পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মিয়ানমার জান্তা কর্তৃক রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্মম হত্যা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে রাজধানী ঢাকা ছিল প্রতিবাদমুখর। গতকাল সকালে ও বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ও অন্যান্যস্থানে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ, বিশ্ব সুন্নি আন্দোলন, খেলাফত মজলিস, ন্যাপ ভাসানি, সিভিল রাইট সোসাইটি ও ছাত্র খেলাফত। এ সব মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর এমন নির্মম ও নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞ কোনভাবেই সহ্য করা যায় না। তিনি এই নির্মমতার বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্ব, আরবলীগ, ওআইসি, জাতিসংঘকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। অন্যথায় বাংলাদেশের ঈমানদার জনতা বার্মা দূতাবাস, জাতিসংঘ দূতাবাস ঘেরাও করবে। তাতেও কাজ না হলে মিয়ানমার অভিমুখে লংমার্চসহ আরো কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।
বিশ্ব সুন্নী আন্দোলনের মানববন্দন
বিশ্ব সুন্নী আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ও বিশ্ব ইনসানিয়াত বিপ্লবের প্রর্বতক আল্লামা ইমাম হায়াত নির্মম গণহত্যার শিকার অসহায় রোহিঙ্গাদের মানবিক আশ্রয় দানের জন্য সরকারের প্রতি দাবি করেছেন।
বিশ্ব সুন্নী আন্দোলন ও বিশ্ব ইনসানিয়াত বিপ্লব পার্টি, বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর শাখার যৌথ উদ্যোগে ঢাকা প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গনে আজ অনুষ্ঠিত এক সমাবেশ ও মানববন্ধনে আল্লামা ইমাম হায়াত এ দাবি করেন।
তিনি বলেন, সামরিক হত্যার জাতিগত নির্মূল অভিযানের শিকার মা, বোন, শিশু সকলে আজ চরম নির্যাতন ও ব্যাপক হত্যাকান্ডের মুখে বিপন্ন। যাদের আশ্রয় ব্যতীত মৃত্যু ছাড়া পথ নেই। কারণ সব কিছুর উর্ধ্বে জীবন ও মানবতা এবং জীবন ও মানবতা রক্ষা সর্বোচ্চ ইবাদত। তিনি বলেন, মানবতা সংকটে আর্তনাদে সাড়া দিতে অক্ষম হলে রাষ্ট্রব্যবস্থার কোন মানবিক মূল্য থাকে না।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সহ দুনিয়ায় সর্বত্র মুসলমান হত্যা ও ধ্বংস যজ্ঞের বিরুদ্ধে বিশ্ব বিবেককে সোচ্চার হতে হবে এবং রাজীনিতির লক্ষ্য হতে হবে একমাত্র মানবতা। বিভিন্ন ধর্মের নামে অধর্ম উগ্রবাদের অপরাজনীতি মানবতার বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামান্তর। মানুষের শান্তিময় নিরাপদ জীবন ও বিশ্বব্যবস্থা গড়ে তুলতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
ইসলামী আন্দোলনের মানববন্দন
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী বলেছেন, মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকার বিনা অজুহাতে রোহিঙ্গা মুসলমান নারী, পুরুষ ও শিশুদের নির্বিচারে হত্যা করছে। মুসলমানদের বসত বাড়ী জ্বালিয়ে দিচ্ছে। নদীতে ডুবিয়ে মারছে। মায়ের কোল থেকে ছোট শিশুকে কেড়ে নিয়ে বুট দিয়ে পাড়িয়ে হত্যা করছে। মা-বোনদের ধর্ষণ করছে। এমনকি গর্ভবর্তীদের মায়েদের পেট চিড়ে বাচ্চা হত্যা করছে। এমন নির্মম ও নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞ কোনভাবেই সহ্য করা যায় না। তিনি এই নির্মমতার বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্ব, আরবলীগ, ওআইসি, জাতিসংঘকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে জোর দাবি জানান। মাওলানা মাদানী বলেন, মুসলিম গণহত্যা বন্ধে বিশ্বমুসলিমকে এক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে না পারলে ওদের হিংস্রতা আরো বেড়ে যাবে। তিনি বলেন, মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতনের স্টিমরোলার বন্ধ না করলে প্রয়োজনে বাংলাদেশের ঈমানদার জনতা বার্মা দূতাবাস, জাতিসংঘ দূতাবাস ঘেরাও করবে। তাতেও কাজ না হলে মিয়ানমার অভিমুখে লংমার্চসহ আরো কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মিয়ানমারে মুসলিম গণহত্যা বন্ধের দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর আয়োজিত বিশাল মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক হাফেজ মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিন ও দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলম। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক প্রকৌশলী আশরাফুল আলম, প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম প্রমুখ।
কর্মসূচি : মুসলিম গণহত্যার প্রতিবাদে ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ বিক্ষোভ সমাবেশ, ৩০ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ ৩১ আগস্ট যুব আন্দোলনের মানববন্ধন কর্মসুচী ঘোষণা করা হয়।
খেলাফত মজলিসের মানববন্ধন
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহম আবদুল কাদের বলেছেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর গণহত্যা চালাচ্ছে, জঘন্য অমানবিক আচরণ করছে। আগুন দিয়ে রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে। আরে এ জঘন্য কাজে সেনাবহিনীকে সমর্থন জানাচ্ছে তথাকথিত শান্তির দূত অং সান সু কি। রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর হত্যা নির্যাতনে সমর্থন দেয়ায় অং সান সুকি’র নোবেল পুরস্কার কেড়ে নেয়া উচিত। রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর পুরচালিত জাতিগত নির্মূল অভিযান বন্ধে জাতিসংঘ, ওআইসিসহ আন্তজার্তিক সংস্থাসমূহকে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে।
গতকাল বিকাল ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকা মহানগরী সভাপতি শেখ গোলাম আসগরের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আজীজুল হকের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য পেশ করেন খেলাফত সাংগঠনিক সম্পাদক ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, অধ্যাপক মো: আবদুল জলিল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।