Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বহুপক্ষের নিয়ন্ত্রণে বিভক্ত সিরিয়া

বিনোদন ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ১২ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মিডল ইস্ট মনিটর : সিরিয়ায় সরকার এবং বিরোধীদের মধ্যে প্রতিদিন সংঘর্ষ চলার কারণে যুদ্ধ বিধ্বস্ত এ দেশটিতে কোন এলাকা কার নিয়ন্ত্রণে তা বলা কঠিন। এলাকার নিয়ন্ত্রণে প্রতিনিয়তই পরিবর্তন ঘটছে।
২০১১ সালে সিরিয়ায় যখন গণঅভ্যুত্থান শুরু হয় তখন গোটা দেশই প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন ছিল। কিন্তু দিন যাওয়ার সাথে সাথে ফ্রি সিরিয়ান আর্মি (এফ এস এ) আলেপ্পোসহ কিছু শহর দখল করতে শুরু করে।
গণঅভ্যুত্থান অচিরেই পরিণত হয় রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধে। কয়েক বছরের মধ্যে আসাদের সেনাবাহিনী দুর্বল হয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে লেবানন ও ইরাকের শিয়া যোদ্ধারা এ লড়াইয়ে যুক্ত হয়, সে সাথে ইরান ও হেজবুল্লাহ আসাদকে আর্থিক ও সামরিক সমর্থন দিতে থাকে। এ সব ঘটনা সিরিয়ার বিরোধীদের একটি জোটে ঐক্যবদ্ধ হতে সাহায্য করে।
এর কিছুদিন পর আসাদ বেশ কয়েকটি সিরীয় শহরের নিয়ন্ত্রণ হারাতে শুরু করেন। তার শাসনের পতন ঘটতে চালেছে বলে জল্পনা-কল্পনা ছড়িয়ে পড়ে।
২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে রাশিয়া সিরিয়ায় সামরিক হস্তক্ষেপের কথা ঘোষণা করে। রুশ জঙ্গি বিমান সরকার বিরোধীদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বোমাবর্ষণ শুরু করে। সিরিয়ার যুদ্ধে রাশিয়া সাদা ফসফরাস অস্ত্র, ক্লোরিন, মাস্টার্ড, সারিন গ্যাস এবং ক্লাস্টার বোমা, ড্রাম বোমা, মাইন ও ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে।
বেসামরিক জনগণের উপর নির্মম বোমাবর্ষণ ও সামরিক হামলার পর আসাদের মিত্র বহুজাতিক বাহিনী সিরিয়ার উপকূলে কিছু এলাকায় অগ্রগতি লাভ করে এবং আলেপ্পোর মুক্ত পূর্বাংশ ও ঘুটা তাদের নিয়ন্ত্রণে আসে।
নিয়ন্ত্রণে কে?
সিরিয়ার রাজনৈতিক বিশ্লেষক আহমেদ আল-মাসালমার মতে, ভৌগোলিক ভাবে সিরিয়া এখন কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। বহুপক্ষ নিয়ন্ত্রণ করছে সিরিয়াকে। প্রেসিডেন্ট আসাদের বাহিনী যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটির ২০ শতাংশেরও কম এলাকা এবং হেজবুল্লাহসহ ইরানি বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করছে ৭ শতাংশের মত এলাকা। এফ এস এ-র নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ৩০ শতাংশ এলাকা, রাশিয়া ২ শতাংশের কম, কুর্দিরা ২০ শতাংশ ও বাকি এলাকা দায়েশ নিয়ন্ত্রণ করছে।
আল-মাসালমা বলেন, সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে সরকার বিরোধীরা দারা ও তার গ্রামাঞ্চল, কুনেইত্রা প্রদেশ ও তার উপকন্ঠ এলাকাসহ ৭০ শতাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে। দারার গ্রামাঞ্চলের পূর্ব, পশ্চিম, উত্তরপশ্চিম ও উত্তরপূর্ব এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে এফ এস এ।
আন্তর্জাতিক বাহিনী
আল-মাসালমার ব্যাখ্যা যে যুক্তরাষ্ট্র কুর্দি নিয়ন্ত্রিত আল হাসাকাহর একটি সামরিক ঘাঁটি ব্যবহার করছে। সিরিয়া-ইরাক সীমান্তে আল-তানফ সীমান্ত ফাঁড়ির কাছে তাদের একটি ঘাঁটি আছে।
বেসামরিক জনগণের ক্ষয়ক্ষতি উপেক্ষা করে সিরিয়ায় লড়াইরত বেশ কিছু দেশ ও সামরিক গ্রæপ আরো প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণ বিস্তার করতে চাইছে। ইরানি বিপ্লবী রক্ষী কোর (আইআরজিসি) , কুদস বাহিনী, লেবাননের হেজবুল্লাহ, ইরাকি শিয়া গ্রæপ নাজবা, কাতাইব আল-ইমাম আলী ও , ইরাকি হেজবুল্লাহ, ইরাকি শিয়া, আফগান ফাতেমিয়ুন, পাকিস্তানি জয়নাবুন, ফিলিস্তিনি জেরুজালেম ব্রিগেড এবং পপুলার ফ্রন্ট ফর দি লিবারেশন অব ফিলিস্তিন আসাদ সরকারের সমর্থনে লড়াই করছে।
বেশ কয়েকটি সশস্ত্র বিপ্লবী ব্যাটালিয়নও সেখানে লড়াই করছে। যেমন এফ এস এ ব্যাটালিয়ন, আহরার আল-শাম, সুকুর আল-শাম ব্রিগেড, জয়শ আল-ইসলাম, নর্দার্ন ডিভিশন (ফোরকাত আল-শামালি) , নুরুদ্দিন আল জঙ্গি, সাউদার্ন ফ্রন্ট ও নর্দার্ন ফ্রন্ট।
বিভিন্ন সিরীয় উপদল গঠনে তুরস্কের ভূমিকা রয়েছে, যেমন ইউফ্রেটিস শিল্ড ফোর্সেস। তুরস্ক তাদের বিমান সমর্থন, আর্টিলারি ও অস্ত্রশস্ত্র দিচ্ছে। এ ছাড়া ইসলামিক স্টেট (আইএস) ও কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে)র বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তুর্কি বিশেষ বাহিনী তাদের সহায়তা দেয়।
সিরিয়ায় আইএস, তুর্কিস্তান ইসলামিক পার্টি, মধ্য এশিয়া ভিত্তিক ইমাম বুখারি ব্যাটালিয়ন ও পিকেকে-র সিরিয়া শাখা ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়ন পার্টির সাথে জাবহাত আল-শাম নামে পরিচিত আল-নুসরা ফ্রন্টও লড়াই করছে।

বহুপক্ষের নিয়ন্ত্রণে বিভক্ত সিরিয়া
মিডল ইস্ট মনিটর : সিরিয়ায় সরকার এবং বিরোধীদের মধ্যে প্রতিদিন সংঘর্ষ চলার কারণে যুদ্ধ বিধ্বস্ত এ দেশটিতে কোন এলাকা কার নিয়ন্ত্রণে তা বলা কঠিন। এলাকার নিয়ন্ত্রণে প্রতিনিয়তই পরিবর্তন ঘটছে।
২০১১ সালে সিরিয়ায় যখন গণঅভ্যুত্থান শুরু হয় তখন গোটা দেশই প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন ছিল। কিন্তু দিন যাওয়ার সাথে সাথে ফ্রি সিরিয়ান আর্মি (এফ এস এ) আলেপ্পোসহ কিছু শহর দখল করতে শুরু করে।
গণঅভ্যুত্থান অচিরেই পরিণত হয় রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধে। কয়েক বছরের মধ্যে আসাদের সেনাবাহিনী দুর্বল হয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে লেবানন ও ইরাকের শিয়া যোদ্ধারা এ লড়াইয়ে যুক্ত হয়, সে সাথে ইরান ও হেজবুল্লাহ আসাদকে আর্থিক ও সামরিক সমর্থন দিতে থাকে। এ সব ঘটনা সিরিয়ার বিরোধীদের একটি জোটে ঐক্যবদ্ধ হতে সাহায্য করে।
এর কিছুদিন পর আসাদ বেশ কয়েকটি সিরীয় শহরের নিয়ন্ত্রণ হারাতে শুরু করেন। তার শাসনের পতন ঘটতে চালেছে বলে জল্পনা-কল্পনা ছড়িয়ে পড়ে।
২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে রাশিয়া সিরিয়ায় সামরিক হস্তক্ষেপের কথা ঘোষণা করে। রুশ জঙ্গি বিমান সরকার বিরোধীদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বোমাবর্ষণ শুরু করে। সিরিয়ার যুদ্ধে রাশিয়া সাদা ফসফরাস অস্ত্র, ক্লোরিন, মাস্টার্ড, সারিন গ্যাস এবং ক্লাস্টার বোমা, ড্রাম বোমা, মাইন ও ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে।
বেসামরিক জনগণের উপর নির্মম বোমাবর্ষণ ও সামরিক হামলার পর আসাদের মিত্র বহুজাতিক বাহিনী সিরিয়ার উপকূলে কিছু এলাকায় অগ্রগতি লাভ করে এবং আলেপ্পোর মুক্ত পূর্বাংশ ও ঘুটা তাদের নিয়ন্ত্রণে আসে।
নিয়ন্ত্রণে কে?
সিরিয়ার রাজনৈতিক বিশ্লেষক আহমেদ আল-মাসালমার মতে, ভৌগোলিক ভাবে সিরিয়া এখন কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। বহুপক্ষ নিয়ন্ত্রণ করছে সিরিয়াকে। প্রেসিডেন্ট আসাদের বাহিনী যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটির ২০ শতাংশেরও কম এলাকা এবং হেজবুল্লাহসহ ইরানি বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করছে ৭ শতাংশের মত এলাকা। এফ এস এ-র নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ৩০ শতাংশ এলাকা, রাশিয়া ২ শতাংশের কম, কুর্দিরা ২০ শতাংশ ও বাকি এলাকা দায়েশ নিয়ন্ত্রণ করছে।
আল-মাসালমা বলেন, সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে সরকার বিরোধীরা দারা ও তার গ্রামাঞ্চল, কুনেইত্রা প্রদেশ ও তার উপকন্ঠ এলাকাসহ ৭০ শতাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে। দারার গ্রামাঞ্চলের পূর্ব, পশ্চিম, উত্তরপশ্চিম ও উত্তরপূর্ব এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে এফ এস এ।
আন্তর্জাতিক বাহিনী
আল-মাসালমার ব্যাখ্যা যে যুক্তরাষ্ট্র কুর্দি নিয়ন্ত্রিত আল হাসাকাহর একটি সামরিক ঘাঁটি ব্যবহার করছে। সিরিয়া-ইরাক সীমান্তে আল-তানফ সীমান্ত ফাঁড়ির কাছে তাদের একটি ঘাঁটি আছে।
বেসামরিক জনগণের ক্ষয়ক্ষতি উপেক্ষা করে সিরিয়ায় লড়াইরত বেশ কিছু দেশ ও সামরিক গ্রæপ আরো প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণ বিস্তার করতে চাইছে। ইরানি বিপ্লবী রক্ষী কোর (আইআরজিসি) , কুদস বাহিনী, লেবাননের হেজবুল্লাহ, ইরাকি শিয়া গ্রæপ নাজবা, কাতাইব আল-ইমাম আলী ও , ইরাকি হেজবুল্লাহ, ইরাকি শিয়া, আফগান ফাতেমিয়ুন, পাকিস্তানি জয়নাবুন, ফিলিস্তিনি জেরুজালেম ব্রিগেড এবং পপুলার ফ্রন্ট ফর দি লিবারেশন অব ফিলিস্তিন আসাদ সরকারের সমর্থনে লড়াই করছে।
বেশ কয়েকটি সশস্ত্র বিপ্লবী ব্যাটালিয়নও সেখানে লড়াই করছে। যেমন এফ এস এ ব্যাটালিয়ন, আহরার আল-শাম, সুকুর আল-শাম ব্রিগেড, জয়শ আল-ইসলাম, নর্দার্ন ডিভিশন (ফোরকাত আল-শামালি) , নুরুদ্দিন আল জঙ্গি, সাউদার্ন ফ্রন্ট ও নর্দার্ন ফ্রন্ট।
বিভিন্ন সিরীয় উপদল গঠনে তুরস্কের ভূমিকা রয়েছে, যেমন ইউফ্রেটিস শিল্ড ফোর্সেস। তুরস্ক তাদের বিমান সমর্থন, আর্টিলারি ও অস্ত্রশস্ত্র দিচ্ছে। এ ছাড়া ইসলামিক স্টেট (আইএস) ও কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে)র বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তুর্কি বিশেষ বাহিনী তাদের সহায়তা দেয়।
সিরিয়ায় আইএস, তুর্কিস্তান ইসলামিক পার্টি, মধ্য এশিয়া ভিত্তিক ইমাম বুখারি ব্যাটালিয়ন ও পিকেকে-র সিরিয়া শাখা ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়ন পার্টির সাথে জাবহাত আল-শাম নামে পরিচিত আল-নুসরা ফ্রন্টও লড়াই করছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সিরিয়া

১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ