নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বাংলাদেশ : ২৬০ ও ২২১
অস্ট্রেলিয়া : ২১৭ ও ১০৯/২ (লক্ষ্য ২৬৫ রান)
তৃতীয় দিন শেষে : জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ৮ উইকেট, অস্ট্রেলিয়ার ১৫৬ রান।
প্রথম দিনটি ভালোই কাটলো বাংলাদেশের। মিরপুরে একসঙ্গে ঝলসে উঠলো সাকিব-তামিমের জোড়া ব্যাট, মুশফিকের দল পেল লড়াইয়ের পূঁজি। ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় দিনেও পাল্লাটা নিজেদের দিকেই ভারী করে রেখেছিল বাংলাদেশ সাকিবের ঘূর্ণির জাদুতে। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের করা ২৬০ রানের বিপরীতে অস্ট্রেলিয়াকে বেঁধে ফেললো ২১৭ রানেই। ৪৩ রান এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করা বাংলাদেশের ব্যাটিংটা হলো আগের চেয়ে ম্লান। তামিমের সঙ্গে কেবল লড়াইয়ে সামিল হতে পারলেন অধিনায়ক মুশফিক। আর তাতে তৃতীয় দিনের চা বিরতির পরপরই ২২১ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। ২৬৫ রানের টার্গেট দিয়েও হাসিখুশি দেখাচ্ছিল মুশফকিদের। মিরপুরে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করার রেকর্ডটা যে মাত্র ২০৮ রানের!
তাদের সে হাসি মুছে গেছে শেষ বিকেলে। মাত্র ২৯ রানে ২ উইকেট হারানো অধিনায়ক সহ-অধিনায়কের উজ্জীবিত ব্যাটিংয়ে পথ খুঁজে পেয়েছে সফরকারীরা। আর নিরাপদ মনে হওয়া ২৬৫ রানের টার্গেটকে শেষ বিকেলে বড্ড কম মনে হচ্ছে। তৃতীয় দিন শেষে অস্ট্রেলিয়ার রান ২ উইকেটে ১০৯। জয়ের জন্য আর ১৫৬ রান দরকার অস্ট্রেলিয়ার। ইনিংসের শুরুতেই ধাক্কা দিয়েছিলেন সাকিব-মিরাজ। এক রানের মধ্যে আউট হয়ে গেলেন ম্যাথু রেনশ ও ওসমান খাজা। ২৮ রানে ২ উইকেট হারিয়ে প্রথম ইনিংসের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছিল অস্ট্রেলিয়া। তবে পাল্টা আক্রমণ ও ভাগ্যের সহায়তায় সে ধাক্কা সামলে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। মিরপুরের পিচ ও অস্বাভাবিক আচরণ করছে। গত দুই দিনের ‘আনপ্লেয়েবল’ শেষ সেশন কোথায় মিলিয়ে গেল কে জানে! ফ্ল্যাট উইকেটে একের পর এক হাফ পিচ ডেলিভারির শাস্তি দিয়েছেন ওয়ার্নার-স্মিথ। সিরিজের প্রথম ফিফটি তুলে নিয়েছেন ওয়ার্নার। এই ওপেনার অপরাজিত আছেন ৭৫ রানে। অধিনায়ক স্মিথের রান ২৫।
সকালে তাইজুলের ফেরাটা খুব অপ্রত্যাশিত ছিল না। ‘নাইটওয়াচম্যান’ হিসেবে ভালোই খেলে গেছেন তিনি। ২২ বল খেলে ৪ রান করেছেন। কিন্তু সত্যিকারের ধাক্কা হয়ে আসে ইমরুলের উইকেটটি। নাথান লায়নের বলে বারবার পরাস্ত হচ্ছিলেন। অফস্টাম্পের ওপর দুর্বলতাটা বোঝা যাচ্ছিল। ইমরুলের সেই দুর্বল জায়গায় একের পর এক বল করে ফল পেলেন অস্ট্রেলীয় অফস্পিনার। ১৮ বল খেলে ২ রান করে ফিরেছেন ইমরুল। স্লিপে তাঁর ক্যাচটি নিয়েছেন ডেভিড ওয়ার্নার।
সেই ধাক্কা সামলে প্রথম সেশনেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় বাংলাদেশ। আক্রমণটা সচল রেখেছিলেন তামিম ইকবাল ও অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। প্রথম ইনিংসের মতো এই ইনিংসেও দারুণ ধারালো তামিমের ব্যাট। মুশফিকও যেন প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলেন প্রথম ইনিংসের বড় রান না করার দুঃখটা ঘোঁচাতে। দ্বিতীয় ইনিংসেও অর্ধশতক করেন তামিম। প্রথম ইনিংসে বাঁহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান করেছিলেন ৭১ রান। এনিয়ে ছ’ বার টেস্টের দুই ইনিংসেই পঞ্চাশ কিংবা তার বেশি রান করলেন তিনি। বাংলাদেশের হয়ে এতদিন এই রেকর্ড এককভাবে ছিল হাবিবুল বাশারের। ৫০ টেস্টের ক্যারিয়ারে সাবেক অধিনায়ক ৬ বার ছুঁয়েছিলেন এক টেস্টে জোড়া পঞ্চাশ। তামিম তাকে স্পর্শ করলেন নিজের ৫০তম টেস্টেই।
এই দু’জনের ব্যাটে চড়ে ভালোই এগিয়ে যাচ্ছিলো বাংলাদেশ। লাঞ্চে যাওয়ার সময় বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৩ উইকেটে ১৩৩ রান। তামিম এগিয়ে চলেছিলেন নিজের শতকের দিকে, অপরাজিত ৭৬ নিয়ে। তার সঙ্গে ২৫ রান নিয়ে মুশফিকও বড় সংগ্রহের স্বপ্নই দেখাচ্ছিল। জুটিতে সংগ্রহ ৬৬। তবে মধ্যাহ্নবিরতির পরই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। প্রথম সেশনের দুই ঘণ্টায় ৮৭ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় সেশনের শুরুতে তামিমকে হারায় বাংলাদেশ। পেসার প্যাট কামিন্সের লাফিয়ে উঠা বলে উইকেটরক্ষকের গ্লাভসবন্দি হয়েছেন ড্যাশিং এই ওপেনার। আম্পায়ার আলিম দার কট বিহাইন্ডের জোরালো আবেদনে সাড়া না দিলে রিভিউ নেন স্টিভেন স্মিথ। তাতে পাল্টায় সিদ্ধান্ত, ভাঙে ৬৮ রানের জুটি। ১৫৫ বলে তামিমের ৭৮ রানের ইনিংসে ছিল ৮টি চাওে সাজানো।
তামিমের পর দ্রুত আউট হয়েছেন সাকিব আল হাসানও। অহেতুক ঝুঁকি নিয়ে মাত্র ৫ রান করে ফিরেছেন আগের ইনিংসে ৮৪ করা এই অলরাউন্ডার। এগিয়ে এসে নাথান লায়নকে উড়ানোর চেষ্টায় প্যাট কামিন্সের দারুণ ক্যাচে পরিণত হয়েছেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। এক বল আগেই মিড অফ ফিল্ডারের মাথার ওপর দিয়ে শট খেলে সাকিব পেয়েছিলেন চার রান। তার পুনরাবৃত্তি করতে গিয়ে মোটেও টাইমিং করতে পারেননি। স্পিন করে বেরিয়ে যাওয়া বলে ক্যাচ যায় কাভারে।
লক্ষ্য আরও বড় দিতে পারত বাংলাদেশ। কিন্তু মুশফিকুর রহিম অদ্ভুতুড়ে আউট হয়েই ঝামেলা বাধিয়ে দিয়েছেন। ৪১ রান করেছেন অধিনায়ক। কিন্তু ননস্ট্রাইক প্রান্তে ক্রিজে না থাকার মাশুল দিয়েছেন মুশফিক। লায়নের হাত ছুঁয়ে বল স্টাম্পে যাওয়ায় রানআউট হয়ে ফিরেছেন। এরপর চার বল খেলে কোনো রান না করেই ওয়েডের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন নাসির হোসেন। সাব্বির খেলছিলেন নিজের মারমুখী ভঙ্গিতেই। কিন্তু আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তে তাঁকেও ফিরতে হয়েছে। প্রথম ইনিংসের ভুলের পুনরাবৃত্তি না করতেই হয়তো আর রিভিউ নিলেন না, ২২ রানে থামলো পথচলা। শূন্য রানে তিন উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। এরপর মিরাজ (২৬) আর শফিউলেই দুই শ পেরোয় স্বাগতিক দল, থামে ২২১তে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।