Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে আজ দাফন কবি রফিক আজাদ আর নেই

প্রকাশের সময় : ১৩ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি ও মুক্তিযোদ্ধা রফিক আজাদ আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। গতকাল (শনিবার) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে তিনি মারা যান। কবির আত্মীয় রোহান জানান, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে কবিকে হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছিল। কবির বড় ছেলে অভিন্ন আজাদ বিদেশে অবস্থান করছেন। তিনি দেশে ফিরলে আজ (সোমবার) মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবর স্থানে মরহুমের দাফন সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন তার ভাতিজি শামসুন্নাহার নীরু। কবি রফিক আজাদের মৃত্যুতে প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপি’র চেয়ারপার্সন শোক প্রকাশ করেছেন।
নীরু আরও জানান, বর্তমানে লাশ বারডেম হাসপাতালের হিমাগারে রাখা হবে। সোমবার সকালে প্রথমে কবির লাশ শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে নেয়া হবে। সর্বস্তরের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে নেয়া হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে। তারপর বাংলা একাডেমিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন করা হবে।
রফিক আজাদ ১৯৪১ সালের ১৪ ফেব্রæয়ারি টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল থানার গুণী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা সলিম উদ্দিন খান ছিলেন একজন সমাজসেবক ও মা রাবেয়া খান ছিলেন আদর্শ গৃহিণী। দুই ভাই-এক বোনের মধ্যে তিনি সর্বকনিষ্ঠ। তারা ছিলেন তিন ভাই-দুই বোন। কিন্তু তার জন্মের আগে মারা যায় জ্যেষ্ঠ ভাই মাওলা ও তারপর আরেক বোন খুকি। রফিক আজাদ যখন মায়ের গর্ভে তখন অকাল প্রয়াত বড় বোন অনাগত ছোট ভাইয়ের নাম রেখেছিলেন ‘জীবন’।
কবি রফিক আজাদ ১৯৫২ সালের ২২ ফেব্রæয়ারি স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। ১৯৫৬ সালে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ালেখা করেন। সাধুটী মিডল ইংলিশ স্কুল থেকে অষ্টম শ্রেণি পাস করে ভর্তি হন কালিহাতী রামগতি শ্রীগোবিন্দ হাই ইংলিশ স্কুলের নবম শ্রেণিতে। ব্রাহ্মণশাসন হাইস্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় অংশ নিয়ে কৃতিত্বের সঙ্গে পাস করেন।
রফিক আজাদ বাংলা একাডেমির মাসিক সাহিত্য পত্রিকা উত্তরাধিকার’র সম্পাদক ছিলেন। রোববার পত্রিকাতেও রফিক আজাদ নিজের নাম উহ্য রেখে সম্পাদনার কাজ করেছেন। তিনি টাঙ্গাইলের মওলানা মুহম্মদ আলী কলেজের বাংলার লেকচারার ছিলেন। রফিক আজাদের প্রেমের কবিতার মধ্যে নারীপ্রেমের একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য আছে। রফিক আজাদ ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৭১ সালে কাদের সিদ্দিকীর সহকারী ছিলেন।
প্রকাশিত গ্রন্থ : অসম্ভবের পায়ে, সীমাবদ্ধ জলে সীমিত সবুজে, চুনিয়া আমার আর্কেডিয়া, পাগলা গারদ থেকে প্রেমিকার চিঠি, প্রেমের কবিতাসমগ্র, বর্ষণে আনন্দে যাও মানুষের কাছে, বিরিশিরি পর্ব, রফিক আজাদ শ্রেষ্ঠ কবিতা, রফিক আজাদ কবিতাসমগ্র, হৃদয়ের কী বা দোষ, কোনো খেদ নেই, প্রিয় শাড়িগুলো প্রভৃতি।
পুরস্কার ও সম্মাননা : একুশে পদক (২০১৩), বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮১), হুমায়ুন কবির স্মৃতি (লেখক শিবির) পুরস্কার (১৯৭৭), আলাওল পুরস্কার (১৯৮১), কবিতালাপ পুরস্কার (১৯৭৯), ব্যাংক পুরস্কার (১৯৮২), সুহৃদ সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৯), কবি আহসান হাবীব পুরস্কার (১৯৯১), কবি হাসান হাফিজুর রহমান পুরস্কার (১৯৯৬), বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা (১৯৯৭)।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে আজ দাফন কবি রফিক আজাদ আর নেই
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ