Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

তবু দায়িত্ব থেকে সরানো হলো ডাক্তার কাফিল আহমদকে

শিশু মৃত্যু ঠেকাতে প্রাণপণ চেষ্টা

| প্রকাশের সময় : ১৫ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : ভারতে উত্তরপ্রদেশের গোরখপুরে বিআরডি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৬০টির বেশি শিশুর মৃত্যু। তাতে রাজ্য রাজনীতি তো বটেই, ঝড় উঠল দেশের রাজনীতিতেও। গত রোববার বিআরডি মেডিক্যাল কলেজ পরিদর্শন করতে যান উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জেপি নাইডু। এই মুখ্যমন্ত্রীর এই পরিদর্শনের সময়ই এনসেফালাইটিস বিভাগ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় দায়িত্বপ্রান্ত ডাক্তার কাফিল আহমদকে। ডাক্তার কাফিলের জায়গায় দায়িত্বে এলেন ডাক্তার ভূপেন্দ্র শর্মা।
সূত্র থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, ডাক্তার কাফিল নাকি প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতেন। আর সেই অভিযোগেই তাঁকে সরানো হয়েছে। বিআরডি মেডিক্যাল কলেজ পরিদর্শেন যোগী আদিত্যনাথ, দায়িত্ব থেকে সরানো হল ডাক্তার কাফিল আহমদকে! তবে রবিবার ডাক্তার কাফিল খবরের শিরোনামে উঠে আসে অন্য এক ঘটনায়। যেখানে ধরা পড়ে ডাক্তার কাফিলের অন্যরকম রূপ। তবে এই সব রাজনীতির উর্ধ্বে গিয়ে গোরখপুরের ডাক্তার কাফিল আহমদ একাই লড়ে গেলেন শিশুমৃত্যু রুখতে। যেখানে হাসপাতালের সবাই গভীর নিদ্রায় ডুবে গিয়েছিলেন। আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। সেখানে ডাক্তার কাফিল আহমদই নিজের কাঁধে নিয়ে নিলেন পুরো দায়িত্ব! সারারাত দৌড়াদৌড়ি করেই জোগান রাখলেন শিশুদের জন্য অক্সিজেন।
অক্সিজেনের অভাবে শিশুমৃত্যু রুখতে, রাতভর লড়াই চালালেন গোরখপুরের এই ডাক্তার!
বৃহস্পতিবার রাত দু’টো নাগাদ হাসপাতালের কর্মীরা এসে ডাক্তার কাফিল আহমেদকে জানান, হাসপাতালে মজুত অক্সিজেন ফুরিয়ে এসেছে। যেটুকু অক্সিজেন রয়েছে, তাতে বড়জোর আর এক ঘন্টা অক্সিজেন সরবরাহ করা যাবে। হাসাপাতালের কর্মীদের মুখে একথা শুনে একবারটিও অন্য কিছু ভাবেননি ডাক্তার কাফিল আহমদ। তোয়াক্কা করেননি সরকারি নিয়ম নীতির। শুধু ভেবেছেন শিশুদের প্রাণের কথা। যেমন ভাবা তেমন কাজ। ডাক্তার কাফিল, নিজের চিকিৎসক বন্ধুদের ফোন করে ১২টি অক্সিজেন সিলিন্ডার জোগাড় করে আনেন হাসপাতালে। ফোন করেন ‘স্বশস্ত্র সীমা বল’-এর ডিআইজিকেও। আপৎকালীন পরিস্থিতিতে সেখান থেকে জোগাড় করা হয় ১০টি সিলিন্ডার। কিন্তু মোটে ২২টি অক্সিজেন সিলিন্ডার! কতক্ষণ রক্ষা করে যাবে শিশুদের প্রাণ? তাই নতুন ভাবনা শুরু করেন ডাক্তার কাফিল। জেলার এক সিনিয়র ডাক্তারের কাছ থেকে ছ’টি অতিরিক্ত সিলিন্ডার নিয়ে আসেন সকালে। এলাকার এক ব্যবসায়ী নগদ টাকার বদলে অক্সিজেন সিলিন্ডার দিতে রাজি হলে ডাক্তার কাফিল তাঁর এটিএম কার্ড দিয়ে দেন ওই ব্যবসায়ীকে। ট্রাকে দ্রæত আনা হয় বাড়তি অক্সিজেন সিলিন্ডার। তার ভাড়াও মেটান ওই চিকিৎসকই। ফোন যায় জেলার অন্যান্য হাসপাতালে। শেষমেশ শিশুদের বাঁচাতে পারেনওনি ডাক্তার কাফিল। তবে লড়ে গিয়েছে নিজের শেষটুকু পর্যন্ত। অন্তত শিশু মৃত্যুর সংখ্যাটা তো কমেছে! নিউজ ১৮ ডটকম।



 

Show all comments
  • মাসুদ ১৫ আগস্ট, ২০১৭, ১২:৫০ পিএম says : 0
    ডাক্তার কাফিল আহমদ দেখালেন মানুষ মানুষের জন্য সেটা আবার প্রমান করলো।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ