Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্বপ্ন দেখালেন তামিম দেখছেন কামিন্সও

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মিরপুর টেস্টে জয়ের জন্য চতুর্থ দিনে অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ১৫৬ রান, বাংলাদেশের চাই ৮ উইকেট। প্রথম ইনিসে ৪৩ রানে পিছিয়ে থাকা অস্ট্রেলিয়াকে লড়াইয়ে ফিরিয়েছে ন্যাথান লায়নের ৬ উইকেট। বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে গুটিয়ে যায় ২২১ রানে। ২৬৫ রান তাড়ায় অস্ট্রেলিয়া ২ উইকেট হারিয়েছিল দ্রুত। সেখান থেকে দলকে জয়ের রাস্তায় তুলে দিয়েছে ডেভিড ওয়ার্নার ও স্টিভেন স্মিথের ৮১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি।
২ উইকেটে ২৮ থেকে দিন শেষে ওই দুই উইকেটেই ১০৯ রান। ফিকে হয়ে যাওয়া জয়ের স্বপ্নে আবার রঙের ছটা। উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য কঠিন, তবে জয়টা খুবই সম্ভব অস্ট্রেলিয়ার। দিন শেষ দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসে প্যাট কামিন্সের কণ্ঠে শোনা গেল সেই আত্মবিশ্বাসেরই ঝঙ্কার। এই ফাস্ট বোলারের বিশ্বাস, চতুর্থ দিন সকালে একটি ঘণ্টা নিজেদের করে নিতে পারলে ম্যাচটিও নিজেদের করতে পারবে অস্ট্রেলিয়া, ‘আমরা এখন দারুণ অবস্থানে আছি। লক্ষ্য ২৬৫ রানে আটকে রাখতে পারা ছিল দারুণ ব্যাপার। এরপর যেভাবে আজকের দিনটি শেষ হলো, কাল একটি ঘণ্টা ভালো কাটাতে পারলেই কাজ হয়ে যাবে। আজকে (গতকাল) দিনের শেষ ঘণ্টা আমাদের দারুণ আত্মবিশ্বাস দিয়েছে। আমি সত্যিই আত্মবিশ্বাসী। ডেভি ও স্মিথকে মনে হয়েছে দারুণ পরিকল্পনা নিয়ে ব্যাট করছে। সবকিছু তাদের নিয়ন্ত্রণে। সবকিছু তাই দারুণ সম্ভাবনাময়। মাত্র ১৫০ রান দূরে আমরা।’
‘আর একটি উইকেট পেলেই তো-’, অস্ট্রেলিয়ান সাংবাদিক প্রশ্নটি কেবল শুরু করেছিলেন। মাঝপথেই থামিয়ে তামিম ইকবাল বললেন, ‘একটি নয়, আটটি!’ জিততে হলে বাংলাদেশের চাই আরও আটটি উইকেট। কিন্তু এই টেস্টের যা ধারা আর উইকেটের যা অবস্থা, তাতে একটি উইকেটের পতনই ডেকে আনতে পারে অস্ট্রেলিয়ার পতন। জুটি ভাঙলেই যে ধরা দেয় আরও কিছু উইকেট! অস্ট্রেলিয়ান সংবাদকর্মীর প্রশ্নটি ছিল সেটি বুঝিয়েই। ডেভিড ওয়ার্নার ও স্টিভেন স্মিথের জুটি তৃতীয় দিনে তুলেছে ৮১ রান। চতুর্থ দিন সকালে বাংলাদেশের প্রথম লক্ষ্য, এই জুটি ভাঙা।
জিততে হলে আরও ৮ উইকেট লাগবে সত্যি, তবে তামিমও মানছেন, একটি উইকেটই খুলে দিতে পারে বাকি সব উইকেটের পথ, ‘এখানকার উইকেট খুবই অনুনমেয়। পরের মুহূর্তে কী হবে, কেউই বলতে পারবে না। কালকে (আজ) নতুন দিন। অস্ট্রেলিয়ার সেরা দুই ব্যাটসম্যান খেলতে নামবে। আমরা যদি দ্রুত তাদের একজনকে আউট করতে পারি, তাহলে ১৫০ রান এখনও অনেক দূরের পথ। এখনও তাদের দেড়শ রান (১৫৬) লাগবে। এই অবস্থায় আমরা তাদের কাজ কঠিন করে তুলতে পারি, আবার সহজও করে দিতে পারি। আমাদের চেষ্টা থাকবে, ওদের কাজটা কঠিন করে দেয়ার। এই দুই উইকেটের যে কোনো একটা যদি নিতে পারি, তাহলে ম্যাচটা আবার উন্মুক্ত হয়ে যাবে।’
তামিম যখন উইকেটে ছিলেন, সঙ্গে জুটিতে যখন ছিলেন মুশফিকুর রহিম, এক সময় মনে হচ্ছিলো আরও বড় লক্ষ্য দিতে পারবে বাংলাদেশ। কিন্তু প্যাট কামিন্সের অসাধারণ এক বলে ৭৮ রান করে ফেরেন তামিম। ননস্ট্রাইক প্রান্তে দুর্ভাগ্যজনক ভাবে রান আউট হন মুশফিক। পরে ৩৫ রানে শেষ ৫ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ অলআউট হয় ২২১ রানে। যে অবস্থায় ছিল দল, সেখান থেকে লিডটা আরও বড় না হওয়ায় খানিকটা হতাশ দল, জানালেন তামিম, এমনিতে রানটা কম না। এক দিন আগে হলেও ২৬০ রানের লক্ষ্য দিয়ে আমরা খুশি থাকতাম। কিন্তু আজকে আমাদের কাছে সুযোগ ছিলো লিড বাড়িয়ে তিনশর বেশি করার। ওইদিক দিয়ে কিছুটা হতাশ। ৩০০ হলে সুবিধা হতো।’
চতুর্থ ইনিংসে বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছিল দারুণ। ২৮ রানের মধ্যে ম্যাট রেনশ ও উসমান খাওয়াজাকে ফেরাতে পেরেছিল দল। এরপর ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান ওয়ার্নার ও স্মিথ। দিন শেষেও অপরাজিত দুজন। তৃতীয় দিনের শেষটা ভালো না হওয়ায় সহ-অধিনায়ক দায় দিলেন বোলিংকে। জানালেন চতুর্থ দিনের করণীয়টাও, অস্ট্রেলিয়া আজ (গতকাল) ভালো ব্যাটিং করেছে। আমরা খুব ভালো বোলিং করেছিলাম। তবে দুটি উইকেট নেওয়ার পর আমরা আরও ভালো বোলিং করতে পারতাম। কাল যা করতে হবে, আমাদের ভালো জায়গায় বোলিং করতে হবে। উইকেটের জন্য নয়। ডট বলের জন্য যদি বল করি, চাপ দিতে থাকলে, উইকেট আসবে।’
এই টেস্ট অনেকটাই ফিরিয়ে আনছে মিরপুরে সবশেষ টেস্টের স্মৃতি। গত অক্টোবরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রায় একই লক্ষ্য দিয়েছিল বাংলাদেশ, ২৭৩। রান তাড়ায় বিনা উইকেট ইংলিশদের রান ছিল ১০০। সেখান থেকে এক সেশনে ১০ উইকেট হারিয়ে গুটিয়ে যায় তারা ১৬৪ রানে। সেই টেস্টকে অনুপ্রেরণা মানছেন তামিমও। তবে এটাও জানেন, আসল কাজটি করতে হবে মাঠেই, ইংল্যান্ডের ম্যাচটার মতোই পরিস্থিতি। ১৫০ রান হয়ত খুব বেশি মনে হচ্ছে না। তবে উইকেটের ধরন এমন, যে দুজন আছে তাদের একজন আউট হয়ে গেলে যে কোনো কিছু হতে পারে। এরকম অনেক ম্যাচ দেখেছি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছিও। তবে ইতিহাস দেখে চিন্তা করলে চলবে না। কাজটা করতে হবে আমাদের। যে দুজন উইকেটে আছে, তারা ওদের সেরা ব্যাটসম্যান। যত দ্রুত ওদের আউট করতে পারব, তত সুযোগ থাকবে আমাদের।’
কামিন্স বলছেন ১৫০ রান ‘মাত্র’। এরপর সংবাদ সম্মেলনে এসে তামিম ইকবাল বললেন, দেড়শ ‘এখনও অনেক দূরের পথ’। সময়েই উত্তর মিলবে, কার পথ গিয়ে ঠেকবে জয়ের ঠিকানায়!



 

Show all comments
  • ক্প ৩০ আগস্ট, ২০১৭, ১০:২০ পিএম says : 0
    বাংলাদেশ,তো,ইতিহাস,গড়ে,দিলো
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ