কে দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, চট্টগ্রামে আগামীকাল (সোমবার) সকাল ৯টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত মাঝারি অথবা মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। এরপর বেলা ১টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত গুড়ি গুড়ি/হালকা বৃষ্টি অথবা তেমন বৃষ্টিপাত না হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত হালকা বা গুড়ি বৃষ্টি এবং পরবর্তী সময়ে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত হালকা বা গুড়ি বৃষ্টি অথবা বৃষ্টিপাত নাও হতে পারে। আবহাওয়াবিদ হারুনুর রশিদ আরও জানান, গতকাল শনিবার রাত থেকে আজ সকাল পর্যন্ত বেশিরভাগ সময়ে থেমে থেমে মাঝারি থেকে ভারী ও অতি ভারী বর্ষণ হয়েছে। সেই সাথে হিমেল দমকা হাওয়া বয়ে যায়। সকালে বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ