পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সেই শাওন আবারও স্বপদে
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনকে দিন যৌন হয়রানি ও নিপীড়নের ঘটনা বেড়েই চলছে। শিক্ষক থেকে শুরু করে প্রশাসনিক কর্মকর্তা, ছাত্রনেতা ও স্থানীয় ক্যাডাররা রয়েছেন নিপীড়কের তালিকায়। সম্প্রতি এক শ্রেণির কু-রুচিসম্পন্ন শিক্ষকের মাধ্যমে যৌন হয়রানির ঘটনাগুলো ব্যাপকহারে বেড়ে গেলে, ছাত্রীদের কাছে ক্রমশই অনিরাপদ ও আতঙ্কের ক্যাম্পাসে পরিণত হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। কিছু জুনিয়র শিক্ষক রয়েছেন যারা প্রেম, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে যেমন হয়রানি করছেন, আবার তেমনি কিছু সিনিয়র শিক্ষকও চাকরি, নম্বর বেশি দেয়ার নাম করে হয়রানি করছেন। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালতের নির্দেশনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ নামের একটি কমিটি গঠিত হলেও মূলত সেটির নিয়ন্ত্রক প্রশাসন। প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের কারণে অর্ধশতাধিক অভিযোগের বিপরীতে একজন শিক্ষককে বরখাস্ত এবং গুটি কয়েক জনকে নামমাত্র শাস্তি প্রদান করা হলেও প্রভাবশালী শিক্ষকদের ঘটনাগুলো থেকে যাচ্ছে অন্ধকারে। ফলে হাজারো নির্যাতন, হয়রানি মুখ বুজে সহ্য করেই ক্যাম্পাস ছাড়ছেন ছাত্রীরা। বরখাস্ত হওয়া একমাত্র শিক্ষক সেই শাওন উদ্দিনও স্বপদে ফিরে এলে এ নিয়ে ক্যাম্পাসে বিস্ময়ের শেষ নেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গত সাত বছরে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অর্ধশতাধিক অভিযোগ দাখিল করেছেন ছাত্রীরা। এর মধ্যে যৌন হয়রানি এবং নিপীড়ন নিরোধ কমিটির কাছেই ৩০-এর অধিক অভিযোগপত্র জমা পড়েছে। উত্থাপিত অভিযোগের অল্প সংখ্যক ঘটনা তদন্তের পর নিষ্পত্তি হলেও অধিকাংশই ধামাচাপা পড়ে গেছে। এ নিয়ে ভুক্তভোগীদের মাঝে চরম অসন্তোষ রয়েছে। আবার হুমকির মুখে অভিযোগ প্রত্যাহারে বাধ্য হয়েছেন কোনো কোনো ছাত্রী। এসব ঘটনার অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অভিযোগকারী ছাত্রী ও অভিযুক্তদের নিয়ে বসে বিভিন্ন চাপ প্রয়োগ করে সমঝোতা করে দেয়া হয়। ফলে অভিযুক্তরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিই পাচ্ছে না।
সূত্র জানায়, সম্প্রতি গত ৩১ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. এম আবদুস সোবহান বরাবর এক অভিযোগপত্রে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. রুহুল আমীনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানীর অভিযোগ করেন একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুখসানা পারভীন। তবে এ ঘটনার পক্ষে বিপক্ষে নানা মত রয়েছে। এর কয়েক মাস আগে ক্যাম্পাস ছুটির পর বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র ভবনে নিজ চেম্বারে এক প্রভাবশালী শিক্ষককে ছাত্রীসহ আপত্তিকর অবস্থায় দেখা গেলেও ছাত্রলীগ ও পুলিশ সেটি আর্থিক দেন দেনের মাধ্যমে ধামাচাপা দেয়। এর আগে রাবি ছাত্রলীগের দুই কর্মীর বিরুদ্ধে প্রক্টর অফিসে যৌন হয়রানির লিখিত অভিযোগ করেন দুই ছাত্রী। এ ঘটনার বেশ কিছু দিন পরেই শুক্রবার ঠিক জুম্মার নামাজের সময় রবীন্দ্র ভবনে অপর এক শিক্ষক ছাত্রীসহ চেম্বারে ঢোকেন।
২০১৪ সালের নভেম্বরে ভূ-তত্ত¡ ও খনিবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির তৎকালীন সভাপতি কামরুল হাসান মজুমদারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় এক ছাত্রী যৌন হয়রানির গুরুতর অভিযোগ করেন। পরে বিভাগীয় একাডেমিক কমিটি ওই শিক্ষককে পরীক্ষা ও ছাত্রীদের গবেষণার তত্ত¡াবধানের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়।
ছাত্রীদের যৌন হয়রানির ঘটনায় ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক শাওন উদ্দিনকে অব্যাহতি দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। একই বছর মার্কেটিং বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে শুধু সাময়িকভাবে ক্লাস-পরীক্ষায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে বিষয়টি ধামাচাপা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ২০১০ সালে হিসাববিজ্ঞান বিভাগের কম্পিউটার কোর্সের এক খন্ডকালীন শিক্ষকের বিরুদ্ধে এক ছাত্রী যৌন হয়রানির অভিযোগ করলে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশে তাকে সংশিষ্ট কোর্স থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
একই বছর ফোকলোর বিভাগের এক শিক্ষক পরীক্ষায় বেশি নম্বর দেয়ার প্রলোভনে অনার্স শেষবর্ষের এক ছাত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন বলে ভুক্তভোগী ছাত্রী অভিযোগ করেন। একই সালে একই বিভাগের এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধেও এমন একটি অভিযোগ ওঠে। শিক্ষা সফরে গিয়ে খুলনায় বেসরকারি সংস্থা কারিতাসের বাংলোয় শেষ বর্ষের এক ছাত্রের সঙ্গে ওই শিক্ষিকাকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পান শিক্ষার্থীরা।
এর আগের বছর ছাত্রীকে গানের প্রশিক্ষণ দেয়ার সময় যৌন হয়রানির দায়ে টিএসসিসির প্রশিক্ষক সানোয়ার হোসেনকে বরখাস্ত করে প্রশাসন। একই সময় একই অভিযোগে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধেও শাস্তির সুপারিশ করে তদন্ত কমিটি। কিন্তু শিক্ষক বলেই তার শাস্তি মওকুফ করা হয়। এরপর প্রাণিবিদ্যা বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলেন ওই বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রীরা।
২০১১ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের (আইবিএস) তৎকালীন সচিব এসএম গোলাম নবীর বিরুদ্ধে এক ছাত্রী যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন। একই বছর ১৭ জানুয়ারি নাট্যকলা ও সংগীত বিভাগের খন্ডকালীন শিক্ষক অমিতাভ চ্যাটার্জির বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন বিভাগের এক ছাত্রী। পরে অমিতাভকে চাকরিচ্যুত করে কর্তৃপক্ষ।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এসব শিক্ষক মানুষ নামের অমানুষ, পশু। তারা শিক্ষক জাতির কলঙ্ক। তাদের কাছে তাদের মা বোনরাও নিরাপদ নয়। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী। ফলে বার বার অপরাধ করেও পার পেয়ে যান। যদি ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হতো, তাহলে যৌন হয়রানি অনেক কমে যেত। শিক্ষা জীবনে বিপর্যয় ঘটতে পারে বলেই শত হয়রানি, নিপীড়ন সত্তে¡ও মুখ খুলতে ইচ্ছা হয় না।
অভিযোগ করেই গ্যাড়াকলে ভুক্তভোগীরা:
শিক্ষক বা প্রভাবশালী ছাত্র নেতাদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলায় বিভিন্ন সময় ছাত্রীদের গ্যাড়াকলে পড়তে দেখা গেছে। ছাত্রত্ব বাতিল, খুন, হুমকি-ধামকি ও ভিডিও ফুটেজ নেটে প্রকাশ করার হুমকি দেয়া হয় তাদের। সম্প্রতি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করায় সেই ছাত্রীর ছাত্রত্ব বাতিল হয়। অবশ্য তদন্ত রির্পোটে অভিযোগটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে বলে জানা গেছে। এর আগে যৌন হয়রানি ও নিপীড়নের দায়ে যে বছর ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক শাওনকে বরখাস্ত করা হয় ওই বছরই বিভাগের আরেক শিক্ষক জহুরুল আনিস জুয়েলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ২০০৯ সালে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে সদ্য নিয়োগ পাওয়া এক শিক্ষক গোপনে তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরি ভবনের নিজ কক্ষে শিক্ষক ওই ছাত্রীর সঙ্গে রাতের পর রাত কাটাতে থাকেন। গোপনে দু’জনের থাকা-খাওয়া চলতে থাকে একই ছাদের নিচে। তবে বিষয়টি জানাজানি হলে ওই শিক্ষক ওই ছাত্রীর সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক অস্বীকার করেন। এর পরে সেই ছাত্রী সম্পর্কের আদ্যোপান্ত চিঠিতে লিখে ওই দিন রাতেই হলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এছাড়া যে তিনজন সহপাঠী ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীকে নিয়ে প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছিলেন তাদের সবাইকে ঠুনকো অজুহাতে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়।
তিনি ছাড়াও গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের আরও কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে এমন যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। যৌন হয়রানির ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই বিভাগের একজন শিক্ষিকাও আত্মহত্যা করেন। এমন নানা ঘটনা ঘটে গেলেও ক্যাম্পাসে দায়িত্বরত সাংবাদিকরাও বিষয়টি প্রকাশ করতে পারছেন না। কারণ, ক্যাম্পাসে সাংবাদিকদের অধিকাংশই গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এক ছাত্রী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ভাবছিলাম, উচ্চশিক্ষার সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠে এসে শিক্ষকদের কাছ থেকে নৈতিক শিক্ষা আলাদাভাবে রপ্ত করতে পারব। কিন্তু অভিজ্ঞতা খুবই তিক্ত। মাঝে মাঝে লেখাপড়া শেষ না করেই ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যেতে মন চায়। কাউকে নালিশও করতে পারি না। মুখ খুললে বিপদ বাড়ে।
যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কমিটি তল্পিবাহক:
এদিকে হাইকোর্টের রায়ের পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১১ সালে যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কমিটি গঠন হলেও এখন পর্যন্ত তেমন কোনো কার্যক্রম দেখাতে পারেনি। বলা যায়, প্রশাসনের তল্পিবাহক হিসেবেই ভূমিকা রাখছে এই কমিটি। প্রশাসন চাইলেই কোনো ঘটনার ব্যাপারে কমিটি সরব হয়, আবার না চাইলে নীরব থেকে যায়। গত পাচঁ-ছয় বছরে কমিটির কাছে ২০টিরও অধিক অভিযোগ লিখিতভাবে জমা পড়লেও কমিটি ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করেছে দুই থেকে তিনটির। বাকিগুলো কমিটিই ধামাচাপা দিয়েছে। আবার কখনও কখনও প্রশাসনের হয়ে বিভাগ বা অভিযোগকারী এবং অভিযুক্তের মধ্যে মধ্যস্থতা করতে দেখা গেছে। এতে করে প্রতিটি ঘটনাই অভিযোগকারীর বিপক্ষে যাচ্ছে। ফলে হয়রানির শিকার হলেও ছাত্রীরা যৌন হয়রানি নিরোধ কমিটির কাছে অভিযোগ দিতে তেমন আর উৎসাহবোধ করছে না।
তবে কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, হ্যা আমাদের অনেক ঘাটতি রয়েছে। কোন কোন ক্ষেত্রে আমাদের হাত পা বাধা, ইচ্ছা থাকলেও আমরা অনেক কিছু করতে পারি না। কারণ সমাজের সর্বত্রই পক্ষপাতিত্ব। বিশ্ববিদ্যালয় তো এর বাইরে নয়। নিপীড়কের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সময় তার রাজনৈতিক পরিচয় ও ক্ষমতা বাধার সৃষ্টি করে।
সেই শাওন আবারো স্ব-পদে:
শ্রেণীকক্ষে ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে অশ্লীল মন্তব্যের দায়ে সাময়িক বহিস্কার হওয়া রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক শাওন উদ্দিনকে আবারো স্বপদে বহাল রাখা হয়েছে। বিশ^বিদ্যালয়ের গত বিশেষ সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। এর আগে ২০১২ সালে বিশ^বিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শাওন উদ্দিনের বিরুদ্ধে শ্রেণী কক্ষে ছাত্রীদের নিয়ে অশ্লীল, যৌন হয়রানি মূলক আচরণের অভিযোগ ওঠে। পরে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে বিশ^বিদ্যালয় যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেল ২০১২ সালের যৌন নিপীড়নবিরোধী নীতিমালা অনুযায়ী ওই শিক্ষককে চাকরি থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করেন। পরে ২০১৩ সালে অনুষ্ঠিত বিশ^বিদ্যালয়ের ৪৫০ তম সিন্ডিকেট সভায় চুড়ান্ত্ভাবে বহিস্কার করা হয় তাকে। এর প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত শিক্ষক শাওন উদ্দিন হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। রিট করলে হাইকোর্টের রায় তার অনূকুলে যায়।
তবে এ ঘটনার আগেও শাওনের বিরুদ্ধে একাধিকবার যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে। ছাত্রদের আবাসিক হলে ছাত্রীদের প্রবেশের বিধান না থাকলেও সৈয়দ আমীর আলী হলে শিক্ষক শাওনের কক্ষ থেকে একবার মধ্যরাতে এক ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়। শাওন তখন ওই হলের আবাসিক শিক্ষক ছিলেন। হল প্রভোস্টকে না জানিয়ে বিশেষ ক্ষমতা বলেই ছাত্রীকে হলে প্রবেশ করিয়েছিলেন শাওন। হলের ছাত্ররা শাওনকে হাতেনাতে ধরে প্রভোস্টের কাছে অভিযোগ করলেও তৎকালীন প্রশাসন কোন পদক্ষেপ নেয়নি।
তবে এতো কিছুর পরেও বর্তমান প্রশাসন তাকে সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে চাকরিতে পুন:বহালের সিদ্ধান্ত নেয়, সেই সাথে চাকরিচ্যুতির দিন থেকে শুরু করে যোগদানের আগ পর্যন্ত বেতন- ভাতাদি পরিশোধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অথচ চাকরিচ্যুতির পর থেকে তিনি একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। চাকরির সঙ্গে তার বকেয়া পাওনাদিকে অনেকেই ডাবল বোনাস হিসেবে মন্তব্য করেছেন। এ নিয়ে ক্যাম্পাসে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়।
উল্লেখ্য, শাওন উদ্দিন ২০১৪ সালে তার বহিস্কারের বিরুদ্ধে রীট করেন। তিনি মামলায় ২০১৬ সালের ২৬ জুলাই রায় পান। অথচ রায় পাবার এক বছর পর তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি ফিরে পেতে আবেদন করলে বর্তমান প্রশাসন তাকে স্ব-পদে বহালের সিদ্ধান্ত নেয়। রায় পাবার পরেও কেন তিনি এক বছর নিশ্চুপ ছিলেন, তা নিয়েও নানা গুঞ্জন। তাছাড়া রায়ে পুরনো কমিটি দিয়ে পুন:তদন্ত কিংবা নতুন করে তদন্ত কমিটি গঠন করার কথা বলা হলেও বিষয়টি পাশ কাটিয়ে যায় প্রশাসন বলে অভিযোগ উঠেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।