পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ে প্রধান বিচারপতি যে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন তাতে ‘ইতিহাস বিকৃতি’ হয়েছে। এক্ষেত্রে বিচারকের অসদাচরণ হয়েছে কি-না, তাও খতিয়ে দেখার অবকাশ আছে। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) আয়োজনে মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। ‘রায়ের ওই বক্তব্যে ‘ইতিহাস বিকৃতি হয়েছে এতে কোন সন্দেহ নাই’ দাবি করে ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, আপনারা জানেন আমাদের স্বাধীনতা কিন্তু রাতারাতি আসে নাই। স্বাধীনতার ঘোষণাটাও রাতারাতি হয় নাই। একটা রাজনৈতিক আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণের রায়ে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। এটাকে আমি বিকৃত করলেও আমি একটা অপরাধ করব। তিনি আরো বলেন, অসদাচারণের কোনো সংজ্ঞা এখন পর্যন্ত নাই। সে ক্ষেত্রে এটা খতিয়ে দেখতে হবে, এটা অসদাচারণ কি-না। বা অন্য কিছু হয়েছে কি-না, সেটা খতিয়ে দেখার কিন্তু অবকাশ আছে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনো বিচারকের অসদাচরণের ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়ার কর্তৃত্ব কার হাতে- এমন প্রশ্নে আইনমন্ত্রী বলেন, এর অথরিটি এখন মহামান্য প্রেসিডেন্ট। তার কারণ হচ্ছে, সুপ্রিম সুডিশিয়াল কাউন্সিল সম্পর্কে যদি (সংবিধানে) কোনো বক্তব্য না থাকে, আর ষোড়শ সংশোধনীও যদি না থাকে, তাহলে মহামান্য প্রেসিডেন্ট ছাড়া আর গতি নাই। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আদালত কিছু বাতিল করলে আগের বিধান আপনা-আপনি ফিরে আসে কি-না, তা নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক আছে। একটা দৃষ্টান্ত হচ্ছে অষ্টম সংশোধনী মামলা। আদালত কিন্তু কোনো আইন প্রণয়ন করতে পারে না। আদালত আইনের ব্যাখ্যা দিতে পারে। যতটুকু ‘সংবিধানের লঙ্ঘন’ বলেছেন, এতটুকু উনাদের এখতিয়ারে আছে, রায় দিয়েছেন। কিন্তু যেটা বহাল করতে বলেছেন, সেটা বলতে পারেন কি-না, তা সম্পর্কে সন্দেহ আছে।
প্রধান বিচারপতির ‘অগ্রহণযোগ্য’ বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করার উদ্যোগ কীভাবে সরকার নিতে তা করতে চায় সে বিষয়ে মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে মন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আদালতের মাধ্যমেই তা করা হবে। রিভিউ করার বিষয়ে প্রশ্নে আইনমন্ত্রী বলেন, এটা কিন্তু ৭৯৯ পাতার একটা রায়। রিভিউ করতে গেলেও পড়ে জায়গাগুলো চিহ্নিত করতে হবে। আজ-কাল-পরশুর মধ্যে হয়ে যাবে- সেটা আমি বলব না। ভীষণভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। ওখানে আপত্তিকর, অপ্রীতিকর ও অপ্রাসঙ্গিক কথাবার্তা আছে, সেইগুলো এক্সপাঞ্জ করার কথা আমি বলেছি। সে বিষয়ে কাজ চলছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের শনিবার রাতে প্রধান বিচারপতির বাসায় যান এবং রায় নিয়ে আলোচনা করেন। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আইনমন্ত্রী বলেন, রাতে হয়েছে বলে সাক্ষাতের বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানি না। তবে এটা সত্যি যে, বিচার, আইন ও শাসন বিভাগ- এই তিনটা হচ্ছে রাষ্ট্রের স্তম্ভ। এক্ষেত্রে আমাদের মধ্যে কিন্তু আলাপ আলোচনা চলতে পারে। যতক্ষণ পর্যন্ত দেশের উন্নতির জন্য, বড় ধরনের স্বার্থে আমরা আলাপ আলোচনা সব সময়েই চালিয়ে যাব। তিনি আরো বলেন, আমরা কিন্তু কোনো ক্ষমতার প্রতিযোগিতায় নামি নাই। আমাদের পথ চলতে গিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে। সেটা দেশের স্বার্থে নিরসন করা প্রয়োজন হবে; শেখ হাসিনার সরকার তা করবেই। তার কারণ হচ্ছে, শেখ হাসিনা জনগণের ভাল চান; দেশের ভাল চান। তাই আলাপ আলোচনার দ্বার সব সময় খোলা থাকবে।
ষোড়শ সংশোধনী বাতিল রায় নিয়ে মন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন পর্যায় থেকে সমালোচনা এবং প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ দাবি করা আদালত অবমাননার পর্যায়ে পড়ে কিনা জানতে চাইলে জবাবে মন্ত্রী পাঠ্যপুস্তকে ইতিহাস বিকৃতি নিয়ে সংবাদপত্রে প্রতিবেদন প্রকাশের প্রসঙ্গ টানেন। তিনি বলেন, এই বিকৃতি রোধের দাবি আপনারাই তুলেছেন। আমার মনে হয়, এই দাবি আপনাদের মধ্যে এখনো সক্রিয় আছে যে পাঠ্যপুস্তকে যে ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে, সেটাকে ঠিক করতে হবে। তিনি উল্টো প্রশ্ন করে বলেন, এখন রায়ের মধ্যে যদি অপ্রাসঙ্গিকভাবে কেউ ইতিহাস সম্পর্কে কিছু বলতে গিয়ে আসল ইতিহাসের বাইরে গিয়ে কিছু বলেন; তাহলে এটা যারা করেছেন, তাদেরকে ধরিয়ে দেওয়ার অধিকারটুকু কী আমার নাই? তিনি বলেন, ওই রায়ে এমন এক জায়গায় ‘আঘাত করা হয়েছে’ যা অনেকেরই ‘হৃদয়ে লেগেছে’।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।