পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
উমর ফারুক আলহাদী : জাতীয় শোক দিবস ১৫ আগস্ট ও ঈদকে কেন্দ্র করে সারা দেশে র্যাব-পুলিশ কঠোর সর্তক অবস্থান নিয়েছে। জাতীয় শোক দিবস এবং ঘরে ফেরা মানুয়ের ঈদযাত্রা নির্বিঘ করতেই রাজধানীসহ সারা দেশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ১৫ আগস্ট রাজাধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর পতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং ভিভিআইপি ও ভিআইপি মুমভেন্ট উপলক্ষে ওই এলাকায় থাকছে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কয়েকটি রাস্তায় যানবাহন চলাচলও বন্ধ থাকবে।
নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকছে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার পুলিশ সদস্য ও সাড়ে ৮ হাজার র্যাব সদস্য। পাশাপাশি যে কোনো ধরনের নাশকতা বা অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কঠোর নজরদারি করছেন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, কোনো ধরনের ঝুঁকি নেই, তারপরও সার্বিক বিবেচনায় ঢাকা মহানগরীতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, জঙ্গিদের তৎপরতা এবং অপরাধী চক্রের বহুমুখী অপরাধের বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখেই মাঠ পর্যায়ে গোয়েন্দা নজরদারি ব্যাপক বাড়ানো হয়েছে। এ জন্য পুলিশ সদর দপ্তর থেকে সারা দেশে নির্দেশ দিয়ে বলা হযেছে, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এবং নির্বিঘেœ জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানমালা সম্পন্ন করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে যা যা করণীয় তা যেন করা হয়। এ জন্য সংশ্লিষ্ট নগর, মহানগর, জেলা-উপজেলা ও থানা পুলিশকে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে কোনো ধরনের অবহেলা বা দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার অভিযোগ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করা হয়েছে। ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের যাতায়াত নির্বিঘœ রাখতে এবং ছিনতাই, চুরি, ডাকাতি, চাঁদাবাজি প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবার আগে থেকেই নিরাপত্তা জোরদার করেছে। জাতীয় শোক দিবসকে কেন্দ্র করে সারা দেশে দেড় লাখ পুলিশ, সাড়ে ৮ হাজার র্যাব ছাড়াও এপিবিএন, আনসার, গ্রামপুলিশ এবং কোনো কোনো স্থানে বিজিবি মোতায়েন থাকবে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে। এ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে আগামী কোরবানির ঈদ পর্যন্ত। কোরবানির পশুবাহী যানবাহনে চাঁদাবাজি প্রতিরোধ, পশুর হাটের নিরাপত্তা, মহাসড়কের যানজট নিরসন, রাস্তার পাশে পশুর হাট কিংবা কাঁচাবাজার বসতে না দেয়া, সারা দেশের রেল স্টেশন, বাস টার্মিনাল, লঞ্চঘাট, ফেরিঘাট, মহানগরীর বিপণি বিতানসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং ঈদগা মাঠে মুসল্লিদের সার্বিক নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক অবস্থানে রাখা হয়েছে।
র্যাবের গণমাধ্যম ও আইন শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ বলেছেন, ১৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে র্যাবের নিরাপত্তা যথারীতি বাড়ানো হয়েছে। রাজধানীসহ সারা দেশের যেসব স্থানে শোক দিবস উপলক্ষে সভা-সমাবেশ, আলোচনা অনুষ্ঠান করা হবে সেখানে থাকবে র্যাবের বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এছাড়া ঈদকে কেন্দ্র করেও নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। তিনি বলেন, ঈদে কোরবানির পশুর হাটে, মহাসড়কে যাতে কেউ চাঁদাবাজি করতে না পারে সে লক্ষ্যে র্যাবের টহল বাড়ানো হবে, থাকবে গোয়েন্দা নজরদারি।
১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সুনির্দিষ্ট কোনো ঝুঁকি না থাকলেও নগরজুড়ে নিñিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। গতকাল রোববার ধানমন্ডি ৩২ নম্বর এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শনে এসে তিনি এ কথা জানান।
কমিশনার বলেন, পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকের বিপুল সংখ্যক পুলিশের সমন্বয়ে অনুষ্ঠানস্থলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। র্যাব ও ডিএমপির ডগ স্কোয়াড নির্ধারিত কর্মসূচির এলাকাস্থল সুইপিং করবে। এছাড়া, সোয়াট ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকবে। তিনি জানান, ১৫ আগস্ট সকাল সাড়ে ৬টায় প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রী, কূটনীতিক, ভিআইপি ব্যক্তিবর্গ ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর সাড়ে ৭টায় বনানী কবরস্থানে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন তারা।
৩২ নম্বর এলাকাজুড়ে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা হাতে নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে কমিশনার বলেন, পুরো এলাকা সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় থাকবে এবং ২টি কন্ট্রোলরুম থেকে সিসিটিভিগুলো সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হবে। তাছাড়া অনুষ্ঠানস্থলে পুলিশের চেকপোস্ট পার হয়ে আর্চওয়ের মধ্য দিয়ে প্রবেশ করতে হবে। এছাড়া চার পাশে প্রচুর পরিমাণ পুলিশের চেকপোস্ট থাকবে। নিরাপত্তার স্বার্থে ৩২ নম্বর এলাকার বিভিন্ন হোটেল ও বাসাগুলোয় তল্লাশি চালিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থার আওতায় নিয়ে আসা হবে বলেও জানান কমিশনার।
তিনি বলেন, অনুষ্ঠানস্থলে ট্রলিব্যাগ, ব্যাকপ্যাক, ভ্যানিটিব্যাগ, টিফিন ক্যারিয়ার, ফ্লাক্স, দেয়াশলাইসহ যে কোনো দাহ্য পদার্থ, ছুরি-কাঁচি, আগ্নেয়াস্ত্র বহন নিষিদ্ধ করা করা হয়েছে।
১৫ আগস্টে সুনির্দিষ্ট কোনো হুমকি আছে কি না জনতে চাইলে কমিশনার বলেন, সুনির্দিষ্ট কোনো ঝুঁকি নেই। পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রয়োজন ও বাস্তবতার নিরিখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হবে।
১৫ আগস্ট রাজধানীর বেশ কিছু সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে
১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাজধানীর বেশ কিছু সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কমাতে এবং ট্রাফিক শৃঙ্খলা নিরাপদ ও নির্বিঘœ করতে এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। জাতীয় শোক দিবসে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে আসবেন হাজারো মানুষ। জনতার ঢলকে কেন্দ্র করে কিছু এলাকায় ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় বিধিনিষেধ আরোপ করে ডিএমপি।
১৫ আগস্ট উপলক্ষে ধানমন্ডি ৩২ ও বনানী কবরস্থানের আশপাশের কিছু রাস্তা বন্ধ থাকবে। সেদিন ভিভিআইপি, ভিআইপি এবং ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ-মিরপুর রোড-ধানমন্ডি ২৭ নম্বর ক্রসিং-মেট্রো শপিংমল হয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের পশ্চিম প্রান্ত দিয়ে প্রবেশ করবেন এবং একই পথে বের হয়ে যাবেন। এছাড়া বিভিন্ন দল, সংগঠন এবং সর্বসাধারণ ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের পূর্ব প্রান্ত দিয়ে প্রবেশ করে পশ্চিম প্রান্ত দিয়ে বের হয়ে যাবেন।
এছাড়া ওই দিন সোনারগাঁও ক্রসিং থেকে রাসেল স্কয়ার পর্যন্ত, সিটি কলেজ থেকে রাসেল স্কয়ার পর্যন্ত, ধানমন্ডি ২৭ নম্বর থেকে রাসেল স্কয়ার পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ থাকবে। এছাড়া রাসেল স্কয়ার থেকে সোবহানবাগ মসজিদ পর্যন্ত সব ধরনের পার্কিং বন্ধ থাকবে। নির্ধারিত স্থান ছাড়া কোথাও পার্কিং করা যাবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।