Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নির্বাচনকে সামনে রেখে জোট গঠন গণতন্ত্রের সৌন্দর্য -ওবায়দুল কাদের

| প্রকাশের সময় : ৪ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও প্রধান বিরোধীদল বিএনপির বাইরে সম্ভাব্য তৃতীয় রাজনৈতিক জোট গঠনের আলোচনা-উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে আওয়ামী লীগ। দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জোট গঠনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে একে গণতন্ত্রের সৌন্দর্য হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর সোবহানবাগে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ড্যাফোডিল ইউনির্ভাসিটিতে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, এটা খুব ভালো, গণতন্ত্রের শত ফুল ফুটেছে। এটা তো ভালো; এটাকে আমি বলবো, গণতন্ত্রের শত ফুল ফোটা। এটা তো গণতন্ত্রের বিউটি। ওই বৈঠকে নেতিবাচক কিছু না দেখলেও এর পরিণতি দেখার অপেক্ষায় থাকার কথা জানান কাদের। তিনি বলেন, তারা তো ওখানে ষড়যন্ত্র করছে না, জোট করছে, তাতে অসুবিধা কি? তবে এ অ্যালায়েন্সটা কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেটিই দেখতে হবে। ওটা দেখতে হলে আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।
গত বুধবার রাতে বিকল্প ধারার সভাপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বারিধারার বাড়িতে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের বৈঠককে ‘গণতন্ত্রের সৌন্দর্য’ আখ্যা দিয়ে কাদের বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন জোট গঠনের উদ্যোগ ইতিবাচক। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের শত ফুল ফুটছে, ভালো তো ! এটাই গণতন্ত্রের বিউটি। জোট হবে, গ্রæপ হবে। এটা হতে থাক, অসুবিধা কি? নির্বাচনকে সামনে রেখে যা হচ্ছে তা ভালো দিক। তবে শেষ পর্যন্ত এ মেরুকরণ কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, তা দেখতে অপেক্ষা করতে হবে।
গত বুধবার রাতে বিএনপি দলীয় সাবেক প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক বি চৌধুরীর বারিধারার বাড়িতে বৈঠকে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও আওয়ামী লীগ ও বিএনপি জোটের বাইরে তৃতীয় জোট গড়ার উদ্যোগী ওই রাজনীতিকদের বৈঠকে সরকারের শরিক দল জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদেরও অংশ নেন।
বি চৌধুরীর বাড়ির ওই বৈঠকের প্রতিক্রিয়ায় ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আমি এটাকে বলবো গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। তবে এ মেরুকরণ কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, তা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনে আদর্শগত বিষয়টি মুখ্য নয়, এখানে অ্যালায়েন্সটা কৌশলগত; সময়ের প্রয়োজনে এবং নির্বাচনে জেতার জন্য আমি এটাকেই বলি গণতন্ত্রের বিউটি। তিনি বলেন, গ্রুপিং, অ্যালায়েন্স এগুলো হতে থাক। মেরুকরণ হচ্ছে, এটি নির্বাচনকে সামনে রেখে হচ্ছে। এটি একটি ভাল দিক।
এর আগে গত ১৩ জুলাই রাতে রবের উত্তরার বাসায় বি চৌধুরী, কাদের সিদ্দিকী, মান্না, সুব্রত চৌধুরীরা বৈঠক করতে চাইলে বাগড়া দিয়েছিল পুলিশ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, বাধা তো দেয়া হয়নি; অতি উৎসাহী কেউ করেছে কি না, আমি সেটি জানি না। এ ধরণের কোনো বাধা সরকার বা দলের পক্ষে নির্বাচনী কর্মকান্ডে কখনো দেয়া হয়নি।
গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলন করে এরশাদ একইসঙ্গে সরকার ও বিরোধী দলে থাকার ‘লজ্জ্বা’ ঘোঁচাতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। তিনি সরকার থেকে বের হতে প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি প্রার্থনা করেন।
এরশাদের নতুন ঘোষণায় আওয়ামী লীগ মোটেই চিন্তিত নয় তা স্পষ্ট করেই বললেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, তারা সরকারে না থাকতে চাইলে চলে যেতে পারেন। তারা স্বেচ্ছায় সরকারে এসেছেন, তারা যেতে চাইলে যাবেন। আমরা এমন কোনো সংকটে পড়িনি যে, তারা চলে গেলে আমাদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়বে।
কাদের আরও বলেন, এখন তো কোন মহাজোট নেই। ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে তাদের তিনজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী সরকারে আছেন। এরশাদ নিজেও তো প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত, পতাকাবাহী গাড়িতে তিনি যাচ্ছেন।
একই সঙ্গে এরশাদের জাতীয় পার্টি সরকারের অংশীদারিত্ব ছাড়বে বলে মনে করেন না কাদের। তিনি বলেন, আমার মনে হয় নাৃ, এমন কোনো ইশারা ইঙ্গিত পাইনি যে, তারা সরকার থেকে চলে যাবে। আমার তো মনে হচ্ছে না।
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের বিষয়ে আওয়ামী লীগের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে সরকার বা দলে কোনো আলোচনা এখনো হয়নি। তাহলে আমি কিভাবে প্রতিক্রিয়া দেব? আলোচনা হলে এরপর দেব।
মন্ত্রীসভা রদবদল কবে নাগাদ হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, এটা আগস্ট মাসে তো হচ্ছে না। তাই আমি দ্রুত কথাটা এখন বলতে পারি না।
ড্যফোডিল ইউনিভার্সিটি মিলনায়তনে মাদকবিরোধী সেমিনার ও আলোচনা সভায় রাজনীতিবিদদের বক্তব্যের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা পলিটিক্স করি, রাজনীতির নেগেটিভ ভাষনের মাধ্যমে নেগেটিভ দিক গুলো ফুটে উঠে। যার ফলে আজকে টিভি চ্যানেলগুলোতে বিনোদনের বিষয়গুলো সবার পছন্দের বিষয় হয়ে যাচ্ছে। টিভি চ্যানেলে রাজনৈতিকদের ভাষণ মানুষ শুনতে চায় না। তিনি বলেন, কোন কোন নেতা এমন ফরমালিনের বিষ নির্গত করেন, তাদের মুখ থেকে বের হয়, তখন দর্শক টেলিভিষণের সুইচ অফ করে দেন। এটা পলিটিশিয়ানদের জন্য ভালো খবর নয়। এটা আমাদের সকলেরই রিয়ালাইজ করা উচিৎ।
বর্তমানে মাদকের বিস্তার নিয়ে কাদের বলেন, আজকে মাদক বাংলাদেশে সাইলেন্ট সুনামির মত গোটা দেশকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। ইটস এ সাইলেন্ট সুনামি। এটা একটা নিঃশব্দ সুনামি। সেই সুনামি আমাদের তরুণ সমাজের একটি উল্লেখযোগ্য অংশকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ডা. অরূপ রতন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সেমিনারে তিনি বলেন, সর্বনাশা ইয়াবা স্রোতে মত আসছে। দুয়েকজনকে ক্যাপিটেল পানিশমেন্ট দিতেই হবে। এটা যদি আমরা শুরু করতে পারি তাহলে মাদকের উৎস বন্ধ হবে, ব্যবসা বন্ধ হবে, আর ব্যবসা বন্ধ হলে মাদক সেবনও বন্ধ হয়ে যাবে বলে আমি মনে করি।
শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, না পড়ে অনেকে চাতকের মত চেয়ে থাকে কখন প্রশ্নপত্র ফাঁস হবে। এই প্রবনতা ভালো না। মানসম্মত শিক্ষা চাই। পরীক্ষা কেন্দ্রীক শিক্ষার কোন প্রয়োজনই নেই।
যেকোনো সময় বিপদ আসতে পারে মন্তব্য করে কাদের বলেন, একেক সময় একেকটা হুজুগ শুরু হয়। বেপরোয়া ধর্ষক, বেপরোয়া ড্রাইভার, বেপরোয়া রাজনীতিক ও ড্রাইভার আমাদের কিছু কিছু আছে। এখন কখন যে কোন দুর্ঘটনা এরা ঘটিয়ে ফেলে আল্লাহ জানেন।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে সড়কমন্ত্রী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের বিআরটিসির অনেক গুলো গাড়ী চলে। তোমরা হয়তোবা লক্ষ করেছো, এই লাল গাড়ী গুলোকে রং রোডে চালাতে বাধ্য করা হয়। যদি আজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ছাত্র ছাত্ররা উল্টো পথে যেতে চায় এবং ড্রাইবারকে বাধ্য করে তাহলে অন্যদের আর কী বলবো?
তিনি বিরক্ত প্রকাশ করে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বার বার চেষ্টা করেও এটা বন্ধ করতে পারছে না। কেন পারবে না? এ জন্য তোমাদের মন মানসিকতা ঠিক করতে হবে। এমনিতেই রাস্তার প্রশস্থতা বেশি নয়। এই রাস্তায় যদি গাড়িটা উল্টো পথে যায় তাহলে অহেতুক যানজট সৃষ্টি হয়। তিনি বলেন, যানজট শুধু ইঞ্জিনিয়ারিং বা এনফোর্সমেন্টের কারণে হয় না। এওয়ারনেসের অভাব আছে। সচেতনতার অভাবে যানজট হয়।
জনপ্রতিনিধিদের কাউন্সিলিং করা হচ্ছে উল্লেখ করে কাদের বলেন, জন প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে মাদকের অভিযোগ থাকলে আপনারা কি করবেন? আমরা তাদেরকেও কাউন্সিলিং করছি, কাউন্সিলিং এ না হলে আমরা ব্যবস্থা নিব।



 

Show all comments
  • Fida Hassan ৪ আগস্ট, ২০১৭, ১২:৫৩ পিএম says : 0
    tomader mukhe gonotontro soba paina.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ওবায়দুল কাদের


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ