পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : অস্তিত্বের লড়াইয়ে লিপ্ত হয়েছে মিয়ানমারের আরাকান রাজ্য বর্তমানে রাখাইনের রোহিঙ্গা স্বাধীনতাকামীরা। মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী এবং রোহিঙ্গা স্বাধীনতাকামীদের মধ্যে সম্প্রতি সংঘটিত সংঘাতে এখন পর্যন্ত ৯২ জন নিহত হয়েছে যাদের মধ্যে ১২ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য রয়েছে। খবরে বলা হয়, ২৫ বছর বয়সী আয়েশা বেগমকে গর্ভবতী অবস্থায় মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসতে হয়েছে। তার ঠিকানা হয়েছে দারিদ্র্যপীড়িত এক রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে। সন্তান জন্মদানের সময় তার স্বামী কাছে থাকবে না বলে তার কোন দুঃখ বোধ নেই। কেননা তার স্বামী রোহিঙ্গা স্বাধীনতাকামীদের পক্ষে মিয়ানমারে লড়াই করছে।
সা¤প্রতিক এ উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দু রাথিং ডং শহর। কয়েক সপ্তাহ আগে যেখানে বিপুল সংখ্যায় মিয়ানমার সেনা সমাগম ঘটানো হয়। অভিযোগ উঠে বিদ্রোহ দমনের নামে পার্বত্য এ অঞ্চলে বেছে বেছে হত্যা ও নিপীড়ন চালানোর। আয়েশার স্বামী আরো অনেকের মতো সেনাদের চালানো এ দমন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে মিয়ানমারে থেকে গিয়েছে। আয়েশা কীভাবে তার সন্তানদের নিয়ে নৌকা করে নাফ নদী পার হয়ে এসেছে সে সম্পর্কে বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানায়, আমার স্বামী আমাদেরকে নদী পর্যন্ত নিয়ে আসে এবং সীমান্ত পার করিয়ে দেয়। তিনি কান্না ভেজা কন্ঠে জানান, তার স্বামী তাকে বিদায় জানিয়ে বলেছে, বেঁচে থাকলে শিগগিরই স্বাধীন আরাকানে (রোহিঙ্গা রাজ্য), আর মারা গেলে বেহেশতে তাদের দেখা হবে। মিয়ানমারে রোহিঙ্গারা দীর্ঘদিন যাবৎ নিপীড়নের শিকার। রোহিঙ্গাদেরকে মিয়ানমারে নাগরিকত্ব দেয়া হয় না। তাদের চলাচলেও রয়েছে সীমাবদ্ধতা। দেশটির সরকার মনে করে রোহিঙ্গারা অবৈধভাবে মিয়ানমারে এসেছে। যদিও এ অঞ্চলে রোহিঙ্গাদের উপস্থিতির ইতিহাস শত বছরের পুরনো। গত বছর অক্টোবরে এক দল রোহিঙ্গা স্বাধীনতাকামী সীমান্ত চৌকিতে হামলা করলে উদ্ভূত অবস্থায় নাটকীয় পরিবর্তন আসে। হামলার জবাবে মিয়ানমার সেনাবাহিনী বিদ্রোহ দমনে ক্লিয়ারেন্স অপারেশন নামের বর্বর এক অভিযান শুরু করে। সে দমন অভিযানের বিরুদ্ধে বেসামরিক লোকেদের হত্যা, ধর্ষণ এবং অগ্নি সংযোগের অভিযোগ উঠে। সেসময় জাতিসংঘ বলে, মিয়ানমারে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করা হয়েছে এবং এ অভিযান জাতিগত নির্মূলের পথকে সুগম করে দিতে পারে। অভিযান চলা সত্তে¡ও দি আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ) নামের একটি গ্রুপ বিভিন্ন সময় প্রত্যন্ত গ্রামে সরকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানে বিচ্ছিন্ন হামলা পরিচালনা করতো। এই গ্রুপটি গত শুক্রবার বড় পরিসরে হামলা চালায়। ছুরি, স্থানীয়ভাবে বানানো বিস্ফোরক এবং কিছু বন্দুক নিয়ে প্রায় ৩০টি পুলিশ পোস্টে আক্রমণ করে। নিহত হয় কমপক্ষে এক ডজন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও ৮০ রোহিঙ্গা স্বাধীনতাকামী। সীমান্তে বয়োবৃদ্ধ রোহিঙ্গা স¤প্রদায়ের এক নেতা শাহ আলম জানান, তার জেলার তিনটি গ্রামের ৩০ জন যুবক আমাদের স্বাধীনতার জন্য এআরএসএ যোগ দিয়েছে। তাদের কি আর কোন উপায় আছে? ভেড়ার মত জবাই হয়ে মরার চেয়ে তারা লড়াই করে মারা যাওয়াকে বেছে নিয়েছে। অনেক উদ্বাস্তু জানিয়েছে, তারা কোন রকমে তাদের জীবন বাঁচিয়ে পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে। বৌদ্ধ দাঙ্গাকারী এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা নিরস্ত্র বেসামরিক লোকদের উপর গুলি চালাচ্ছে, ঘর বাড়ি জ্বালিয়ে দিচ্ছে। একই রকম অভিযোগের কথা শোনা গিয়েছিল গত বছর সংঘাতের পর থেকেই। এআরএসএ নামের এই গ্রুপটি গত অক্টোবরের আগে পরিচিত ছিল না। মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর উপর সা¤প্রতিক হামলার পর তারা রোহিঙ্গাদেরকে লড়াইয়ে নামার আহ্বান জানায়। অবশ্য অং সান সুচির স্টেট কাউন্সেলর দপ্তর এআরএসএকে সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে তাদের হাতে নিহত হওয়া বেসামরিক নাগরিকদের বীভৎস ছবি প্রকাশ করেছে। এএফপি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।