পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : ভারতের অর্থনৈতিক কার্যক্রম ও কর্মসংস্থানে নির্মাণ শিল্পের বড় অবদান রয়েছে। সরকারের হিসাব অনুযায়ী, ভারতের নির্মাণ খাতের আকার বেড়ে ১৪ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছেছে। ২০১৩ সালে যা ছিল ৭ হাজার ৮০০ কোটি ডলার। অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে, বিগত চার বছরে ভারতের নির্মাণ খাত ৮০ শতাংশ স¤প্রসারিত হয়েছে। কিন্তু প্রদীপের নিচে অন্ধকারের মতোই ভারতের নির্মাণ খাতের উত্থানের পেছনে রয়েছে হাজারো শ্রমিকের আহাজারি। বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করা হলেও এ খাতের শ্রমিকরাই সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। প্রতি বছরই শত শত নারী-পুরুষ শ্রমিক প্রাণ হারান। অনেকেই আবার বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে অথবা ইট-পাথরের আঘাতে পঙ্গুত্ব বরণ করে অসহায় দিন যাপন করছেন। বলা হচ্ছে, নির্মাণ শিল্পে শ্রমিকদের হতাহতের হালনাগাদ রেকর্ড রাখতে সরকারের উদাসীনতাই এ খাতকে আরো বেশি নিরাপত্তাহীন করে তুলেছে। ২০১৫ সালের ১৬ মার্চ লোকসভার অধিবেশনে এ বিষয়ে একমাত্র সরকারি তথ্য উপস্থাপন করা হয়। সেখানে দেখা গেছে, ২০১২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত মাত্র ৭৭ জন শ্রমিক নির্মাণ খাতে প্রাণ হারিয়েছেন।
তবে গত পাঁচ মাস ধরে এনডিটিভির এক অনুসন্ধানে ভারতীয় নির্মাণ খাতের ভয়াবহ চিত্র প্রকাশিত হয়েছে। ২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ১৭টি রাজ্যে নির্মাণ শ্রমিকদের মৃত্যু ও আঘাত সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরি করেছে এনডিটিভি। অনুসন্ধানী প্রতিবেদনটি তৈরিতে রাইট টু ইনফরমেশনের (আরটিআই) কাছে তথ্য চেয়েছিল এনডিটিভি। আরটিআইয়ের দেয়া তথ্যে দেখা গেছে, নির্ধারিত সময়ে মোট ৪৫২ জন নির্মাণ শ্রমিক কর্মক্ষেত্রে প্রাণ হারিয়েছেন; আর আহত হয়েছেন ২১২ জন। দেখা যাচ্ছে, লোকসভায় যে পরিমাণ শ্রমিকের মৃত্যুর কথা বলা হয়েছিল, বাস্তবিক অর্থে তার চেয়ে ছয় গুণ বেশি প্রাণহানি হয়েছে। ভারতের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোর পুলিশ ডিপার্টমেন্টের কাছেও একই সময়ে নির্মাণ খাতের অবস্থা নিয়ে তথ্য জানতে চেয়েছিল এনডিটিভি। তাদের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে মুম্বাই ও থানের পুলিশ ডিপার্টমেন্ট তথ্য পাঠিয়েছে। এছাড়া নির্মাণ শ্রমিকদের হতাহত নিয়ে এনজিওগুলোর দেয়া তথ্যও ব্যবহার করেছে তারা। আরটিআইয়ের দেয়া তথ্যের সঙ্গে এসব তথ্যের বিস্তর ফারাক লক্ষ্য করা গেছে। দেখা গেছে, ২০১৩ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে ভারতের নির্মাণ খাতে ১ হাজার ৯২ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে; আহত হয়েছে আরো ৩৭৭ জন শ্রমিক। আরটিআইয়ের দেয়া তথ্যানুযায়ী উল্লিখিত সময়ে মুম্বাইয়ে মাত্র ১২ জন নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। অথচ মুম্বাই পুলিশ কমিশনারের কার্যালয় থেকে পাঠানো তথ্যে এ সংখ্যা ২৩৫ জন। গুজরাটের ক্ষেত্রেও একই ধরনের পরিস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। এ দুটি উদাহরণের মাধ্যমে একটি বিষয় পরিষ্কার, সরকারি নথিতে নির্মাণ শ্রমিকদের মৃত্যুর সঠিক হিসাব সংরক্ষিত হয় না। ২০০৮ সাল থেকে নির্মাণ শ্রমিকদের মৃত্যুর তথ্য সংরক্ষণ করে আসছেন আহমেদাবাদের অ্যাক্টিভিস্ট বিপুল পন্ডিয়া। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, সঠিকভাবে জরিপ পরিচালনা করা হলে নির্মাণ শ্রমিকদের প্রকৃত মৃত্যুর হার আরো অনেক বেশি হবে। যখন একজন গার্মেন্ট শ্রমিক মারা যায়, তখন মামলা থেকে বাঁচতে তার পরিবারকে ৫০ হাজার বা লাখখানেক রুপি ধরিয়ে দেয়া হয়। তখন মৃত্যুর খবরটি ধামাচাপা পড়ে যায়। এসব বিষয়ে সঠিক তথ্য রাখার বাধ্যবাধকতা না থাকায় নির্মাণ-সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলো কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। এনডিটিভি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।