নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস রিপোর্টার : ২০১২ সালে বল মাথায় রেখে হেঁটে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে গড়েছিলেন বিশ্ব রেকর্ড। এর ৪ বছর পর বল মাথায় রোলার স্কেটিং পায়ে দ্রæততম সময়ে (২৭.৬৬ সেকেন্ড) ১০০ মিটার অতিক্রম করে গড়ে নতুন আরেকটি রেকর্ড। এবার বল মাথায় নিয়ে সাইকেল চালিয়ে সবচেয়ে বেশি দূরত্ব অতিক্রম করার রেকর্ড গড়লেন বাংলাদেশের এই খ্যাতিমান ফুটবল প্রদর্শক!
চলতি বছরের জুন মাসের ৮ তারিখ শেখ রাসেল রোলার স্কেটিং কমপ্লেক্সে বল মাথায় নিয়ে সাইকেল চালিয়ে ১৩.৭৪ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করে নতুন এই রেকর্ড গড়ার প্রচেষ্টা চালান হালিম। সেদিন সকাল ১১.৫৩ মিনিটে তিনি বল মাথায় নিয়ে সাইকেল চালানো শুরু করেন। প্রবল বাতাসের ঝাপটায় দুপুর ১টা ১২ মিনিটে তার মাথা থেকে বল পড়ে যায়। ততক্ষণে ৯১ ল্যাপে ১৩.৭৪ কিলোমিটার অতিক্রম করে ফেলেন তিনি। সৃষ্টি হয় নতুন এক রেকর্ডের।
২০১৬ সালে এই রেকর্ড গড়ার জন্য হালিম যখন গিনেস বুক কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেন তখন তারা কমপক্ষে ৫ কিলোমিটার অতিক্রম করার সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছিল। তাদের বেধে দেওয়া সেই সীমা ১ ঘণ্টা ১৯ মিনিটে অতিক্রম করে হালিম ১৩.৭৪ কিলোমিটার পাড়ি দিয়েছেন। একটি ক্যামেরা দিয়ে তার পুরো সময়ের ভিডিও ধারণ করা হয়েছিল। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে তার রেকর্ড গড়ার প্রচেষ্টার পুরো ভিডিও, স্থিরচিত্র এবং এ নিয়ে ইলেক্ট্রোনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদের প্রমাণাদি গিনেস বুক কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়া হয়। সেটি বিচার-বিশ্লেষণ করে গতপরশু বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টায় মাগুরার এই কৃতি সন্তানের নতুন রেকর্ডের স্বীকৃতি দেয় গিনেস বুক কর্তৃপক্ষ।
তিনটি রেকর্ড গড়ার ক্ষেত্রেই তাকে পৃষ্ঠপোষকতা করেছিল দেশের শীর্ষস্থানীয় ইলেকট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিকস, অটোমোবাইলস, হোম অ্যাপ্লায়েন্স ও টেলিকমিউনিকেশন পণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন। রেকর্ডের স্বীকৃতি পেয়ে আব্দুল হালিম যারপরনাই খুশি ও কৃতজ্ঞ, ‘আসলে অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। আবেগে আমার কান্না আসতেছে। এটা আমার তৃতীয় রেকর্ড। এই রেকর্ড গড়ার ক্ষেত্রে প্রথমেই আমি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাব ওয়ালটন গ্রæপকে। তারা পৃষ্ঠপোষকতা না করলে হয়তো সবকিছু এত দ্রæত হত না। ধন্যবাদ জানাচ্ছি ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীকে। সবার সহযোগিতা পেলে ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতে দেশবাসীকে আরো রেকর্ড উপহার দেওয়ার চেষ্টা করব। আমার আরো দুটি রেকর্ড প্রক্রিয়াধীন আছে।’
নতুন রেকর্ড হওয়ায় আব্দুল হালিমকে অভিনন্দন জানিয়ে ওয়ালটন গ্রæপের অপারেটিভ ডিরেক্টর (হেড অব স্পোর্টস এন্ড ওয়েলফেয়ার) এফএম ইকবাল বিন আনোয়ার (ডন) বলেন, ‘এর আগেও ওয়ালটনের পৃষ্ঠপোষকতায় আব্দুল হালিম দুটি গিনেস রেকর্ড গড়েছে। তিনি আরো একটি রেকর্ডের স্বীকৃতি পেলেন। তাকে অভিনন্দন ও সাধুবাদ জানাই। হালিমের মতো আরো কয়েকজনকে নিয়ে রেকর্ড গড়ার চেষ্টা করছি। আমরা চাই দেশের ট্যালেন্টগুলো এভাবে বেরিয়ে আসুক। তাদের মাধ্যমে আমরা আমাদের দেশকে প্রমোট করতে চাই।’
‘উত্তাপের’ ম্যাচে গোলশূন্য ড্র!
স্পোর্টস রিপোর্টার : আগের রাত থেকেই টানা বৃষ্টি। বর্ষণে স্বভাবতই ঠান্ডা মেজাজে থাকবার কথা প্রকৃতির। তবে মাঠের লড়াইয়ে যেন উল্টো উত্তাপ ছেয়ে গেল ঢাকা আবাহনী ও টিম বিজেএমসি ফুটবলারদের মধ্যে। বল দখলের লড়াই ছাপিয়ে যেন শারীরিক শক্তি প্রদর্শণেই বেশি ব্যস্ত ছিলেন দুই দলের খেলোয়াড়রা। কখনো রেফারির সিদ্ধান্ত মানতে না পেরে ডাগ আউটে উঠে এসেছেন ফুটবলাররা, তো কখনো বা ঝাপিয়ে পড়েছেন প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়ের ঘাড়ে। ঘটেছে হাতাহাতির মতো ঘটানাও! সব মিলিয়ে গতকাল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম সাক্ষি হয়েছে এক উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচের। কিন্তু সব কিছু থাকলেও ছিলো না আসল জিনিসটা- গোল। আবাহনী-বিজেএমসি লড়াইটা শেষ হয়েছে গোলশূণ্যভাবে (০-০)। ফলে মাত্র এক পয়েন্ট সংগ্রহ করে তৃতীয় (৭ পয়েন্ট) অবস্থানে উঠে এসেছে লিগ চ্যাম্পিয়নরা। অপরদিকে ২ পয়েন্ট নিয়ে নিজেদের দশম স্থানেই থাকলো বিজেএমসি।
ম্যাচের ৩ মিনিটের মাথায় দারুণ একটা সুযোগ হাতছাড়া হয় ঢাকা আবাহনীর। মিডফিল্ডার ইমন মাহমুদের শট গোলরক্ষকের হাতে লেগে পরবর্তিতে ক্রসপিচে লেগে ফেরত আসে। ৬ষ্ঠ মিনিটে বা প্রান্ত থেকে ওয়ালীর ক্রস সাদ উদ্দিন বক্সে বাড়িয়ে দেন সামনে। এমেকা বল পেয়ে শট নিলেও বিপদমুক্ত করেছে বিজেএমসির রক্ষণ। নবম মিনিটে সুযোগ এসেছিলো বিজেএমসিরও। বক্সে বল পেয়ে কোনকোনি শট নিয়েছিলেন ফরোয়ার্ড পাশবন মোল্লা। বল চলে যায় বারের উপর দিয়ে। ১৫তম মিনিটে ডান প্রান্ত দিয়ে দ্রæত গতিতে বল নিয়ে ঢুকে পড়েছিলেন বিজেএমসির ইয়োকো স্যামনিক। কিন্তু তাকে পেছন থেকে টেনে ধরেন ওয়ালী ফয়সাল। ফ্রি কিক পেয়েও সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন স্যামনিক। ২৭তম মিনিটে বিজেএমসির বক্সে জোড়ালো হেড নিয়েছিলেন ডিফেন্ডার নাসির উদ্দিন। তবে এবারও লক্ষভ্রষ্ট।
৩৫ মিনিটে আবারো উত্তপ্ত হয়ে উঠে ম্যাচ। নিজেদের বক্সে বাক বিতন্ডার একপর্যায়ে বিজেএমসির বাইবেককে ঘারে ঘুসি মারেন এমেকা ডালিংটন। রেফারী দু’জনকেই হলুদ কার্ড দেখান। ল্যান্ডিংয়ের বাকানো ফ্রি কিক সাইডপোস্টে লেগে ফেরত আসে। ৩৯তম মিনিটে বাইবেকের অসাধারণ ফ্রি কিক দারুণ দক্ষতায় প্রতিহত করেন আবাহনীর গোলরক্ষক শহিদুল আলম। ৪১তম মিনিটে আবাহনীর রুবেল মিয়াকে বক্সে ফেলে দেন বিজেএমসির গোলরক্ষক সোহাগ হোসেন পলাশ। তবে পেনাল্টির দাবী করলেও রেফারী আবাহনীর পক্ষে বাশি বাজাননি। প্রথমার্ধ শেষ হবার ২ মিনিট আগে বিজেএমসির পাশবন মোল্লা বা প্রান্ত থেকে দারুণ এক ক্রস বাড়িয়ে দিলেও প্রায় ফাকা পোস্ট পেয়েও বল রিসিভ করতে পারেননি তার সতীর্থরা। শেষ মিনিটে মিনিটে অবশ্য ঢাকা আবাহনীর জালে একবার বল পাঠায় বিজেএমসি। চমৎকার সেন্টার করেন ইয়োকো স্যামনিক। ফরোয়ার্ড মেহদি হাসান রয়েল জোড়ালো শটে লক্ষ্যভেদ করলেও অফসাইডের ফাদে কাটা পড়ে বিজেএমসির গোলটি। প্রথমার্ধ গোলশূণ্য থেকেই বিশ্রামে যায় দু’দল।
৫৪ মিনিটে বক্সের ডান প্রান্ত থেকে ইমন মাহমুদের শট ফিরিয়ে দেন বিজেএমসির গোলরক্ষক। ফিরতি বলে বা প্রান্ত থেকে ওয়ালী ফয়সালের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৬১ মিনিটে বল নিয়ে বক্সের কোনায় চলে যান পাশবন। তাকে বাধা দিতে যান ওয়ালী ফয়সাল। রীতিমতো জার্সি ধরে টানাটানিই করতে থাকেন অভিজ্ঞ এই ডিফেন্ডার। রেফারী ফ্রি কিকের নির্দেশ দেন। তবে হলুদ কার্ড দেখাননি। সৌভাগ্য ওয়ালীর। কেননা এই ম্যাচে আগেই একটা হলুদ কার্ড দেখেছেন এই খেলোয়াড়। ৬৮ মিনিটে সুবিধাজনক অবস্থানে ফ্রি কিক পেয়েও সুযোগ হাতছাড়া করেন আবাহনীর ল্যান্ডিং। ম্যাচ শেষ হয় গোলশূণ্য ড্র’তে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।