পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধে বাজার সয়লাব : নামী-দামি ওষুধ কোম্পানির ওষুধ ভিন্ন নামে বাজারজাত : নিম্নবিত্ত, গরিব ও অসচেতনদের কাছে বিক্রি : ওষুধ খেয়ে কিডনি বিকলসহ জটিল রোগে আক্রান্ত, মাতৃত্ব হারাচ্ছে নারী
হাসান সোহেল : রেনেটা ফার্মাসিউটিক্যালের ১০ এমজি রোলাক ট্যাবলেট (১৪ পিস) ফার্মেসিগুলো ৪৯৫ টাকায় ক্রয় করে, বিক্রি করছে ৫৬২ টাকায়। অপরদিকে ব্রিস্টল ফার্মা কেটো রোলাক নামে বাজারজাতকারী একই ওষুধ (৫০ পিস) ৫০ টাকায় ক্রয় করে বিক্রি করছে ৫০০ টাকায়। ব্রিস্টলের এ ওষুধটি বিক্রি করে ফার্মেসিগুলো মানসম্মত ওষুধের চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বেশি লাভ করছে। একইভাবে ইনসেপ্টার ৫০০ এমজি কিলব্যাক ট্যাবলেট (৮ পিস) ৩০৬ টাকায় ক্রয় করে ৩৬০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। অন্যদিকে ফার্মেসিগুলো অ্যালবিয়নের সেফুরোক্সিম নামে একই ওষুধ ১৮৬ টাকায় ক্রয় করে বিক্রি করছে ৩৬০ টাকায়। এছাড়া ইনসেপ্টার আরেক ওষুধ ২০ এমজি প্যানটোনিক্স (৫০ পিস) ফার্মেসিগুলো ১৭৫ টাকায় ক্রয় করে বিক্রি করছে ২৫০ টাকায়। অথচ ব্রিস্টল ফার্মার একই ওষুধ ৪০ টাকায় ক্রয় করে, যা বিক্রি করা হচ্ছে ২৫০ টাকায়।
এদিকে অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি রাজধানীর পুরান ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির ৩০টি নিউরো-বি ট্যাবলেটের মূল্য ২৫ টাকা, ৩০টি ফিলওয়েল গোল্ড ট্যাবলেট ২৫ টাকা ও ৩০টি ক্যালবো-ডি ট্যাবলেট ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৫০০ মিলিগ্রামের ১২টি জিম্যাক্স (অ্যাজিথ্রোমাইসিন) ট্যাবলেট বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকায়। আর এমবি ফার্মার মাইজিড (অ্যাজিথ্রোমাইসিন) ৫০০ মিলিগ্রামের ১২টি ট্যাবলেট বিক্রি হচ্ছে শুধু ৯০ টাকায়। শুধু কি তাই? মাল্টি ভিটামিন ও মাল্টি মিনারেলের তৈরি সেনট্রাম গোল্ড ৩০টি ট্যাবলেট ২৫ টাকা, ৩০টি জিম প্লাস ট্যাবলেট ২৫ টাকা, ৩০টি লাইফ বোন ট্যাবলেট ২৫ টাকা, বডি ফিট নামে ফুড সাপ্লিমেন্ট ৩০টি ট্যাবলেট ২৫ টাকা এবং জয়েন্ট প্লাস নামে ডায়েটারি সাপ্লিমেন্ট ৩০টি ট্যাবলেট বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকায়। এতক্ষণ যেসব ওষুধের দাম দেয়া হয়েছে সেগুলোর সবই নকল ও ভেজাল ওষুধ, যা কৌটা কিংবা প্যাকেট দেখে অভিজ্ঞ লোকজনও সহজে আসল-নকল শনাক্ত করতে ব্যর্থ হবেন।
এসব আসল ওষুধের মূল্য কত? প্রতি ৩০টি নিউরো-বি ট্যাবলেটের কৌটা সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য হচ্ছে ২৪০ টাকা, প্রতি ৩০টি ক্যালবো-ডি ট্যাবলেটের কৌটার সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ২১০ টাকা, ৩০টি ফিলওয়েল গোল্ড ট্যাবলেটের কৌটা ২৮৫ টাকা, একই কোম্পানির ১২টি জিম্যাক্স ট্যাবলেটের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৪২১ টাকা, এমবি ফার্মার মাইজিড ১২টি ট্যাবলেট সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৩৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া সেনট্রাম গোল্ড ৩০টি ৪৮০ টাকা, জয়েন্ট প্লাস ৪৫০ টাকা, বডি ফিট ৪০০ টাকা, লাইফ বোন ৫২০ টাকা সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য লেখা রয়েছে।
রাজধানীর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল, মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনের ফার্মেসিগুলো ঘুরে ওষুধের এ চিত্র ফুটে ওঠে। এদিকে ৮ থেকে ১০ টাকার জন্ম নিয়ন্ত্রক ওষুধ ডিপোপ্রোভেরার লেবেল বদলে ৮০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে ভেজাল ডিপোমেট্রাল। এসব ভেজাল ওষুধ খেয়ে মাতৃত্ব হারাচ্ছেন বহু নারী। এছাড়া জীবনরক্ষাকারী আরো বেশ কিছু নকল, ভেজাল ও নিম্নমানের উপাদানে তৈরি ওষুধ বাজারে বিক্রি হচ্ছে বলে জানা গেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, দেশের নামী-দামি প্রায় সব কোম্পানির ওষুধ হরহামেশাই নকল ও ভেজাল হচ্ছে। যেসব ওষুধ বাজারে বহুল প্রচলিত সেগুলো বেশি নকল হচ্ছে। এসব ওষুধ মিটফোর্ড হয়ে রাজধানীসহ দেশের আনাচে-কানাচে চলে যাচ্ছে। নকল ও ভেজাল ওষুধের প্যাকেট এমন আকৃতিতে তৈরি করা হয়, যা দেখে খোদ কোম্পানির প্রতিনিধি কিংবা অভিজ্ঞ ব্যবসায়ীরাও সহজে দেখে শনাক্ত করতে পারবে না। জিম্যাক্স টাবলেট আসল ও নকল পাশাপাশি রাখা হলে নকলটিকেই আসল মনে করবেন অভিজ্ঞরা।
ওষুধ নকল হওয়ার জন্য দেশের উৎপাদনকারী কোম্পানি এবং ওষুধ প্রশাসনের দুর্বলতাকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ দফায় দফায় ওষুধের মূল্য বৃদ্ধি করা, শুল্ক সুবিধায় কাঁচামাল আমদানি করে চড়া মূল্যে খোলা বাজারে বিক্রি, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ফেরত না নেয়া এবং বাজারে কোম্পানিগুলোর নজরদারি কম থাকা। কোম্পানিগুলোর নিজস্ব সোর্সের মাধ্যমে নিজ প্রতিষ্ঠানের ওষুধ নকল হচ্ছে কি না তা তদারকির অভাব রয়েছে।
আর তাই ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধে সয়লাব হয়ে গেছে ওষুধের বাজার। ভেজাল ওষুধ প্রস্তুতকারী একটি সিন্ডিকেট দামি ওষুধগুলোর নাম ব্যবহার করে আলাদা মোড়কে বিক্রি করে গড়ে তুলেছেন ওষুধের রমরমা বাণিজ্য।
সূত্র মতে, প্রতি বছর দেশে প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকার ওষুধ বিক্রি হয়। যার এক-তৃতীয়াংশই ভেজাল ওষুধ। আর ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কোম্পানিই ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ তৈরি করছে। ভেজাল এ ওষুধগুলো খেয়ে অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্নের মুখে। এছাড়া বাড়ছে অসুস্থ মানুষের সংখ্যা। এগুলো খেলে অন্য কোনো ওষুধও কাজ করছে না শরীরে। আবার অনেক নারী এগুলো খেয়ে হারাচ্ছেন মাতৃত্ব।
মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ চিকিৎসক ফি ও টেস্টের (রোগ নির্ণয়) খরচের আতঙ্কে হাসপাতাল বা ক্লিনিকে যান কম, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তারা সরাসরি চলে যান ওষুধ বিক্রেতার কাছে। তার কাছে রোগের বিবরণ দিয়ে ওষুধ কিনে নিয়ে আসেন। শুধু তাই নয়, কেনার সময়েও খোঁজেন কম দামি ওষুধ। আর এরই সুযোগ নিচ্ছে ভেজাল ওষুধ প্রস্তুতকারীরা প্রতিষ্ঠানগুলো। যখন ওষুধ সেবন করা হয়, তখন বোঝার উপায় থাকে না ওষুধটি আসল নাকি নকল। ওষুধ সেবনের পর কাক্সিক্ষত ফলাফল পাওয়া না গেলে হয়তো রোগীর কল্পনাতেও আসে না তা নকল ছিল। ফের চিকিৎসকের পরামর্শ নেয় অথবা চুপচাপ দীর্ঘ দিন বয়ে বেড়ায় রোগটি।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, রাজধানীতে ১৫০টি ফ্ল্যাটে অস্বাস্থ্যকর-নোংরা পরিবেশে ভেজাল ওষুধ তৈরি ও প্যাকেটজাত করা হয়। মিরপুর, পল্লবী, গুলশান, মিটফোর্ড, রায়েরবাজার, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, রামপুরা, মনিপুরীপাড়াসহ বেশ কিছু এলাকায় কয়েকটি চক্র এর সঙ্গে জড়িত।
ওষুধনীতি অনুযায়ী ওষুধের দামের স্বীকৃতি এলেই কেবল তা বাজারে ছাড়া যাবে নির্দেশনা রয়েছে। অথচ কেউই মানছে এ নীতি।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার (ডবিøউএইচও) হিসাবে আফ্রিকা, এশিয়া ও ল্যাটিন আমেরিকার বাজারে প্রতি ১০টি ওষুধের প্রায় তিনটিই নকল। অল্প খরচে বেশি লাভ হওয়ায় প্রতারকদের কাছে ভেজাল ওষুধ ব্যবসার আকর্ষণ বাড়ছে।
ওষুধ প্রশাসন সূত্র জানায়, সারাদেশে অ্যালোপ্যাথিক ওষুধ কোম্পানি রয়েছে ২৪২টি, ইউনানী ২৬৭টি, আয়ুর্বেদিক ২০৭টি ও হোমিওপ্যাথিক ৭৯টি। একটি ওষুধ একাধিক কোম্পানির তৈরির অনুমতি আছে। যেমন- শুধু প্যারাসিটামল ট্যাবলেট তৈরি করে ১০৬টি কোম্পানি এবং প্যারাসিটামল সিরাপ তৈরি করে ২১টি কোম্পানি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফার্মেসি মালিক জানান, লাভ বেশি তাই বিক্রি করা হয়। তবে সবার কাছে এগুলো বিক্রি করা হয় না। নিম্নবিত্ত, গরিব ও অসচেতন লোকদের কাছে এগুলো বিক্রি করা হয়। ক্ষতির কথা স্বীকার করে এ ব্যবসায়ী বলেন, এতে গুণমান লেখা থাকলেও গুণাগুণ কিছুই থাকে না। একই গ্রুপের ওষুধ বলেও চালিয়ে দেয়া হয় ক্রেতাদের। তিনি এ ধরনের ওষুধগুলো যাতে বাজারজাত না করতে পারে সে ব্যাপারেও মতামত দেন।
দেশের প্রায় আড়াই লাখ ফার্মেসিতে এই ওষুধ বাজারজাত করা হচ্ছে। এর মধ্যে লাইসেন্স রয়েছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৭৫১ ফার্মেসির। বাকিগুলোর লাইসেন্স নেই। ফলে গুণগত মানসম্পন্ন ওষুধের পরিবর্তে নকল, ভেজাল ও নিম্নমানের অ্যান্টিবায়োটিক, স্টেরয়েড বা অন্যান্য ওষুধ বিক্রি হচ্ছে যা খেলে জীবন বিপন্ন হতে পারে।
স্কয়ার কোম্পানির ওষুধ নকল প্রতিরোধ এবং এ ব্যাপারে কী ব্যবস্থা নিচ্ছেন- এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সহকারী ব্যবস্থাপক (বিপণন) আতিকুজ্জামান বলেন, কোম্পানির ওষুধ নকলের বিষয়টি তাদের নজরে এসেছে। এ জন্য তারা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছেন। সম্প্রতি কৌটাগুলো বিদেশ থেকে তৈরি করে আনছেন। ফয়েল পেপারেও পরিবর্তন এনেছেন। আসল ট্যাবলেট বা ক্যাপসুলের গায়ে একটি কোড নম্বর দেয়া থাকে যেটি নকলে সম্ভব হয় না। তিনি আরো জানান, নিজস্ব প্রতিনিধি ছাড়া কোনো দোকানি দালালের মাধ্যমে ওষুধ কিনলে প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নকল-ভেজাল প্রতিরোধে অভিযান কার্যক্রম জোরদার করার দাবি করেন তিনি।
নকল-ভেজাল ওষুধ বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য জাকির হোসেন রনি বলেন, নকল-ভেজাল ওষুধ বিক্রি বন্ধে সমিতি বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। নকল ওষুধ ধ্বংস করতে ভেজালকারীদের সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়েছে। এ জন্য একটি তদারকি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের যুগ্ম পরিচালক শাহদাত হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, ওষুধ বাজারজাতকরণের অনুমতি দেয় ওষুধ প্রশাসন। ওষুধের মানের সাথে দামের বিষয়টাও তদারকি করা তাদের দায়িত্ব। এখানে ভোক্তা অধিদপ্তরের কিছু করার থাকে না।
ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের পরিচালক রুহুল আমিন বলেন, নকল-ভেজাল ওষুধের বিরুদ্ধে তাদের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ভেজালকারীদের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টি হলে এবং আসল ওষুধ শনাক্তে সফটওয়্যার উন্নত করা সম্ভব হলে জনগণ এ থেকে পরিত্রাণ পাবেন বলে তিনি মনে করেন। ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০১৬ সালে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ২১৬৯টি, ড্রাগ কোর্টে ৪১টি এবং ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে মামলা দায়ের ৬৪টি, ৫৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড, ১৬টি কারখানা সিলগালা, সিউডেফেডরিন জাতীয় ২০১টি ওষুধের রেজিস্ট্রেশন বাতিল, মানবহির্ভূত হওয়ায় ৪৪টি পদের রেজিস্ট্রেশন বাতিল, ১৪টি পদের রেজিস্ট্রেশন সাময়িক বাতিল, ১৯টি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল এবং ২১টি ফার্মেসি সিলগালা করা হয়েছে। জরিমানা করা হয় প্রায় ৮ কোটি টাকা এবং জব্দ করা হয় ১৭ কোটি টাকা মূল্যের আনরেজিস্টার্ড, মিসব্র্যান্ডেড, মেয়াদ উত্তীর্ণ, সরকারি ওষুধ ও ফুড সাপ্লিমেন্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।