দেশের চার স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ৬ জন ও আহত হয়েছে ৪১ জন। এ সংক্রান্ত আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো প্রতিবেদন-
পাবনা জেলা সংবাদদাতা জানান, পাবনায় দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৫ জন নিহত এবং ৩০ জন আহত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে পাবনার সুজানগর থানার দুলাই ইউনিয়নের চরগোবিন্দপুর গ্রামের পাবনা-ঢাকা মহাসড়কের বাঁক মোড়ে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। পাবনার সুজানগর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম জানান, শ্যামলী পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো-ব-১৪-০৭৪৮) যাত্রীবাহী একটি বাস পাবনা থেকে ঢাকা যাচ্ছিল। অপরদিকে সিরাজগঞ্জ থেকে সাদ্দাম পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো-ব-১২-০৩৬২) একটি যাত্রীবাহী বাস পাবনা আসছিল। চিনাখরা নামক স্থানে পৌঁছালে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় বাস দুটি রাস্তার পাশের একটি খাদে পানির মধ্যে পড়ে যায়। বাসটি অনেকটাই দুমড়ে-মুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই ৫ জন নিহত ও অন্তত ৩০ জন আহত হয়।
পাবনা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক ইউনুস আলী জানান, ঘটনাস্থল থেকে ৫ যাত্রীর লাশ উদ্ধার করা হয়। অপরদিকে প্রায় ২০ জনকে ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয় এবং বাকিরা স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা নেয়। সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন, জেলার আমিনপুর থানার দাড়িয়াপুর গ্রামের মৃত রইস উদ্দিনের ছেলে পুত্র আয়েন উদ্দিন (৬০), একই গ্রামের তায়জাল হোসেনের পুত্র মিন্টু (৩০), আতাইকুলা থানার দাপুনিয়া গ্রামের মৃত শামসুল আলমের পুত্র ও শ্যামলী পরিবহনের চালক সহকারী সোহেল রানা (৩০), সিরাজগঞ্জের শাহাজাদপুর উপজেলার রতনকান্দি গ্রামের মৃত ফজলুল মাষ্টারের পুত্র আবু সাইদ (২৫) ও নিপেন্দ্রনাথ (৪৫)। পাবনা জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, আহত অবস্থায় ২০ জন ভর্তি হয়েছে। এদের মধ্যে ১২ জনের অবস্থা গুরুতর। ক্রেনের সাহায্যে পুলিশ বাস দুইটি রাস্তার পাশ থেকে উদ্ধার করেছে। তবে দুই বাসের চালককে ড্রাইভারকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
রূপগঞ্জ (নারায়নগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, রূপগঞ্জ উপজেলার আধুরিয়া এলাকার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে বাস-ট্রাক ও প্রাইভেটকারের ত্রীমুখী সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার সকালে দিকে ঘটে এ দুর্ঘটনা। আহতদের মধ্যে বাস চালক লতিফ মিয়া, ব্যবসায়ী তাওহিদ মিয়া, আমজাদ হোসেন, আক্তার হোসেন, আল-আমিন মিয়া ও প্রাইভেটকারের চালক আনোয়ার মিয়ার নাম জানা গেছে। এদের মধ্যে বাস চালক লতিফ মিয়া, ব্যবসায়ী তাওহিদ মিয়াকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সঈেক্টর শহিদুল আলম জানান, সকাল ৯টার দিকে আধুুরিয়া এলাকার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ওভারটেকিং করতে গিয়ে যাত্রীবাহী বাস, মালবাহী ট্রাক ও প্রাইভেটকারের ত্রীমুখী সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সংবাদদাতা জানান, ব্রাহ্মণবড়িয়ার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান সড়ক দুঘর্টনায় আহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে চট্টগ্রাম যাবার পথে কুমিল্লার কংশ নগরে নামক স্থানে তিনি আহত হন। তবে এ ঘটনায় এসপি মিজানুর রহমান সামান্য আহত হলেও তার গাড়িটি (পাজেরো স্পোর্ট) বেশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ ইকবাল হোসেন। তিনি জানান, মঙ্গলবার ফজর নামাজ পড়ে মিজানুর রহমান চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে তার সরকারি গাড়ি নিয়ে রওনা হন। পরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার কংশনগর এলাকায় একটি ট্রাককে সাইড দিতে গিয়ে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললে মহাসড়কের পাশে গাছের সঙ্গে গাড়িটির ধাক্কা লাগে। এতে মিজানুর রহমান পায়ে ও কোমরে আঘাতপ্রাপ্ত হন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তার সরকারি বাসভবনে অবস্থান করছেন।
মাদারীপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাদারীপুর সদর উপজেলার সমাদ্দার ব্রিজ এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় আবুল বাশার নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে। নিহত আবুল বাশার সদর উপজেলার গৈদি গ্রামের ইয়াকুব আলি সরদারের ছেলে। ভাঙা হাইওয়ে পুলিশের এসআই জাহাঙ্গীর আলম জানান, মঙ্গলবার সকালে একটি দ্রæত গতির ট্রাক পথচারী আবুল বাশারকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। স্থানীয়রা আসার আগেই ঘাতক ট্রাক পালিয়ে যায়। লাশ উদ্ধার করে নিহতের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।