Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

প্রতিদিনই গোর্খা আন্দোলন মারমুখী রূপ নিচ্ছে

ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ৭৫তম বর্ষপূর্তিতে চলছে তেরঙ্গা যাত্রা কর্মসূচি

| প্রকাশের সময় : ১২ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম


ইনকিলাব ডেস্ক : ব্রিটিশবিরোধী ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ৭৫তম বর্ষপূর্তিতে ভারত সরকার পালন করছে তেরঙ্গা যাত্রা কর্মসূচি। তবে দার্জিলিং পাহাড়ে এই কর্মসূচি এবার ভিন্নভাবে পালন করছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। মোর্চা নেতা বিমল গুরুং বলেছেন, তেরঙ্গা যাত্রায় শামিল হব আমরা। পাহাড়, তরাই ও ডুয়ার্সে তেরঙ্গা যাত্রা করব। তবে আমাদের প্রধান শ্লোগান হবে বাংলা (পশ্চিমবঙ্গ) তুমি পাহাড় ছাড়ো। সেইসঙ্গে জয় গোর্খা, জয় গোর্খাল্যান্ড ধ্বনিতে মুখরিত হবে পাহাড় থেকে সমতল। তিনি আরো বলেন, ব্রিটিশ সরকার যেমন ভারতবাসীকে ক্রীতদাস করে রেখেছিল, মানুষ স্বাধীনভাবে চলতে-ফিরতে পারত না, এখন বাংলার সরকারও আমাদের কোনো স্বাধীনতা দিচ্ছে না। তাই আমাদের এই আন্দোলন। উল্লেখ্য, ৯ থেকে ১৫ আগস্ট এ কর্মসূচি পালন করা হয়। দার্জিলিং পরিস্থিতিকে যে কখনো অখÐ এক সামগ্রিকতায় ধরা হয়নি সেটাই আজ সবচেয়ে বড় হয়ে উঠেছে। তাই ‘নুন চা’ উপন্যাসের লেখক বিমল লামা এক নিবন্ধে বলেছেন, কোনো জনগোষ্ঠী যদি মনে করেন মৌলিক অধিকারগুলো থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছেন, তাকে গুরুত্ব দিয়ে বিচার করাটা একটা ঐতিহাসিক দায়িত্ব। দায়িত্ব দেশের সংবিধানের। যে রাষ্ট্রের তারা অধীন, সেই রাষ্ট্রের কোনো প্রাদেশিক সরকারের অংশ হলে, সেই সরকারেরও। কিন্তু এখনো পর্যন্ত বাংলা ভাগের ষড়যন্ত্র হিসেবেই গোটা আন্দোলনকে দেখার ফলে ক্রমশ এই আন্দোলন জাতি বিদ্বেষের দিকে চলেছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকদের একাংশ। অবশ্য এই সম্ভাবনার কথা অনেক আগেই বলে গিয়েছেন অনেকে। এদিকে আলাদা গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের দাবিতে মোর্চার ডাকে দুই মাসের বেশি সময় ধরে চলছে অনির্দিষ্টকালের বন্ধ। চলছে অনশন আন্দোলনও। পৃথক গোর্খা রাজ্যের আন্দোলনকারীরা তাদের আন্দোলনের এলাকাকে প্রসারিত করেছে ডুয়ার্স ও তরাইয়ে। প্রতিদিনই গোর্খা আন্দোলন মারমুখী রূপ নিচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিকবার হিংসা ছেড়ে আলোচনায় বসার আহŸান জানালেও গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনের নেতারা রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসার ব্যাপারে আদৌ আগ্রহী নয়। কারণ, তারা শুধুমাত্র গোর্খাল্যান্ড নিয়েই আলোচনা চাইছে। আর তাই ভারত সরকারকে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল আলোচনার জন্য। কিন্তু সেই সময়সীমা ৮ আগস্ট পেরিয়ে গেলেও ভারত সরকারের কাছ থেকে কোনো বার্তা আসেনি। দার্জিলিং থেকে নির্বাচিত বিজেপির এমপি এস পে আলুওয়ালিয়াও এখন চুপ করে বসে রয়েছেন। ফলে গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে জোরদার আন্দোলনের পথে যাওয়া ছাড়া আন্দোলনকারীদের সামনে কোনো পথ নেই। এর ফলে আরো অশান্ত হয়ে উঠছে দার্জিলিং। রাজ্য প্রশাসনও আলাদা রাজ্যের দাবিতে অন্দোলনকারীদের শায়েস্তা করতে সমতলে আন্দোলনের প্রভাব যাতে না পড়তে পারে সেজন্য তৈরি হয়ে রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্কুলে বাংলা পড়া বাধ্যতামূলক করার ঘোষণা থেকেই দার্জিলিং পাহড়ে আশান্তির আগুন জ্বললেও এখন এই আন্দোলন আলাদা রাজ্যের দাবিতে সংঘবদ্ধ আকার নিয়েছে। বিমল গুরুংয়ের নেতৃত্ব নিয়ে অনেকের আপত্তি থাকলেও পাহাড়ের বিভিন্ন দল মিলে তৈরি করেছে গোর্খাল্যান্ড আন্দোলন সমন্বয় কমিটি। এই কমিটিতে সমস্ত বিবাদ আপাতত দূরে সরিয়ে রেখে গোর্খা জাতীয় মুক্তি মোর্চা জিএনএলএফ যেমন যোগ দিয়েছে তেমনি যোগ দিয়েছে অন্যান্য দলও। এই আন্দোলনের সমর্থনে দেশের নানা প্রান্তে যেমন আন্দোলন সংগঠিত হচ্ছে বিদেশেও এর সমর্থনে মানুষ সমবেত হচ্ছেন। ’ সাউথ এশিয়ান মনিটর।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ