পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রিয়জনের সাথে ঈদ উদযাপনের জন্য ঘরে ফিরতে শুরু করেছে নগরবাসী। সড়ক-মহাসড়কে ভয়াবহ যানজট। বাস লঞ্চ ও ট্রেনে ভিড় বাড়ছে। পথে পথে ভোগান্তি-বিড়ম্বনা। গত রোববার থেকে ঘরমুখো মানুষের ঢল শুরু হয়েছে। গতকাল ছিল দ্বিতীয় দিন। ভুক্তভোগিদের মতে, এবার সড়ক-মহাসড়কের অবস্থা খারাপ থাকায় ভোগান্তি বেশি হবে। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর শেষ মুহূর্তে যেভাবে সংস্কারের কাজ শুরু করেছে তা শেষ করতে করতে ঈদ এসে যাবে। গতকালও ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-টাঙ্গাইল, ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানজটের কবলে পড়ে ঘরমুখি মানুষদেরকে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। তবে ঢাকার টার্মিনালগুলোতে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে হয়নি যাত্রীদের। কমলাপুর থেকে বেশ কয়েকটি ট্রেন ছেড়ে গেছে দেরিতে।তবু যাত্রীরা ট্রেনে স্বস্তিতে ভ্রমণ করেছেন।
আগামী ২ সেপ্টেম্বর পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপন হবে। প্রিয়জনের সাথে ঈদ উদযাপনের জন্য মানুষ ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছে। গত রোববার থেকে এ যাত্রা শুরু হয়েছে। দ্বিতীয় দিনে গতকাল সোমবার সকাল থেকে রাজধানীর বাস, লঞ্চ টার্মিনাল এবং রেল স্টেশনে ছিল উপচে পরা ভিড়। গাবতলী বাস টার্মিনালে খবর নিয়ে জানা গেছে, সড়ক-মহাসড়কের বেহাল অবস্থার পরেও যাত্রীদের চাপ বেশি। এর কারন এবার অতিরিক্ত গাড়ি নেই। হানিফ পরিবহনের এক কর্মকর্তা জানান, রাস্তা খারাপ থাকায় এবার উত্তর ও দক্ষিনাঞ্চলের পথে অতিরিক্ত গাড়ি যোগ হচ্ছে না। সে জন্য যাত্রীদের খানিকটা বাস সঙ্কটে পড়তে হতে পারে। ওই কর্মকর্তা জানান, প্রতিবার ঈদে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের রুটগুলোতে হানিফ পরিবহনের কমপক্ষে ৫০টি বাস যুক্ত করা হয়। চট্টগ্রাম ও সিলেট রুট থেকে বাসগুলো আনা হতো। এবার রাস্তার বেহাল দশার জন্য সেই বাসগুলো আর যোগ হচ্ছে না। এসআর ট্রাভেলসের এক কর্মকর্তা বলেন, দুরপাল্লার বাসগুলো ফিরতে দেরি হচ্ছে। এজন্য পরের দিনের সকালের যাত্রীদের সমস্যা হচ্ছে। এখনও সেই সমস্যা প্রকট আকারে দেখা না দিলেও দু’একদিনের মধ্যে দেখা দিতে পারে। তিনি বলেন, ঢাকা থেকে কুড়িগ্রাম যেতে সময় লাগছে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা। ফিরতেও একই সময় লাগলে একটা বাস দিয়ে দিনে দুই ট্রিপ মারা সম্ভব নয়। বাড়তি ৩/৪ ঘণ্টা যাত্রীদের অপেক্ষা করতে হবে বাসের জন্য। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকালও ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-টাঙ্গাইল, ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ভয়াবহ যানজট ছিল। গতকাল দিনের সূচনা লগ্নেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আটকা পড়ে ঘরমুখি মানুষ। মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের মেঘনা সেতু এবং দাউদকান্দির মেঘনা-গোমতি সেতুর টোল প্লাজার দুই পাড়েই দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকাল ৮টায় দাউদকান্দির মেঘনা-গোমতি সেতুর পূর্বপাড়ে প্রায় সাড়ে ৩ কিলোমিটার এবং সকাল সাড়ে ৮টায় মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের মেঘনা সেতুর পশ্চিম পাড়ে টোল প্লাজায় আড়াই কিলোমিটার যানজট দেখা যায়। পুলিশ জানায়, দুই সেতুর টোলপ্লাজায় ওজন পরিমাপক যন্ত্রে ধীরগতির কারণে এ যানজটের সৃষ্টি হয়। দিন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানজট আরও বাড়তে থাকে। গত কয়েকদিন ধরেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুই সেতুর উভয় পাড়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। আগামী কয়েকদিন এ যানজট আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে বলে বাস চালকদের আশঙ্কা। অন্যদিকে, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুরের বিভিন্ন পয়েন্টে গত শনিবার থেকে কখনও থেমে থেমে, কখনও তীব্র যানজট শুরু হয়। সেই যানজট গতকাল সোমবার পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে ভাঙাচোরা থাকায় এলোমেলো যানবাহন চলাচল, অবৈধ অটোরিকশা, যানবাহন অভারটেক ও অতিরিক্ত যানবাহনের চাপের কারণে এ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকালে একাংশে যানজট হলে বিকালে অপর অংশে যানজট শুরু হয়। পশুবাহী ও পণ্যবাহী ট্রাকের চাপ ও সড়কে চন্দ্রা ও সফিপুরে সড়কে জোড়াতালির সংস্কার হচ্ছে। ওই স্থানগুলোতে যানবাহন থামিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। এতে যানজট অব্যাহত রয়েছে। গতকাল বিকালেও গাজীপুরের কোনাবাড়ি থেকে কালিয়াকৈর উপজেলার সূত্রাপর এলাকা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার এবং কালিয়াকৈর-নবীনগর সড়কের উপজেলার চন্দ্রা থেকে কবিরপুর এলাকা পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার যানজট অব্যাহত ছিল।
দেরি হলেও ট্রেনে স্বস্তি
ঈদযাত্রার দ্বিতীয় দিনে ট্রেনে মোটামুটি স্বস্তিতে যাচ্ছেন যাত্রীরা। কমলাপুর থেকে ছেড়ে যাওয়া ট্রেনগুলোয় মোটামুটি ভিড় থাকলেও তা উপচেপড়া নয়। সকালে দেরি করে ছাড়ায় তিনটি আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রীরা কিছুটা ভোগান্তিতে পড়লেও বাকি ট্রেনগুলো ছেড়েছে সময়মতোই। রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর এক গৃহিনী জানান, ব্যবসার কারণে তার স্বামী যেতে পারবেন না। তিনি ঈদের আগের দিন যাবেন। তিনি বলেন, ছেলেমেয়ের স্কুল ছুটি হয়ে গেছে। এজন্য আগেই চলে যাচ্ছি। ঈদের আগে-পরের সময়টা আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কাটাতে চাই। বাচ্চারাও খুব খুশি। রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী হাবিবুর রহমান বলেন, ভিড় এড়াতে আগেই চলে যাচ্ছি। ট্রেন জার্নি বরাবরই ভালো লাগে। এজন্য চেষ্টা করি ট্রেনে যাওয়ার। আজকে ভিড় কম থাকায় একটু শান্তিমতো যেতে পারবো। জানা গেছে, খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস সকাল ৬টা ২০ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও সেটি সকাল ৭টা ২০ মিনিটে ছেড়ে যায়। সবচেয়ে বেশি দেরি করে ছেড়েছে ঢাকা-চিলাহাটি রুটের নীলসাগর এক্সপ্রেস। সকাল ৮টার এ ট্রেনটি বেলা পৌনে ১১টায় স্টেশন ছেড়ে যায়। ৩০ মিনিট দেরি করেছে কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস। এ ট্রেনের ছাড়ার সময় ১০টা ৩৫ মিনিট, কিন্তু ১১টা ৫ মিনিটে তা কমলাপুর ছেড়ে গেছে। সোমবার সারাদিনে কমলাপুর থেকে ৬৯টি ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার কথা। এর মধ্যে ৩০টি আন্তঃনগর, তিনটি ঈদের বিশেষ ট্রেন। বাকিগুলো মেইল ও এক্সপ্রেস ট্রেন। বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ২৭টি ট্রেন ছেড়ে গেছে বলে জানান কমলাপুরের স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্ত্তী। তিনি বলেন, দেরিতে আসার কারণেই ট্রেনগুলো দেরিতে কমলাপুর ছেড়েছে। তিনি বলেন, গতকাল ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় রেললাইন ভাঙার কারণে কিছু ট্রেন বিলম্বে এসেছিল। সেই গ্যাপটা আমরা এখনও ফিলাপ করতে পারি নাই। এ কারণে নীলসাগর, সুন্দরবন দেরি করেছে, এই দুটি ট্রেনের যেতেও দেরি হয়েছে। তবে অন্যান্য ট্রেনগুলো ঠিক সময়ে যাচ্ছে। কোনো ধরনের সমস্যা হচ্ছে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।