Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কুমিল্লায় ভেজাল বিরোধী অভিযান ‘কী খাওয়াচ্ছেন মানুষদের- এসব বন্ধ করুন’

প্রকাশের সময় : ১২ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : কুমিল্লার খাবার হোটেলগুলোর সামনের অবস্থা, ডেকোরেশন সবকিছুতেই চাকচিক্য থাকলেও যেখানে খাবার তৈরি হচ্ছে সেই পরিবেশ দেখলে যেকোন সুস্থ সচেতন মানুষ বলে উঠবেন ‘হোটেল-রেস্তোরাঁয় আমরা কী খাচ্ছি’। নোংরা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, বাবুর্চি ও রান্নার কাজে সহযোগীদের গা থেকে ঘাম ঝরে পড়ছে খাবারে, কাটাকুটি চলছে স্যাঁতস্যাঁতে মেঝেতে। উপরে ঝুলছে হোটেল স্টাফদের কাপড়চোপড়। সৌন্দর্যের বালাই নেই কোনকিছুতে। গতকাল শুক্রবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কুমিল্লা নগরীর কয়েকটি খাবার হোটেলে ভেজাল বিরোধী ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে গিয়ে রান্না ও পরিবেশন করার স্থানের এমন দৃশ্য ধরা পড়ে।
কুমিল্লা নগরীতে নামীদামী অসংখ্য খাবার হোটেল গড়ে উঠেছে। এসব হোটেলের মধ্যে ১০/১২টি ছাড়া বাকিগুলোর রান্নাঘরের অবস্থা দুর্গন্ধযুক্ত, নোংরা, অস্বাস্থ্যকর। রান্না করার অংশে সাধারণত গ্রাহকদের প্রবেশের কোন সুযোগ নেই। হোটেলের সামনের সাজসজ্জা করা অংশে খাবার খেয়ে বিল পরিশোধ করে বেরিয়ে পড়েন গ্রাহকরা। কিন্তু কোন গ্রাহক যদি এসব হোটেলের রান্নাঘরের পরিবেশ দেখতেন তাহলে কেউই খাবার মুখে তুলতেন না।
গতকাল নগরীর হোটেল রেস্তোরাঁয় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান দেখে সাধারণ সচেতন মানুষ বলে উঠলেন এসব হোটেল মালিকরা নিঃসন্দেহে অমানুষ। কারণ তারা মানুষকে ভেজাল খাওয়ায়। এদিকে এসব হোটেলের রান্না করার অংশ ও ভেতরের পরিবেশনের অবস্থা দেখে আঁতকে উঠলেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও কুমিল্লা সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) রূপালী মন্ডল। হোটেলের মালিক, ম্যানেজারদের তিনি বললেন ‘কী খাওয়াচ্ছেন মানুষদের। দিনের পর দিন এসব অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি খাবার ভোক্তাদের খাইয়ে অসুস্থ করে তুলছেন। এভাবে খাবার খাইয়ে মানুষের পকেটের টাকা নিয়ে তাদেরকেই অসুস্থ বানানোর কাজ তো কোন বিবেকবান মানুষ করতে পারে না।’
নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট রূপালী মন্ডলের কড়া সত্য কথাগুলোর উত্তর জানা নেই ওইসব খাবার হোটেল মালিকদের। তবে মালিকরা জরিমানার টাকা দিয়ে নতস্বরে অঙ্গীকার করে বললেন-‘ভবিষ্যতে আমরা ভালো হয়ে যাবো। স্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি করবো। এবারের মতো ক্ষমা করে দেন’।
কুমিল্লা নগরীর চকবাজারের হোটেল এরাবিয়ান, হামজা হোটেল, গর্জনখোলার আহম্মদিয়া হোটেল, চকবাজার বাসস্ট্যান্ডের হোটেল খাওয়া-দাওয়া, রাজগঞ্জের হোটেল রাজমনিতে ভেজাল বিরোধী অভিযান চালান নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট রূপালী মন্ডল। তিনি হোটেলগুলোর রান্না ও পরিবেশনের স্থান চরম অস্বাস্থ্যকর হওয়ায় এসব হোটেলকে ১২ হাজার টাকা জরিমানা (অর্থদÐ) করেন। এছাড়াও রাজগঞ্জের একটি আবাসিক হোটেল পরিচালনায় সরকারি নিবন্ধন না থাকায় ৫ হাজার টাকা এবং জনবহুল স্থানে প্রকাশ্যে ধূমপান করায় প্রদীপ সাহা নামে এক ব্যক্তিকে ৩শ’ টাকা জরিমানা করা হয়। নগরীর সচেতন লোকজন জানান, হোটেল রেস্তোরাঁগুলোতে ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালনা অব্যাহত থাকলে অনেক পরিবর্তন আসবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কুমিল্লায় ভেজাল বিরোধী অভিযান ‘কী খাওয়াচ্ছেন মানুষদের- এসব বন্ধ করুন’
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ