পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মায়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে দেশটির অস্থির রাখাইন অঞ্চলে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড চালানোর অভিযোগ ওঠেছে। তারা সেখানকার নিরস্ত্র রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশুদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালাচ্ছে এবং তাদের ঘর-বাড়িতে অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে পুড়িয়ে দেয়া বলে জানিয়েছেন এর বাসিন্দা ও সহায়তা কর্মীরা। মায়ানমারের কর্তৃপক্ষ জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির অভিযানের পর এ পর্যন্ত শতাধিক লোক নিহত হয়েছে। বর্মি সেনারা রাখাইনের মংডু, বুথাইডাঙ্গা ও রাথডাঙ্গা শহর ঘেরাও করে রেখেছে এবং সেখানে কারফিউ জারি করা হয়েছে।
রোহিঙ্গা সমর্থকরা আল-জাজিরাকে জানিয়েছে যে, নিহতের সংখ্যা সরকারি হিসেবের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। নারী ও শিশুসহ অন্তত ৮শ’ সংখ্যালঘু মুসলমানকে হত্যা করা হয়েছে।
মংডুর বাসিন্দা আজিজ খান জানান, শুক্রবার সকালে তাদের গ্রামে সেনাবাহিনী হামলা চালায় এবং জনগণের গাড়ি ও ঘর-বাড়িতে নির্বিচারে গুলি চালায়।
তিনি বলেন, ‘সরকারি বাহিনী এবং সীমান্ত পুলিশ আমাদের গ্রামের অন্তত ১১ জনকে হত্যা করে। তারা গ্রামে পৌঁছেই যাকে যেখানে পেয়েছে তাকে সে অবস্থাই গুলি করেছে। এ সময় কিছু সৈন্য ঘর-বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ঘটনায়।’
তিনি বলেন, ‘নিহতদের মধ্য নারী ও শিশুরাও রয়েছে। এমনকি তাদের হাত থেকে সদ্য জন্ম নেয়া একটি শিশুকেও গুলি করে হত্যা করা হয়।’
ইউরোপ-ভিত্তিক রোহিঙ্গা কর্মী ও বøগার রো নে সান লউন বলেন, সা¤প্রতিক হামলার মাধ্যমে তাদের এলাকা থেকে প্রায় ১০ হাজার রোহিঙ্গাকে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
নেটওয়ার্ক অ্যাক্টিভিস্টের মাধ্যমে ঘটনাস্থলের সংঘর্ষের ডকুমেন্ট দেখিয়ে সান লউন বলেন, সেখানকার মসজিদ-মাদরাসা পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। হাজার হাজার মুসলমান খাদ্য ও আশ্রয় ছাড়াই অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। আল জাজিরাকে তিনি বলেন, ‘সরকার ও সামরিক বাহিনীর অত্যাচারে আমার নিজের চাচা সেখান থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে কোন সাহায্য দেয়ার পরিবর্তে জনগণের বাড়ি ধ্বংস করে দিচ্ছে এবং তাদের সহায় সম্বল লুট করে নেয়া হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘খাদ্য, আশ্রয় এবং সুরক্ষা ছাড়া তারা কখন মারা যাবে জানি না।’
ছদ্ম নামে বুথাইডাং টাউনের বাসিন্দা মিন্ট লউইন বলেন, ‘প্রত্যেক পরিবারের মধ্য ভয়ঙ্কর ভয় কাজ করছে।’
তিনি বলেন, ‘মানুষ হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে হত্যাকাÐের ভিডিওগুলো শেয়ার করছে। ভিডিওগুলো প্রমাণ দিচ্ছে, কী নির্দয়ভাবে নারী ও শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে। নির্দোষ মানুষকে গুলি করা হয়েছে। আপনি কল্পনা করতে পারবেন না যে আমরা কতটা ভয় পাচ্ছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘কেউই তাদের বাড়ি ছেড়ে যেতে চায় না। মুসলমানরা হাসপাতাল, বাজার, কোথাও যেতে সাহস পাচ্ছে না। এটা খুবই বিপজ্জনক পরিস্থিতি।’
সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করা ভিডিওগুলোতে দেখা গেছে, শত শত পুরুষ, নারী ও শিশু শুধু তাদের গায়ের কাপড় নিয়ে পালাচ্ছে এবং ধানের ক্ষেতগুলোতে আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা করছে। গত অক্টোবরে সীমান্ত চৌকিতে ৯ পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার পর অং সান সু চি’র সরকার রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে হাজার হাজার সৈন্য পাঠিয়ে অভিযান চালায়। তারা গ্রামগুলোতে অগ্নিসংযোগ, হত্যাকাÐ এবং নারীদের ধর্ষণ করে এবং ৮৭ হাজারেও বেশি রোহিঙ্গাকে পালিয়ে বাংলাদেশে যেতে বাধ্য করা হয়। মানবাধিকার সংগঠন ‘ফোর্টফাইট রাইটসের’ চিফ অ্যাক্সিকিউটিভ অফিসার ম্যাথিউ স্মিথ বলেন, মায়ানমার কর্তৃপক্ষ সব রোহিঙ্গার সঙ্গে যোদ্ধাদের মতো আচরণ করছে। সরকারের সহিংসতার ঘটনাটি ‘সেরা অভিশাপ’ হবে।’
তিনি বলেন, ‘রাখাইনে জাতিসংঘের নিরস্ত্রীকরণ মিশনকে সহযোগিতা করতে প্রত্যাখ্যান করেছে দেশটির সরকার এবং সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে নিরস্ত্র বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলার গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।