Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আত্মরক্ষায় কারাতে

| প্রকাশের সময় : ১১ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম


মো: আলতাফ হোসেন : প্রাচীনতম মার্শাল আর্ট তথা খালি হাতে আত্মরক্ষার কৌশলগুলোর মধ্যে কারাতে অন্যতম একটি শিল্প। কারাতে শিক্ষার মাধ্যমে আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠা যায়। বর্তমানে কারাতেসহ বিভিন্ন খেলার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে শিশু-কিশোররা। প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে শিশু-কিশোরদের আরো যোগ্য প্রতিযোগি হিসেবে গড়ে তোলার দিকেই নজর দিচ্ছেন অভিভাবকরা। খেলাধুলার পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় বা মাঠের স্বম্পতার কারণে এবং কম্পিউটার গেমস বিনোদনের একমাত্র মাধ্যম হয়ে উঠেছে বর্তমানে। ফলে মেধায় শানিত হলেও খেলাধুলার অভাবে শারীরিকভাবে অপরিশ্রমী হয়ে উঠছে শিশু-কিশোর তথা তরুণ সমাজ। কারাতে- এটা মূলত সেলফ ডিফেন্স বা আত্মরক্ষার কৌশল। ক্রীড়ার পাশাপাশি বর্তমানে কারাতে খালি হাতে জীবন রক্ষার একমাত্র কৌশল হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। কারাতে প্রশিক্ষণ নিলে অপরাধমূলক চিন্তা চেতনা থেকে দূরে থাকা যায়। প্রিয় পাঠক-পাঠিকা ‘আত্মরক্ষায় কারাতে’ ধারাবাহিক প্রতিবেদনের ১৮তম পর্বে আজ আমরা শিখবো ‘নাই কুকু’।
নাই কুকু....
‘নাই কুকু’ প্রশিক্ষণের পূর্বে ওয়ার্মআপ এবং ব্যায়াম করে নিলে ভালো হয়। কারাতে প্রশিক্ষণের জন্য ওয়ার্মআপ ও ব্যায়াম অত্যন্ত জরুরি। প্রশিক্ষণ শুরু করার পূর্বে সালম বা বো করে কিবাডাসী পজিশনে যেতে হবে শিক্ষার্থীকে। এরপর কিবাডাসী থেকে ডান পা বাম পায়ে স্পর্শ করে পেছনে চলে যাবে সোজা অবস্থায় এবং বাম পা হাটু ভাঙ্গা অবস্থায় থাকবে এবং বাম হাত থাকবে একটু বাকা অবস্থায় আর ডান হাত মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায় ডান কোমড়ে থাকবে। প্রতিটি মারই হোইস শব্দ করে মারতে হয়। এখন তিন স্টেপ সামনে যেতে হবে। একবার ডান হাতে একবার বাম হাতে মাথার উপরে সোডনসখী মারতে হবে। এখানে উল্লেখ্য গত পর্বে ‘তাই কুকু’-তে আমরা করেছিলাম সোডনসখী বুক বরাবর সোজা আর ‘নাই কুকু’ একটু উপরে সোডনসখী অর্থাৎ সিঙ্গেল পাঞ্চ করতে হবে। আর বাকি সব আগের মতোই । প্রথমে ডান হাতে সিঙ্গেল পাঞ্জ বা সোডনসখী একটু উপরে মারতে হবে, বাম হাত চলে যাবে বাম কোমড়ে। দ্বিতীয় বার এক স্টেপ সামনে বাম হাতে সোডনসখী একটু উপরে মারতে হবে। ডান হাত চলে যাবে মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায় ডান কোমড়ে। তৃতীয়বার ডান হাতে সোডনসখী মারতে হবে, বাম হাত মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায় বাম কোমড়ে চলে যাবে। প্রতিটি স্টেপেই হোইস শব্দের মাধ্যমে মারতে হবে। এবার ডান হাত সামনে বাম হাত কোমড়ে এবং ডান হাটু ভাঙ্গা অবস্থায় থাকবে এবং বাম পা সোজা ডান পায়ের সোজা বরাবর থাকবে। এরপর বাম দিকে ঘুরে বাম হাটু ভাঙ্গা অবস্থায় থাকবে এবং বাম হাত বøক অবস্থায় অর্থাৎ ডান হাত মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায় ডান কোমড়ে থাকবে। এরপর এক স্টেপ সামনে যেয়ে ডান হাতে একটু উপরে সোডনসখী মারতে হবে এবং বাম হাত চলে যাবে বাম কোমড়ে মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায় । পরবর্তীতে ডান দিকে ঘুরে ডান হাত ডান হাটুর উপরে বøক অবস্থায় অর্থাৎ একটু বাঁকা অবস্থায় থাকবে। এরপর এক স্টেপ সামনে যেতে হবে। বাম পা থাকবে হাটু ভাঙ্গা অবস্থায় এবং বাম হাত সেই হাটুর উপর বøক অবস্থায় একটু বাকা থাকবে মুষ্টিবদ্ধ হয়ে। পরে বাম দিকে ঘুরে বাম হাটুর উপরে বাম হাত থাকবে ভাঙ্গা অবস্থায় আর ডান পা বাম পায়ের বরাবর সোজা থাকবে। একই কায়দায় আবার তিন স্টেপ উল্টো যেতে হবে এবং হাত ও পায়ের পজিশন ঠিক আগের মতোই থাকবে। উভয় পাশে ডানে বামে হাত ও পায়ের পজিশন ঠিক রেখে একই কায়দায় ঘুরে পজিশন থেকে অর্থাৎ কিবাডাসী থাকা অবস্থায় যেখান থেকে শুরু করা হয়েছিল সেখানেই আবার কিবাডাসী অবস্থায় শেষ হবে। শিক্ষার্থীকে মনে রাখতে হবে ‘নাই কুকু’ মারার সময় কিংবা ঘুরার সময় অর্থাৎ তিন স্টেপ সামনের দিকে এবং তিন স্টেপ উল্টো দিকে ঘুরা এবং ডান ও বাম দিকে টার্নিংয়ের সময় হোইস শব্দের মাধ্যমে এই ‘নাই কুকু’ মারতে হবে। সেই সঙ্গে হাত ও পায়ের পজিশন ঠিক থাকতে হবে। তা না হলে ‘নাই কুকু’ আর্টফুল হবে না । মনে রাখতে হবে হাত ও পায়ের অবস্থা যেন ঠিক থাকে। তিন স্টেপ সামনে যাওয়া ও তিন স্টেপ উল্টো দিকে আশা এবং ডানে বায়ে টার্নিং নেয়ার সময় হাত ও পায়ের সমন্বয় থাকতে হবে। ‘নাই কুকু’ কিবাডাসী পজিশন থেকে অর্থাৎ যেখান থেকে শুরু করা হবে আবার সেখানেই কিবাডাসী অবস্থায় শেষ হবে।
লেখক : সাবেক জাতীয় ক্রীড়াবিদ, কারাতে কোচ ও চেয়ারম্যান, মানিকগঞ্জ গ্রীণ ক্লাব



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ