নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ইমরান মাহমুদ : বাংলাদেশের পঞ্চপান্ডব। যাদের হাত ধরে তরতর করে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশের ক্রিকেট। মাশরাফি বিন মর্তুজা, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহীম এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এ পাঁচজনের মধ্যে টেস্ট খেলছেন চারজন। মাশরাফি বিন মর্তুজা সর্বশেষ টেস্ট খেলেছেন ২০০৯ সালে। এরপর থেকে টেস্ট ক্রিকেটে তিনি শুধুই সাবেক। তবে, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা বর্তমান ক্রিকেটারদের মধ্যে কেবলই মাশরাফিরা। বাকি চার সিনিয়র ক্রিকেটারের সৌভাগ্য হয়নি অসিদের বিপক্ষে টেস্ট খেলার। প্রায় ১১ বছর পর আবারও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সাদা পোশাকে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। দু’দলের আগের লড়াইয়ের সবাই তখন ‘সাবেক’ খেতাব নিয়ে ব্যস্ত অন্য কোনো ভূমিকায়। ঐ সিরিজে খেলেছিলেন এবং এখনও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলার মধ্যে আছেন, এমন ক্রিকেটার শুধুই মাশরাফি বিন মর্তুজা।
টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেও এখনও খেলে যাচ্ছেন ওয়ানডে ক্রিকেট, তাও দাপটের সাথেই। বাংলাদেশ দলের অধিনায়কের দায়িত্বও পালন করছেন শক্ত হাতে। স¤প্রতি অভিজ্ঞ সেনানী মাশরাফি কথা বলেন ঐ সিরিজটি সম্পর্কে। দলটিকে ‘সর্বকালের সেরা’ অস্ট্রেলিয়া দল হিসেবে উল্লেখ করে মাশরাফি বলেন, ‘আমি যখন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলেছিলাম, সেটা শুধু অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে সেরা দলই না, টেস্ট ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা একাদশ ছিলো। ম্যাথু হেইডেন, শেন ওয়ার্ন, জেসন গিলেস্পি, অ্যাডাম গিলক্রিস্ট, রিকি পন্টিং, স্টিভ ওয়াহ- ক ছিলো না ঐ দলে?’
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলতে না পারলেও পাঁচ সপ্তাহ আগে শুরু হওয়া জাতীয় দলের ক্যাম্পে নিয়মিতই অংশ নিচ্ছেন মাশরাফি। সতীর্থদের পাশে থেকে নিয়মিত উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন। মাশরাফির বিশ্বাস, বাকি চার সিনিয়র ক্রিকেটারের নিজেদের প্রমাণ করার এটাই উপর্যুক্ত সময়। এই চার ক্রিকেটারের নেতৃত্বেই বিশ্বের প্রতিটি দলের বিপক্ষে দারুণ পারফরম্যান্স দেখিয়েছে বাংলাদেশ।
ক্রিকইনফোকে দেয়া সাক্ষাৎকারে মাশরাফি বিন মর্তুজা বলেন, ‘চার সিনিয়র ক্রিকেটারের কাছে আমার অনেক প্রত্যাশা। ঘরের মাঠে তারা নিজেদের মূল্যটা বোঝাতে সক্ষম হবেন।’ খুব কাছ থেকে সতীর্থদের দেখছেন তিনি। মানসিকভাবে কতটা প্রস্তুত বাংলাদেশ টেস্ট দল সেটা অন্য যে কারও চেয়ে ভালো জানা মাশরাফির। এ কারণে তিনি বললেন, ‘বাংলাদেশ মানসিকভাবে অনেক উন্নতি করছে। বিশেষ করে টেস্ট সিরিজের আগে নিজেদেরকে মানসিকভাবে শক্তিশালী একটা অবস্থানে নিয়ে গেছে ক্রিকেটাররা।’
ইংল্যান্ড এবং শ্রীলঙ্কাকে হারানোর কারণেই আত্মবিশ্বাসটা অনেক বেড়েছে বলে মনে করেন মাশরাফি। তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি ঘরের মাঠে ইংল্যান্ড এবং শ্রীলঙ্কার মাটিতে গিয়ে তাদেরকে হারানোর কারণে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মানসিক শক্তি অনেক বেশি বেড়েছে। এমনকি ক্রাইস্টচার্চ, ওয়েলিংটন, হায়দরাবাদ, চট্টগ্রাম কিংবা গল টেস্টে হারের পরও বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাস এখন অনেক উঁচুতে।’ ড্রেসিংরুমের ক্রিকেটারদের মানসিক অবস্থা দেখেই অনেক বেশি আশাবাদী মাশরাফি, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেটা সেটা হচ্ছে, জয় কিংবা পরাজয় কোনোটিই ব্যাপার নয়। ড্রেসিংরুমের অবস্থা আমি দেখেছি। তাদের মানসিকতাই আগের সবগুলো দলের চেয়ে আলাদা অবস্থান তৈরি করে দিয়েছে।’
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ উপলক্ষে বাংলাদেশ যে প্রস্তুতি নিয়েছে, মাশরাফির মতে যে কোনো টেস্ট সিরিজের আগে এটা সেরা প্রস্তুতি, ‘আমি মনে করি, বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা সবচেয়ে বেশি কাজ করেছে তাদের মানসিকতা নিয়ে। গত ১৫ বছরে আমাদের সবচেয়ে বড় চিন্তার বিষয় ছিল এই একটি জায়গাতেই। কারণ, আমাদের কোনো ধৈর্য্য ছিল না। সেঞ্চুরি করার পর একজন ব্যাটসম্যানের চিন্তা করা উচিৎ স্কোরটাকে কিভাবে আরও বড় করা যায়। পরের দিন পর্যন্ত কিভাবে ইনিংসটাকে টেনে নিয়ে যাওয়া যায় সেটা চিন্তা করবে। সেঞ্চুরি করার পর একজন ব্যাটসম্যান কেন চিন্তা করবে না, সেটাকে কিভাবে ডাবল সেঞ্চুরি করা যায়! এটা হয়তো প্রতিদিন হবে না। তবে, সুযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করাটাই আসল।’
অস্ট্রেলিয়াকে কিভাবে হারানো যায়, সে ফর্মুলা খানিকটা বাতলেও দিয়েছেন ওয়ানডে দলের অধিনায়ক। মাশরাফি বলেন, ‘তামিম রয়েছে ক্যারিয়ারের সেরা ফর্মে। যদি সে এবং ইমরুল কায়েস মিলে ভালো একটা সূচনা এনে দিতে পারে তাহলে সেটা হবে একধাপ এগিয়ে যাওয়া। এরপর আমাদের রয়েছে সাকিব এবং মেহেদী হাসান মিরাজের স্পিন। যদি পেসারদের মধ্যে একজনও অন্তত একটি কিংবা দুটি স্পেল ভালো করতে পারে, অন্তত তিনটি কিংবা চারটি উইকেট নিতে পারে। তাহলে অবশ্যই আমাদের পক্ষে একটা সম্ভাবনা তৈরি হবে। এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হলে অবশ্যই আমরা ভালো কিছু প্রত্যাশা করতে পারি।’
মাশরাফির প্রত্যাশা, এরাই আগামী দুই বছরে অনেক বড় পার্থক্য তৈরি করে দেবেন এবং বাংলাদেশকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।