Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্রাহ্মণপাড়ায় ৪৩ বছর যাবত পানি ভেঙে স্কুলে যায় শিক্ষার্থীরা

| প্রকাশের সময় : ৩ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মোঃ আবদুল আলীম খান (কুমিল্লা) ব্রাহ্মণপাড়া থেকে : কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা পানিতে সাঁতার কেটে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করে। সাঁতার না জানায় অনেক শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসতে পারে না। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে যাচ্ছে এবং পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
সরজমিনে ঘুরে কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নের কল্পবাস (উত্তরপাড়া) গ্রামের শেষ সীমানায় ০১/০৩/১৯৭৪ ইং সালে কল্পবাস সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিদ্যালয়টি ৩৯ বছর যাবত বেসরকারী রেজিষ্টার প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে পরিচালিত হয়ে আসছে। গত ০১/০১/২০১৩ ইং সালে বর্তমান সরকার বিদ্যালয়টিকে পুরোপুরি সরকারী করণ করে। ৪ বছর যাবত বিদ্যালয়টি সরকারী সকল সুযোগ সুবিধা পেলেও যোগাযোগ ব্যাবস্থার কোন উন্নয়ন হয়নি। বিদ্যালয়টির উত্তর দিকের গ্রাম শিদলাই ইউনিয়নের শিদলাই। ঐ গ্রাম থেকে এই বিদ্যালয়ে প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী পড়ালেখা করে। বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করতে আধা কিঃ মিঃ এর মত কোন প্রকার রাস্তা ঘাট নেই। শিক্ষার্থীরা পানিতে সাঁতরিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জামা কাপর ও বই-পুস্তক ভিজিয়ে শ্রেণি কক্ষে উপস্থিত হয়। এছাড়াও বিদ্যালয়ের প্রধান সড়কটি প্রায় দেড় কিঃ মিঃ এর মত কাচা। একটু বৃষ্টি হলেই সড়কের হয়ে পড়ে বেহাল দশা। মাটি পিচলিল হয়ে চলাচলে হয়ে পড়ে অনুপযোগী। বিদ্যালয়ে আসা যাওয়ার পথে অনেক শিক্ষার্থী পিচ্ছিল খেয়ে পড়ে জামা কাপর ও বই পুস্তক নষ্ট করে এবং আহত হয়। শিক্ষক/শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীদের আসা যাওয়ায় অনেকটাই কষ্টকর হয়ে পড়ে। এছাড়াও বিদ্যালয়ের সামনের বারান্দা ঘেষে ডোবার মত একটি মাঠ থাকলেও তাতে বছরের প্রাই সময় হাটু পানি জমে থাকে। এতে ছোট ছোট কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিপাকে থাকতে হয় বিদ্যালয়টি কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকদের। এনিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৫ম শ্রেণীর মোসাঃ তাহমিনা আক্তার, আকলিমা আক্তার, ছুমাইয়া আক্তার, সানজিদা আক্তার, সিমা আক্তার, মোঃ রাসেল আলম, মেহেদী হাসান এবং ৪র্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী মোসাঃ শারমীন আক্তার ও জান্নাত আক্তার জানায়, তাদের বাড়ী শিদলাই গ্রামে হলেও তাদের বাড়ী থেকে অন্যান্য বিদ্যালয় গুলো অনেকটাই দূরে। কল্পবাস সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি কাছে হওয়ায় অভিভাবকরা তাদের এই বিদ্যালয়ে ভর্তি করে। যার কারনে তারা এই বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে আসছে। এরমধ্যে তারা প্রতি বছরের বর্ষার মৌসুতে প্রাই ৪ মাসের মত পানি ভেঙে সাঁতরিয়ে বিদ্যালয়ে আসে যায়।
এ ব্যাপারে কল্পবাস সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসাঃ রেহানা বেগম ইনকিলাবকে জানান, এই বিদ্যালয়ে বালক/বালিকা মিলিয়ে প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় অর্ধ শতাধিক শিক্ষার্থী শিদলাই গ্রামের। ঐ গ্রাম থেকে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়ার জন্য কোন রাস্তা ঘাট না থাকায় এবং বিদ্যালয়ের প্রধান সড়কটিরও বেহাল দশা হওয়ায় শিক্ষার্থী উপস্থিতি প্রাই কমে গেছে। প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ের আসেনা বললেই চলে। আর যে সকল শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসে তারা পানিতে সাঁতরিয়ে আসা যাওয়া করতে হয়।
এলাকাবাসীরা জানান, বিদ্যালয়ের ৩/৪ কিলোমিটারের মধ্যে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কোন প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নাই। নিকটবর্তী এই বিদ্যালয়ে শুধুমাত্র যোগাযোগ ব্যাবস্থার জন্য অনেক শিক্ষার্থী আসতে চায়না এবং অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের ভর্তি করায় না। বিদ্যালয়ের সাথে সংযোক্ত ধান্যাদৌল ও কল্পবাস সড়কটি যদি ইটের সলিং অথবা পিচ করে সংস্কার করা যায় তাহলে বিদ্যালয়ে শিক্ষার মান ভাল হবে এবং শিক্ষার্থীর উপস্থিতি ব্যাপক হারে বাড়বে। বিদ্যালয়টির এই সকল সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও সরকারের যথাযথ পদক্ষেপ এবং সু-দৃষ্টি কামনা করেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসী।



 

Show all comments
  • Abul Shikdar ৩ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ পিএম says : 0
    কোথায় দেশের মানুষ সুফল ভোগ করছে। এ সুফলের নমুনা।
    Total Reply(0) Reply
  • Jalal Uddin Ahmed ৩ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০১ পিএম says : 0
    What Government doing ?
    Total Reply(0) Reply
  • Mizanur Rahman ৩ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০১ পিএম says : 0
    ৪৩ বছর যাবৎ কি মন্ত্রী, এমপি, চেয়ারম্যান, মেম্বার ছাড়া ছিল গ্রামটি
    Total Reply(0) Reply
  • Kamal Pasha ৩ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০২ পিএম says : 0
    বাংলাদেশ কতটুকু এগিয়েছে ????
    Total Reply(0) Reply
  • abu morshed ৩ আগস্ট, ২০১৭, ৩:০০ পিএম says : 0
    very sad indeed.pls government do some thing for the children.we live in the 21st century but what the silly is this?
    Total Reply(0) Reply
  • Md. Anisur Rahman ৪ আগস্ট, ২০১৭, ১১:৪৯ এএম says : 0
    This is possible?
    Total Reply(0) Reply
  • S. Anwar ৪ আগস্ট, ২০১৭, ৩:০৬ পিএম says : 0
    উন্নয়নের মহাসড়ক আর কতোদূর.???
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্কুল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ