পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রতারক এজেন্সি’র মালিকের গা-ঢাকা : যাত্রীরা অনাহার-অনিদ্রায় দিন কাটাচ্ছেন
আশকোণাস্থ হজ ক্যাম্পে কতিপয় হজ এজেন্সি’র হজযাত্রীরা প্রতারণার ফাঁদে পড়েছেন। হজ ফ্লাইট শেষ হবার আর মাত্র ক’দিন বাকি।
প্রতাণার শিকার কতিপয় হজযাত্রী হজ ক্যাম্পে অনাহার-অনিদ্রায় দিন কাটাচ্ছেন। মধ্যসত্বভোগী গ্রুপ লিডারদের কাছে হজে লাখ লাখ টাকা পরিশোধ করেও হজে গমনেচ্ছুরা বিমানের টিকিট ও ভিসাযুক্ত পাসপোর্ট পাচ্ছেন না। বিভিন্ন জেলা থেকে হজ ক্যাম্পের ডরমিটরি ও নীচের ফ্লোরে আশ্রয় নেয়া হজযাত্রীরা হজ ফ্লাইটের নির্ধারিত সময় সূচি এবং পাসপোর্ট টিকিট না পেয়ে চরম হতাশায় ভুগছেন। কারো কারো কাছ থেকে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা করে নেয়ার পরেও হজযাত্রীদের ফ্লাইট দেয়া হচ্ছে না। কোনো কোনো হজ এজেন্সি’র মালিক ও গ্রুপ লিডাররা হজযাত্রীদের সউদী আরবে প্রেরণের বিষয়টি অনিশ্চয়তার মাঝে ফেলে গা-ঢাকা দিয়েছে। গতকাল রাত পর্যন্ত বিমান ও সাউদিয়ার হজ ফ্লাইট যোগে প্রায় ১ লাখ ৭ হাজার হজযাত্রী সউদী আরবে পৌছেছেন। আরো প্রায় ২২ হাজার হজযাত্রীর সউদী আরবে যাওয়ার বাকি। হজ ফ্লাইটের শেষের দিকে কিছু অনাকাঙ্খিত ঘটনায় হজে গমনেচ্ছু অপেক্ষমান যাত্রীরা হজ ক্যাম্পে অনাহার-অনিদ্রায় দিন কাটাচ্ছেন। পরিচালক হজ সাইফুল ইসলাম ও হাবের মহাসচিব মো: শাহাদাত হোসাইন তসলিম প্রতারণার শিকার হজযাত্রী ও প্রতারক হজ এজেন্সি’র মালিক ও গ্রুপ লিডারদের সাথে ঘন্টার পর ঘন্টা দেন দরবার করে যাত্রীদের হজে পাঠাতে গলদঘর্ম পোহাচ্ছেন। হাবের মহাসচিব শাহাদাত হোসাইন তসলিম-এর ব্যক্তিগত একক প্রচেষ্টায় গতকাল বৃহস্পতিবার হজ এজেন্সি নিবীর হজ ওমরাহ এন্ড ট্যুরিজমের (১০৮০)-এর ৪৪জন হজযাত্রী’র সর্বশেষ হজ ভিসা ইস্যু করেছে ঢাকাস্থ সউদী দূতাবাস কর্তৃপক্ষ। গত ২৩ আগষ্ট পরিচালক হজ উল্লেখিত ৪৪জন হজযাত্রীর পাসপোর্ট সউদী দূতাবাসে ভিসার জন্য পাঠালে চলতি বছর হজ ভিসার কার্যক্রম শেষ বলে তা’ ফেরত দেয়া হয়েছিল। হাব মহাসচিব স্বশরীরে দূতাবাসে গিয়ে বিশেষ অনুরোধে দূতাবাসের ভিসা কনসুলার সালেহ আল মুতাইরী নিবীর হজ ওমরাহ এন্ড ট্যুরিজমের ৪৪টি পাসপোর্টে হজ ভিসা ইস্যু করেন। হাব মহাসচিব তসলিম ভিসার ইস্যুর মেয়াদ শেষের ২/৩ দিন পরে গতকাল হাবের অনুরোধে ৪৪জন হজযাত্রীকে ভিসা দিয়ে হজে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়ায় সউদী রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ এইচ এম আল-মুতাইরী ও ভিসা কনসুলার সালেহ আল -মুতাইরীকে আন্তরিক মোবারকবাদ জানিয়েছেন। পরিচালক হজ সাইফুল ইসলাম বিকেলে হজ ক্যাম্পে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বলেন, এখনো প্রায় ২২ হাজার হজযাত্রী যাওয়া বাকি। এক প্রশ্নের জবাবে পরিচালক হজ বলেন, হজ ক্যাম্পে অবস্থান নেয়া যে সব হজযাত্রী হজে যেতে পারছেন না তার জন্য সংশ্লিষ্ট হজ এজেন্সি’র মালিকই দায়ী। তিনি বলেন, দায়িত্ব পালনে অবহেল এবং প্রতারণার জন্য অভিযুক্ত হজ এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। সকল হজযাত্রীই হজে যাওয়ার সুযোগ পাবেন বলেও পরিচালক হজ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, সাউদিয়া এয়ারলাইন্স আরো ৬টি শ্লট পেয়েছে। এতে তারা আরো দু’হাজার হজযাত্রী পরিবহন করতে পারবে।
রাজশাহীর বেসরকারী হজ এজেন্সি ইকো এভিয়েশন এন্ড ট্যুরিজম (১৩৪৮)-এর স্বত্বাধিকারী রুহুল কুদ্দুস রাজশাহী জেলার ২১জন হজযাত্রীকে হজ ক্যাম্পে ফেলে গা-ঢাকা দিয়েছে। পরিচালক হজ ও হাবের মহাসচিব তসলিম উক্ত হজ এজেন্সি’র নিকট আত্মীয় ও কম্পিউটার অপারেটর গোলাম কমলকে হজ ক্যাম্পের পরিচালকের রুমে গতকাল সারাদিন অবরুদ্ধ করে রেখে হজযাত্রীদের পাসপোর্ট ও টিকিট উদ্ধারের জোর প্রচেষ্টা চালান। হজ ক্যাম্পে অবস্থানকৃত হজযাত্রীদের গ্রুপ লিডার আতাউর রহমান ও তার স্ত্রী পরিচালক হজের কক্ষেও আটকে রাখা হয়। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর হাবের মহাসচিবের হস্তক্ষেপে পলাতাক রুহুল কুদ্দুস টেলিফোনের মাধ্যমে প্রতারণার শিকার ২১হজযাত্রীসহ দেড় শতাধিক পাসপোর্ট নয়া পল্টনস্থ হাবের কার্যালয়ে পৌছে দেয়। এসব পাসপোর্ট উদ্ধারের খবরে হজযাত্রীদের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসে। রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ইকো এভিয়েশনের প্রতারক স্বত্বাধিকারী রুহুল কুদ্দুসকে আটক করা সম্ভব হয়নি। কমল ও গ্রুপ লিডার আতাউর রহমান হজ ক্যাম্পে অবরুদ্ধ ছিল। হজ ক্যাম্প সূত্র জানায়, ইউরো এশিয়া (১৩৫৩) হজ এজেন্সি’র মুনাজ্জেম মাজহার ১০/১২জন হজযাত্রীকে রেখে সউদী আরবে পালিয়ে গেছে। এসব হজযাত্রীরা চরম হতাশায় ভুগছেন।
হজ ক্যাম্পের ফ্লোরে গত ২১ আগষ্ট আশ্রয় নেন রাজশাহীর ইকো এভিয়েশনের ২১জন হজযাত্রী। ইকো এভিয়েশনের হজযাত্রী আব্দুল গনি সরদার, আব্দুল কুদ্দুস, তাহাদ্দেস আলী, মো: খলিলুর রহমান , আব্দুল মান্নান তার স্ত্রী রিজিয়া বেগগম সাইদুর রহমান ও তার স্ত্রী কোহিনুর বেগম ও নজরুল ইসলাম জানান,দীর্ঘ দিন আগে হজে টাকা পরিশোধ করার পরেও ইকো এভিয়েশনের মালিক রুহুল কুদ্দুস আমাদের হজে না পাঠিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তারা ক্ষোভের সাথে বলেন, এসব প্রতারণার বিচার কি আমরা পামু না ? আমরা জীবনে একবারই হজের নিয়ত করেছি। হজে যাওয়া উপলক্ষে এলাকায় মিলাদ দোয়ার আয়োজন করে গ্রাম-বাসিদের কাছ থেকে বিদায় নিয়েছি।
হক ট্রাভেলসের কুমিল্লার বরুরা থানার হজযাত্রী আব্দুল মতিন, শামসুল হক, শামসুল আলম ভ’ঁইয়া জানান, গত ২৩ আগষ্ট হজ ক্যাম্পে তাদেরকে আনা হলেও এখনো তারা পাসপোর্ট ও টিকিট পাননি। দিনাজপুরের কাহারোল থানার হজযাত্রী মো: জিল্লুর রহমান তার স্ত্রী সাবিরা বেগম, ইয়াসিন আলী, আবুল হোসেন তার স্ত্রী হাবিবা বেগম, আজহার আলী, সৈয়বুর রহমান, খলিলুর রহমান শামসুল হুদা জানান, ব্রাইট ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরসের মাধ্যমে গ্রুপ লিডার আশরাফুল ইসলাম ৫জন মহিলাসহ ২৩জন হজযাত্রীকে গত ২১ আগষ্ট হজ ক্যাম্পে নিয়ে আসে। গত ২৩ আগষ্ট তাদের হজে পাঠানোর কথা থাকলেও গতকাল রাত পর্যন্ত তাদেরকে কোনো পাসপোর্ট ও টিকিট দেয়া হয়নি। এসব হজযাত্রী গ্রুপ লিডার আশরাফুল ইসলামকে জনপ্রতি ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা পরিশোধ করেছে। গতকাল হজযাত্রী সৈয়বুর রহমানের কাছ থেকে আরো ১০ হাজার টাকা অতিরিক্ত নেয়ার পরেও কবে বিমানের টিকিট ও পাসপোর্ট দেয়া হবে তা’র কোনো সঠিক জবাব দিতে পারেনি গ্রুপ লিডার আশরাফুল ইসলাম। এদিকে, চলতি বছর ঢাকাস্থ সউদী দূতাবাস কর্তৃপক্ষ এক লাখ ২৬ হাজার ২শ’ ৩৭জন হজযাত্রীর হজ ভিসা অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে দ্রুত সরবরাহ করায় গতকাল বেসরকারী হজ এজেন্সি হলি দারুননাজারত হজ ওভারসীজের স্বত্বাধিকারী মাওলানা মো: আনোয়ার হোসাইন সালেহী মহান রাব্বুল আলামীনের কাছে শুকরিয়া আদায় করে সউদী রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ এইচ এম আল মুতাইরীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।