Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিনা মামলায় বিনা ওয়ারেন্টে ৪ দিন আটকে রেখে নির্যাতন

| প্রকাশের সময় : ৮ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মাকে হত্যার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী আদায়ের অভিযোগে দারোগার বিরুদ্ধে মামলা
স্টাফ রিপোর্টার, নরসিংদী থেকে : বিনা মামলা বিনা ওয়ারেন্টে প্রীতম ভৌমিক নামে এক স্কুলছাত্রকে ৪দিন অবৈধভাবে আটকে রেখে শারীরিক, মানসিক নির্যাতন চালিয়ে স্বীকারোক্তি আদায়ে বাধ্য করার অভিযোগে নরসিংদী সদর মডেল থানার এসআই মো: মোস্তাক আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। প্রীতিম ভৌমিকের পিতা প্রদীপ ভৌমিক জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। প্রদীপ ভৌমিক জানিয়েছেন, তার ছেলে প্রীতমকে ইলেকট্রিক শক দিয়ে শরীরের জোড়ার জোড়ায় অমানবিকভাবে পিটিয়েছে। পুলিশের এই নির্যাতন প্রীতম ভৌমিক মারাত্মকভাবে অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে।
জানা গেছে, গত ৮ জুলাই সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর দেড়টার মধ্যে নরসিংদী শহরের মধ্যকান্দাপাড়া মহল্লার হরিপদ সাহার ৫তলা বিল্ডিং’র পঞ্চম তলায় দিপ্তী ভৌমিক নামে এক গৃহবধুকে গুপ্তঘাতকরা গলা কেটে হত্যা করে। ঘাতকরা তার বাসা থেকে ২৫ হাজার টাকা নিয়ে যায়। এসময় দিপ্তী ভৌমিকের ছেলে প্রীতম ভৌমিক শহরের সাটিরপাড়া কালিকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক-নির্বাচনী পরিক্ষা দিচ্ছিল। দুপুর আনুমানিক পৌনে ২টার দিকে ইংরেজী পরীক্ষা শেষে সে স্কুল থেকে বাড়ী ফিরে মাকে ডাকাডাকি করতে গিয়ে দেখে তার মাকে কে বা কারা গলা কেটে হত্যা করে ফেলে রেখে চলে গেছে। এব্যাপারে নিহত দিপ্তী ভৌমিকের মেয়ের জামাই নয়ন কুমার সাহা বাদী হয়ে নরসিংদী সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। কিন্তু দীর্ঘ ২৩ দিনেও পুলিশ ঘটনার কোন কুল কিনারা করতে পারেনি। এ অবস্থায় এ হত্যাকান্ড নিয়ে জাতীয় ও স্থানীয় পত্র পত্রিকায় বহু লেখালেখি হয়। ৩১ জুলাই রাত সাড়ে ৮ টায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোস্তাক আহমেদ মোবাইল ফোনে নিহত দিপ্তী ভৌমিকের ছেলে স্কুলছাত্র প্রীতম ভৌমিককে জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে থানায় ডেকে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তাকে আর বাড়ী ফিরতে দেয়নি। দীর্ঘ ৪ দিন আটকে রেখে তার উপর অমানুসিক নির্যাতন চালানো হয়। মামলার বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়েছে, তাকে মারপিট করা হয়েছে। দুই হাতের কব্জী, বাম হাতের আঙ্গুলে ইলিকট্রিক শক দিয়ে নিপীড়নমুলক কায়দায় তার উপর বর্বরোচিত নির্যাতন চালায়। এরপর প্রীতমকে ক্রস ফায়ারের ভয় দেখিয়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিতে বাধ্য করে। শুধু তাই নয় প্রীতমকে নির্যাতন করা অবস্থায় মামলার বাদী নয়ন সাহাকে ডেকে নিয়ে ক্রস ফায়ারের ভয় দেখানো হয়। বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ এই আরজির উপর শোনানী গ্রহণ করেন। মামলার আইনজীবী এড. মনিরুজ্জামান জানিয়েছেন, শোনানী শেষে বিজ্ঞ বিচারক নির্যাতনে আহত প্রীতম ভৌমিককে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা প্রদান এবং মামলার বাদী পক্ষের নিরাপত্তা বিধান এবং মামলার ঘটনা তদন্তের জন্য পুলিশ সুপারকে নির্দেশ প্রদান করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নির্যাতন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ