পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিদেশে পালিয়ে থাকা খুনিদের ফিরিয়ে আনতে যথেষ্ট কষ্ট করতে হচ্ছে। তবে ‘যে গর্তে তারা লুকিয়ে থাকুক, তাদের ধরবই।’ গতকাল শনিবার ‘বঙ্গবন্ধু মার্ডার কেস: জার্নি, অ্যাকমপ্লিসমেন্ট অ্যান্ড রিমেইনিং চ্যালেঞ্জ’ (বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা: ধারাবাহিকতা, অর্জন ও প্রতিবন্ধকতা) শীর্ষক এক আলোচনা সভায় একথা বলেন আইনমন্ত্রী। বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর মিলনায়তনে এ সভার আয়োজন করে আওয়ামী লীগের গবেষণা সংগঠন সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)।
আইনমন্ত্রী বলেন, ২১ বছর পর বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার এজাহার দায়ের হয়। এত বছর পর একটি হত্যা মামলার যখন বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়, তখন সাক্ষী-তথ্য-প্রমাণ জোগাড় করা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। তিনি আরও বলেন, ‘রক্ত মুছুক না মুছুক, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের হাত থেকে রক্তের দাগ মুছে দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা হয়েছে।’
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি আনিসুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের কূটনৈতিক দায়িত্ব এ জন্য দেওয়া হয়েছিল, যেন তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে। যেন নেপথ্যের কুশীলবদের কথা কেউ জানতে না পারে।
আনিসুল হক বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার মরহুম বাবা এবং এ মামলার প্রথম কৌঁসুলি সিরাজুল হকের নানা ব্যক্তিগত ঘটনার স্মৃতিচারণা করেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার মামলাকে ‘আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার এক উজ্জ্বলতম দৃষ্টান্ত’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন আনিসুল হক। তিনি বলেন, চার হাজার লোকের সাক্ষাৎকার নিয়ে ৬১ জন সাক্ষী বের করা হয়। যদি কোনো দিন এ মামলার বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে গবেষণা হয়, তবে যে-কেউ দেখবে এটি একটি নিখুঁত মামলা।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র ও শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি।
স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে রাদওয়ান মুজিব বলেন, বাবার পিএচডি শেষ হওয়ার পর ১৯৮৬ সালে আমরা বাংলাদেশে ফেরত আসলাম। আমি এখানে এসে একটি স্কুলে ভর্তি হলাম। বনানীর স্কুলটি খুব ভালো লাগত। অনেক বন্ধু ছিল। তিনি আরও বলেন, হঠাৎ করে মা একদিন বললেন, আমার স্কুল বদলাতে হবে। আমি তখন খুব মন খারাপ করলাম। কেন স্কুল বদলাতে হবে? তখন মা বললেন, এখানে খুনিদের বাচ্চারা পড়ালেখা করছে।
রাদওয়ান মুজিব বলেন, আমি তখন ছোট ছিলাম, অত কিছু বুঝতাম না। আসলে সে সময় কোনো কোনো খুনির সন্তানেরাও আমার স্কুলে ভর্তি হয়েছিল। স্কুল থেকে বেশ কয়েকবার আমাদের অনুসরণ করে বাসা পর্যন্ত মানুষজন আসল। এ ছাড়া প্রতিদিন স্কুলগেটে তাদের মুখোমুখি হওয়া। সে কারণেই মা আর আমাকে ওই স্কুলে পড়াতে রাজি হননি।
রাদওয়ান বলেন, তখন মার কাছে জানতে চেয়েছিলাম, এরা কোন খুনি? আর যদি খুনি হয়, সবাই জানে, তাহলে তারা এভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে কীভাবে? মা তখন আমাকে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্সের কথা বলেন। ওই ছোট বয়সেই আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। এটা আবার আইন হতে পারে নাকি? একজনকে খুন করে তার বিচার না করার জন্য আইন আবার কীভাবে হয়?
রাদওয়ান মুজিব বলেন, আমার খালা বা মা ছোটবেলা থেকেই ১৫ আগস্ট সম্পর্কে আমাদের বলে দিতেন। ফলে ছোটবেলা থেকেই বিষয়গুলো সম্পর্কে আমরা জানতাম। তাঁরা আমাদের বলতেন, এটা তোমাদের পরিবারের ইতিহাস। জানতে হবে। আর সে কারণেই এ সময় থেকে আমার মাথায় এই অর্ডিন্যান্সের কথা ছিল। তিনি বলেন, এরপর এমন অবস্থা সৃষ্টি হলো যে আমার মা-খালারা দেখলেন এখানে থাকাই তাঁদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেল। নিরাপত্তার কথা ভেবে আমাদের আবারও দেশের বাইরে চলে যেতে হলো। রাদওয়ান মুজিব আরও বলেন, এরপর ১৯৯৩ সালে আমরা বাংলাদেশে ফেরত আসি। তখন আমাদের বয়স ১২-১৩। বন্ধুদের সঙ্গে রাজনীতি নিয়ে আলাপ হতো। বন্ধুরা তখন অনেকে জেনারেল জিয়ার কথা বলতেন। উনি এই, উনি সেই। যে ব্যক্তি ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স পাস করে, সে কীভাবে ভালো হতে পারে? এটা আবার কোন ধরনের ন্যাশনাল হিরো?
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান। বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, সাবেক সচিব এবং এখন বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের কিউরেটর নজরুল ইসলাম খান, দৈনিক জনকণ্ঠ-এর নির্বাহী সম্পাদক স্বদেশ রায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, সাংসদ ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পী প্রমুখ।##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।