Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নতুন রুপে সাজছে জহুর আহমেদ

| প্রকাশের সময় : ২১ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম


রুমু, চট্টগ্রাম ব্যুরো : ২০০৪ সালে আইসিসির অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ দিয়ে চট্টগ্রাম জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের ভেন্যুটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গণে যাত্রা শুরু হয়। ২০০৬ সালে শ্রীলংকার বিপক্ষে ওয়ানডে ও টেস্ট ম্যাচ আয়োজনের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক ভেন্যুর পূর্ণ মর্যাদা পায় এই ভেন্যুটি। এছাড়া ২০১১ সালে আইসিসি বিশ্বকাপের দু’টি ম্যাচ আয়োজন করা হয় এই ভেন্যুতে। আগামী ৪ সেপ্টেম্বর এই ভেন্যুতে টেস্ট খেলবে স্মিথ-ওয়ার্নারা দল। সিরিজের ২য় টেস্ট খেলতে অস্ট্রেলিয়া দল চট্টগ্রামে আসবে ১ সেপ্টেম্বর। অথচ এ ভেন্যুর বেহাল দশা। ফ্লাড লাইটের বেশ কয়েকটি বাল্ব নষ্ট। ভারী বর্ষণ হলেই হসপিটালিটি বক্সসহ অধিকাংশ কক্ষে পানি পড়ে। বিভিন্ন কক্ষের ফ্লোর টাইলসও উঠে গেছে। ভেঙে গেছে বিভিন্ন কক্ষের গøাস। অনেক কক্ষের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রটিও অকেজো হয়ে পড়ে আছে। এছাড়া ক্রিকেটের জন্য নির্মিত এ ভেন্যুটির রক্ষণাবেক্ষণ ও কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনসহ অন্যান্য খরচ মিলিয়ে মাসে খরচ হয় প্রায় ১০ লক্ষ টাকার কাছাকাছি। যা বছরের হিসাবে এক কোটি টাকার উপরে।
এই বেহাল দশার ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) চট্টগ্রাম ভেন্যু ম্যানেজার ফজলে বারী রুবেল বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের কারণে এই ভেন্যুটি বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরপর আর বড় ধরণের সংস্কার কাজ করা হয়নি। ইতোমধ্যে ভেন্যুটির যেসব সংস্কার কাজ করতে হবে, সেই তালিকা তৈরী করে এনএসসিকে জানানো হয়েছে। এনএসসির প্রকৌশলীরা ভেন্যুটি পরিদর্শন করে যাওয়ার পর সংস্কার কাজও শুরু হয়ে গেছে। আশা করছি, আগামী মাসে বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট সিরিজের শেষ ম্যাচটি আয়োজনের আগেই ভেন্যুটির সকল কাজ সম্পন্ন হবে।’ তিনি জানান, এই ভেন্যুর নিরাপত্তার দায়িত্ব একটি বেসরকারী কোম্পানীকে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও ভেন্যুটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য আরেকটি বেসরকারী কোম্পানীকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ১০ জন পরিচ্ছন্ন কর্মী প্রতিদিন ভেন্যুটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার কাজে নিয়োজিত রয়েছে। পুরো ভেন্যুটি পরিচ্ছন্ন করতে তাদের এক সপ্তাহ সময় লেগে যায়। তিনি আরো জানান, এই ভেন্যুটির নিজস্ব সাব-স্টেশন রয়েছে। পিডিবির সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী বিদ্যুৎ ব্যবহার করলে কিংবা না ব্যবহার করলেও মাসে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল বাবদ পিডিবিকে পরিশোধ করতে হয়। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কোম্পানীকে দিতে হয় প্রায় দুই লাখ টাকা। এছাড়াও এই ভেন্যুতে নিয়োজিত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্যও খরচ তো রয়েছে।
উল্লেখ্য, এ ভেন্যুতে ২০১১ সালে আইসিসি বিশ্বকাপের দু’টি ম্যাচে ক্রিকেটের জনক ইংল্যান্ড এবং নেদারল্যান্ডেসের বিপক্ষে জয় পায় স্বাগতিক বাংলাদেশ দল। ২০১৪ সালে এখানে আইসিসি টি২০ বিশ্বকাপের ১৫টি ম্যাচ আয়োজন হয়। নেপালের বিপক্ষে জয় পায় স্বাগতিক টিম বাংলাদেশ। এছাড়াও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্টে একটি জয় রয়েছে এ ভেন্যুতে বাংলাদেশ দলের। সব মিলিয়ে চট্টগ্রামে ১৫টি টেস্ট, ১৯টি ওয়ানডে ও ১৭টি টি২০ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগীয় জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। এরমধ্যে স্বাগতিক বাংলাদেশ দল ১৫টি টেস্ট, ১৯টি ওয়ানডে এবং ৪টি টি২০ ম্যাচ খেলেছে। ১৫টি টেস্টের মধ্যে একটিতে জয়, ৫টিতে ড্র এবং বাকি ম্যাচগুলোতে হেরেছে টাইগাররা। তবে ১৯টি ওয়ানডের মধ্যে জয়ের পাল্লা ভারী টিম বাংলাদেশেরই। ১৯টির মধ্যে ১০টিতেই জিতেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ দল। সাতটিতে হেরেছে তারা, বাকি ২টি ম্যাচ বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়েছে। এছাড়াও ৪টি টি২০ ম্যাচের মধ্যে ১টিতে জয় রয়েছে টাইগারদের। এই ভেন্যুতে বাংলাদেশ দল ভালো করার পাশাপাশি তামিম-মুশফিকদের ব্যক্তিগত অনেক সুখস্মৃতিও রয়েছে। এ কারণে টাইগারদের লাকি গ্রাউন্ড বলা হয় চট্টগ্রামের এই ভেন্যুকে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ