Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

পঞ্চাশ দিনে উৎপাদন কমেছে ৯০ শতাংশ

| প্রকাশের সময় : ৬ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : ভারতের হিমালয় পাদদেশের আদিবাসীদের আন্দোলনের কারণে দার্জিলিংয়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এর ফলে বিশ্বখ্যাত দার্জিলিংয়ের চা-শিল্প সঙ্কটের মুখোমুখি হচ্ছে। দার্জিলিংয়ের অপরূপ সুন্দর পাহাড়ি অঞ্চল জুড়ে প্রচুর পরিমাণে চা চাষ হয় বিশেষ করে জুন-আগস্ট মৌসুমে। আর এখানে উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাত হওয়ার পরে সাধারণত বছরে প্রায় আট মিলিয়ন কিলোগ্রাম চা বিক্রি হয়- যার বেশিরভাগ ইউরোপে যায়। কিন্তু এখন স্থানীয় গোর্খা যারা মূলত এই সকল চা বাগানে কাজ করে এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুখোমুখি অবস্থানের কারণে গত ৫০ দিনে উৎপাদন ৯০ শতাংশ কমেছে। পাহাড়ে অশান্তির জেরে ক্ষতিগ্রস্ত দার্জিলিয়ের চা শিল্পমহল আর্থিক সাহায্যের জন্য টি বোর্ডের দ্বারস্থ হয়েছিল। বোর্ড চেয়েছিল তার নির্দিষ্ট হিসেব। কিন্তু তারপর সপ্তাহ দুয়েক পেরিয়ে গেলেও সেই হিসেব কষতে গিয়ে কার্যত হিমসিম দশা তাদের। চা শিল্পের দাবি, এমন ঘটনা নজিরবিহীন। অনিশ্চয়তাও একচুলও কমেনি। ফলে প্রাথমিক ধাক্কাটা বোঝা গেলেও, তার প্রভাব কতটা সুদূরপ্রসারী তার সঠিক দিশার মূল্যায়ন করা সহজ নয়। পাহাড়ে আন্দোলন চলায় গত ৯ জুন থেকে সেখানকার ৮৭টি চা বাগান বন্ধ। তারা শুধু যে সেকেন্ড-ফ্লাশ চায়ের রফতানি বাজার হারিয়েছে তা নয়, এ বছর আর সেখানে চা তৈরির সম্ভাবনাই কার্যত নেই। দার্জিলিং টি অ্যাসোসিয়েশন (ডিটিএ) আগেই জানিয়েছিল, এত দিন বাগান বন্ধ থাকায় সেগুলো আগাছায় ভরেছে। চা গাছের পাতাও এত লম্বা হয়ে গেছে যে, তা না ছাঁটলে চা তৈরির উপযুক্ত পাতা গজাবে না। সব মিলিয়ে বহু বাগানেই উৎপাদন স্বাভাবিক হতে বছর তিনেক লাগতে পারে। ডিটিএ-র সেক্রেটারি জেনারেল কৌশিক বসু গত শুক্রবার বলেন, কোথাও কোথাও বছর তিনেকের থেকে বেশিও লাগতে পারে। এমন অবস্থা দার্জিলিংয়ে আগে কখনো না-হওয়ায় গোটা পরিস্থিতি চট করে বোঝা সম্ভব নয়। তা ছাড়া শুধু গাছ নয়, চা তৈরির জন্য সার্বিকভাবে আরো অনেক তথ্য জরুরি। সেগুলো যাচাই করে দেখা হচ্ছে। তাই কতটা আর্থিক সাহায্য প্রয়োজন তার মূল্যায়ন করতে সময় লাগছে। তাদের বক্তব্য, যতটা সম্ভব সার্বিকভাবে লোকসানের হিসেব কষে তবেই আর্থিক সাহায্যের প্রস্তাব দেয়া হবে। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, তা না-হলে কেন্দ্রের কাছে বারবার নতুন হিসেব দাখিল করে সাহায্য চাওয়া ঠিক নয়। সেকেন্ড-ফ্লাশ চায়ের প্রায় সবটাই রফতানি হয়। এ বার তা হয়নি। তবে কৌশিকবাবু জানান, আমদানিকারকরা নিয়মিত খোঁজ নিচ্ছেন, আগামী বছর ফের বিশ্ব বাজারে পৌঁছবে তো দার্জিলিং চা? যদিও পাহাড়ের এখনো যা অবস্থা, তাতে এর কী জবাব দেয়া হবে, তা বুঝতে পারছে না চা শিল্প। এই পরিস্থিতিতে সকলের একটাই ভরসা, ‘জিওগ্রাফিক্যাল আইডেন্টিটি’-র (জিআই) স্বীকৃতি, বছর কয়েক আগে যা পেয়েছিল দার্জিলিং চা। এর ফলে বিশ্বের কোথাও অন্য কোনো চা-কে বেআইনি ভাবে কেউ দার্জিলিং চা নাম দিয়ে বেচতে পারবে না। ফলে আপাতত বাজার হারালেও, আগামী দিনে ফের বিদেশের চা প্রেমীদের পেয়ালা ভরার সুযোগ তার থেকে যাচ্ছে। তাই সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, এই জিআই স্বীকৃতি না থাকলে আরো বড় প্রশ্ন চিহ্নের মুখে পড়ে যেত দার্জিলিং চায়ের ভবিষ্যৎ। এএফপি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ