পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে যেভাবে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির উপর নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ চালানো হচ্ছে তার দায় কিছুতেই এড়িয়ে যেতে পারেন না নোবেল বিজয়ী অং সান সুচি। প্রতিবেশী দেশ হিসেবে মানবতার দিক বিবেচনায় এমনটাই মনে করে বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ। অভিযোগ উঠেছে, রাষ্ট্রীয় মদদেই রোহিঙ্গাদের উপর নিপীড়ন চালানো হচ্ছে। বাংলাদেশের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই প্রসঙ্গটি এখন সর্ব আলোচিত। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত থেকে মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে নাগরিক অধিকার আদায়ের দাবিতে আন্দোলনরত মুসলিম বিদ্রোহীদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শুরু হলে সামাজিক মাধ্যমে নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসে রোহিঙ্গা নির্যাতন প্রসঙ্গটি।
মায়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা মুসলিমদের বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দিচ্ছে। রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপর নির্যতনের বিভিন্ন ছবিতে ছেয়ে গেছে বাংলাদেশের নাগরিকদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, বøগ, টুইটার। বিশেষ করে ফেসবুক ব্যবহারকারীরা রোহিঙ্গা নির্যাতন নিয়ে বিভিন্ন মানবিক ও রাগান্বিত পোস্ট শেয়ার করছে। এসব পোস্টে অনেকেই মিয়ানমারের গণতন্ত্রী নেত্রী অং সান সুচির ভুমিকার তীব্র সমালোচনায় বিদ্ধ করছেন। কেউ কেউ বলছেন, সুচি এখন মায়ানমারের সেনাবাহিনীর হাতের পুতুল। যেন তার শান্তিতে নোবেল পুরষ্কারটি কেড়ে নেওয়া হয়। বেশ কিছু ছবি ও কার্টুনে তাকে ব্যাঙ্গ করতেও দেখা গেছে। সত্তরের দশক থেকে রোহিঙ্গাদের উপর ধারাবাহিক নির্যাতন থামাতে ক্ষমতায় এসে সুচি উদ্যোগী হবেন এমনটাই আশা করেছিলো এ দেশের মানুষ। কিন্তু সুচি এই প্রসঙ্গটি অত্যন্ত চাতুর্য্যতার সঙ্গে এড়িয়ে যাচ্ছেন বলে অনেকেরই মত। সর্বশেষ তিনি রাখাইন রাজ্যে সা¤প্রতিক সংঘর্ষের জন্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার কর্মীদের দোষারোপ করেছেন। শুধু বাংলাদেশ নয়, রোহিঙ্গা নির্যাতন ইস্যুতে সুচির ভূমিকা সারা বিশ্বেই সামালোচিত। তিনি এখন বিতর্কিত নেত্রী; শান্তি নয় তার কার্যত অশান্তির নেত্রীতে রুপান্তর ঘটেছে।
কয়েকদিন থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যটিতে অভিযানরত নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে এক দিনেই নিহত হয়েছে ৭১ জন, যাদের মধ্যে ৫৯ জনই রোহিঙ্গা মুসলিম। অবশিষ্ট ১২ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। গত বছর অক্টোবরে মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিম নিধন অভিযানের পর বছর না ঘুরতেই আবারো রোহিঙ্গা নিধন শুরু করেছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। হামলার ঘটনায় ভয়ার্ত রোহিঙ্গারা নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে বাংলাদেশী সীমান্তে এসে হামলে পড়েছে। যদিও বাংলাদেশী সীমান্তরক্ষী বাহিনী রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঠেকানোর আপ্রাণ চেষ্ঠা করছে।
গত বছরের অক্টোবরে এমন সহিংস ঘটনার পর সেনা অভিযান শুরু হয় রাখাইনে। সেনাদের হাতে শত শত রোহিঙ্গা নিহত ও নারীরা ধর্ষণের শিকার হয়। জাতিসংঘের কর্মকর্তারা একে ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ’ হিসেবে আখ্যায়িত করে। ওই অভিযানের সময় থেকে গত এক বছরে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। এর মধ্যে ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।
জানা গেছে, বর্তমানে মিয়ানমারে ১০ লাখের মতো রোহিঙ্গার বাস। কিন্তু এর বাইরে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছে আরো প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা; যারা নির্যাতনের মুখে বিভিন্ন সময় দেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিশ্ব মিয়ানমার সরকারকে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানালেও সরকার তা করেনি। বলা চলে, এর মাধ্যমে অং সান সুচির এনএলডি সরকার রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের জন্য সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনীকে সবুজ সংকেত দিয়ে রেখেছে। এ জন্যই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে সুচিতে গণতন্ত্রের খল নায়িকা হিসেবে পোষ্ট দেয়া হয়। যারা এসব পোষ্ট দিচ্ছেন তাদের অনেকেই কয়েক বছর আগে সুচির মুক্তির জন্য আন্দোলন করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।