নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
অস্ট্রেলিয়া সিরিজের জন্য ঘোষিত প্রথম টেস্টের দল দেখে প্রথমে চোখ ছানাবড়া হয়ে গিয়েছিল অনেকেরই। এই ফরম্যাটে দেশের একমাত্র স্পেশালিষ্ট ব্যাটসম্যান ধরা হয় যাকে, সেই মুমিনুল হকই ছিলেন না স্কোয়াডে! দল ঘোষণার পরপরই সামাজিক মাধ্যম ও গণমাধ্যমগুলোতে এ নিয়ে আলোচনার ঝড় উঠে। মুমিনুলের না থাকাকে ‘অবিচার’ হিসেবে আখ্যা দেন সাবেক-বর্তমান অনেক ক্রিকেটার। শেষমেশ রীতিমতো তোপের মুখে পড়েই একদিন পর নিজের হস্তক্ষেপে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন মুমিনুলকে দলে অন্তর্ভুক্ত করেন।
টিম ম্যানেজমেন্টের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে মুমিনুলকে দলে চেয়েছিলেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমসহ মাশরাফি, সাকিব ও তামিমরা। অবশেষে ২৫ বছর বয়সী মুমিনুল যখন দলের অংশ হলেন, তাতে প্রশান্তি পাচ্ছেন দলনেতা। গতকাল আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে শিশুদের নিয়ে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকালে মুশফিক বলেন, ‘দলে মুমিনুলের ফেরা আমাদের জন্য একটি প্রশান্তির বিষয়। আবহাওয়া ভালো থাকলে এটি অনেক রোমাঞ্চকর একটি টেস্ট সিরিজ হতে যাচ্ছে। আমরা জয়ের লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামবো।’
মুশফিকের হৃদয়ে প্রশান্তি ফিরলেও ঘুম হারাম হয়ে গেছে নির্বাচক এবং টিম ম্যানেজমেন্টের। মুমিনুল ফেরায় পরিবর্তন যে আনতে হচ্ছে অর্ডারেও! সেই অস্বস্তি আরো বাড়িয়ে দিলেন গতকাল ইমরুল-মুমিনুল একই সঙ্গে অনুশীলন করে। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের ইনডোরের নেটে সামনের পায়ে ভর করে পেছনের পা হালকা উঁচিয়ে রুবেল হোসেনকে চোখজুড়ানো এক স্ট্রেট ড্রাইভ খেললেন মুমিনুল। পাশের নেটে মেহেদী হাসান মিরাজকে এগিয়ে এসে ইমরুলের দৃষ্টিনন্দন কাভার ড্রাইভ। দুজনের স্বচ্ছন্দ ব্যাটিং দেখেই যেন ধন্দে পড়ে গেলেন দুই নেটের মাঝে দাঁড়ানো চন্ডিকা হাথুরুসিংহে!
প্রথম যে দল দেওয়া হয়েছিল, তাতে বোঝা যাচ্ছিল তিন নম্বর ব্যাটিং পজিশনটা হাথুরু ইমরুলের জন্যই বরাদ্দ রেখেছেন। কিন্তু পরে মুমিনুল দলে ফেরায় তিন নম্বর জায়গাটা এখন ধাঁধা হয়ে গেছে। মুমিনুল নাকি ইমরুল, কাকে বেছে নেবেন কোচ, সেটির উত্তর মিলবে ২৭ আগস্ট ঢাকা টেস্টে।
তবে মুমিনুলের সঙ্গে ইমরুলের এই প্রতিযোগিতায় যেতেই হয় না, যদি ওপেনিংয়ে তিনি জায়গাটা না হারাতেন সৌম্য সরকারের কাছে। বাংলাদেশ এ বছর যে চারটি টেস্ট খেলেছে, প্রতিটিতেই তামিম ইকবালের সঙ্গে ওপেন করেছেন সৌম্য। এই চার টেস্টে ৪ ফিফটিতে তাঁর রান ৩৭৪। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তামিমের সঙ্গী হিসেবে সৌম্যকেই যে রাখতে চান হাথুরু, সেটি না বললেও চলছে।
আবার ২০১৪ সালের অক্টোবর থেকে নিয়মিত তিনে নামা মুমিনুলকে যে এবার এই পজিশনে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পাবেন, সেটির নিশ্চয়তাও নেই। টিম ম্যানেজমেন্ট আগে থেকেই বলছে, যতটা সম্ভব শ্রীলঙ্কায় শততম টেস্টের দলটা ধরে রাখতে। সেটি হলে তিনে ইমরুলের খেলার সম্ভাবনাই বেশি।
টেস্টে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল উদ্বোধনী জুটির অংশ হয়েও ওপেনিংয়ে না খেলে তিনে খেলা, কতটা কঠিন ইমরুলের কাছে? সংবাদ সম্মেলনে বাঁহাতি ওপেনারের সতর্ক উত্তর, ‘এটা আসলে মানিয়ে নিতে হয়। তামিমকে যদি দেন, ও পারবে না। একটা সময় আমিও পারতাম না। তারপরও মানিয়ে নিতে হচ্ছে। দলের জন্য যেটা ভালো হয়, সেভাবেই খেলতে হবে।’ তিনে খেলাটা কতটা কঠিন একজন ওপেনারের কাছে? ইমরুল বললেন, ‘আমি মনে করি, জাতীয় দলের হয়ে ম্যাচ খেলাটাই সবচেয়ে বড় অর্জন। নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি। ব্যাটিংয়ের জায়গা নিয়ে নিজের একটা পছন্দ ঠিকই থাকে। কিন্তু দল যেটা ভালো মনে করবে, সেটাই করতে হবে। দুই জায়গায় ব্যাটিং করতে রাজি- ওপেনিং বা তিন নম্বর, যেটাই হোক সমস্যা নেই।’ সমস্যা একটা আছে। যেহেতু মুমিনুল ফিরেছেন, তিন নম্বরে ব্যাটিং করা নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে ইমরুলেরও। ২৮ টেস্ট খেলা বাঁহাতি ব্যাটসম্যান যদিও এটা ইতিবাচকভাবেই দেখছেন, ‘সুস্থ প্রতিযোগিতা থাকলে সেটা দলের জন্য ভালো। শুধু আমি নই, সব পজিশনে প্রতিযোগিতা থাকলে ম্যানেজমেন্ট সবচেয়ে ভালো খেলোয়াড়কে বেছে নিতে পারে।’
কিন্তু টিম ম্যানেজমেন্টের নিশ্চয়ই এটি জানা কোন খেলোয়াড় কোন পজিশনে ভালো খেলেন। টেস্টে ইমরুলের যে তিন সেঞ্চুরি আছে, দুটিই ওপেনিংয়ে নেমে। চার ফিফটির প্রতিটি ওপেনিংয়ে ব্যাটিং করে এসেছে। যেখানে বেশি ভালো করছেন, সেখান থেকে সরিয়ে কি তাঁকে বঞ্চিত করা হচ্ছে না? উত্তর দিতে গিয়ে একটু অস্বস্তি ইমরুলের, ‘এই মুহূর্তে কিছু বলতে চাচ্ছি না। আট-নয় বছরের ক্যারিয়ার হয়ে গেছে। এখনো আসা-যাওয়ার মধ্যে আছি। খারাপ খেললে জায়গা হারাতে হয়। ফেরার পর আবার নতুন করে শুরু করতে হয়। কী হতো বা কী হতো না, এসব নিয়ে চিন্তা করে লাভ নেই। এখন সামনে যে দিনগুলো আছে, তাতে মনোযোগ দিতে চাই।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।