Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শর্তহীন প্রত্যাহারই ভারতের মুখ রক্ষার উপায়

চীনের প্রভাবশালী সরকারি পত্রিকা গ্লোবাল টাইমস’র মন্তব্য

| প্রকাশের সময় : ২ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : ডোকলামে ভারতীয় সেনার বদলে ভুটানি সেনা প্রতিস্থাপন প্রসঙ্গে চীনের প্রভাবশালী সরকারি পত্রিকা গ্লোবাল টাইমস বলেছে, ভারতের মুখ রক্ষার একমাত্র উপায় হলো শর্তহীন প্রত্যাহার। পত্রিকাটিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় দুই মাস ধরে চীন-ভারত সীমান্তের অচলাবস্থা চলছে। চীন এটা স্পষ্ট করেছে যে, ডোকলাম এলাকা থেকে ভারতের প্রত্যাহার আলোচনার জন্য পূর্বশর্ত এবং একটি ন্যায়সঙ্গত ও বৈধ দাবি। অথচ ভারত তার সেনা প্রত্যাহারের আহŸান প্রত্যাখ্যান করে অচলাবস্থাকে দীর্ঘ করছে। আর এতে ভারতের অবস্থা আরো দুর্ভাগ্যজনক হবে। প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্ভবত ভারত তার অবৈধ অনুপ্রবেশের পরিণতি সম্পর্কে সচেতনতার কারণে মুখ বাঁচানোর উপায় খুঁজে বের করতে শুরু করেছে। একটি উচ্চ পর্যায়ের সূত্রের বরাত দিয়ে গত শনিবার ভারতের এক সংবাদ মাধ্যমে বলা হয়, ভুটানের সেনারা যদি তাদের সেনাদের প্রতিস্থাপিত করে তবে ভারত সেনা প্রত্যাহার করবে। রিপোর্টে বলা হয়, ভুটানের রক্ষাকর্তা হিসাবে ভারতের প্রত্যাহার মানে হলো ভুটানের পীঠে ছুরি মারা এবং তার মিত্রকে পরিত্যাগ করা। অথচ ডোকলাম হলো ভারত ও চীনের মধ্যেকার দ্বিপক্ষীয় সীমান্ত এলাকা আর এর সাথে ভারতের কোনো সম্পর্ক নেই। ভারতই সম্পূর্ণ চীনা অঞ্চলে অনুপ্রবেশ করেছে এবং বর্তমানে ভুটানের জন্য চীনের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে বলে বাহ্যত মনে হলেও আসলে নয়াদিল্লি তার হিমালয়ান প্রতিবেশীকে নিয়ে উদ্বিগ্ন নয়। এর সবকিছুই ভারত করছে নিজস্ব কৌশলগত হিসাব নিকাশ থেকে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারত ভয় পায় যে ডোকলামে রাস্তা তৈরি হলে চীনের জন্য ভারতের ভঙ্গুর শিলিগুড়ির ‘চিকেন নেক’ এলাকার লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা সহজ হবে। চীনের সঙ্গে ১৯৬২ সালের সীমান্ত যুদ্ধের পর, ভারত সবসময় সীমান্তের ওপারে চীনা কার্যক্রমের ব্যাপারে সমালোচনামুখর ও অতিমাত্রায় সতর্ক হয়ে উঠেছে। প্রকৃতপক্ষে ভারত ১৯৭৫ সালে সিকিম অঙ্গীভূত করার মত করে ভুটানের সাথে ডিল করার চেষ্টা করছে। ভারতের উপর সামরিক ও অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতায় ভিত্তি করে ভুটানে নয়াদিল্লি হস্তক্ষেপ করেছে। অবশ্য ভুটান একটি স্বাধীন পররাষ্ট্র নীতি তৈরি করার চেষ্টা করছে এবং চীনের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করেছে। এর মধ্যে দু’দেশের মাঝে সমঝোতা হয়েছে এবং ২৪ দফা সীমান্ত আলোচনা হয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ভুটানের পক্ষ নেয়ার নামে চীনের সঙ্গে আলোচনায় ব্যর্থ হওয়ার পর ভারত এখন ভুটানকে ডোকলাম অঞ্চলে মুখোমুখি অবস্থার মধ্যে টেনে আনতে চেষ্টা করছে। প্রশ্ন হলো- দিল্লি কি আসলে কখনো ভুটানের ইচ্ছাকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের ইচ্ছা হিসেবে বিবেচনা করেছে? এই প্রক্রিয়ায় ভুটানকে রক্ষা করা কি সত্যিই ভারতের উদ্দেশ্য? ভারত এখান থেকে আসলেই কি স্বার্থ আদায় করতে চায়? গেøাবাল টাইমস উল্লেখ করেছে, চীন আঞ্চলিক ইস্যুতে কোনো ছাড় দেবে না আর এটি জাতীয় নিরাপত্তার সাথে যুক্ত হলেতো ছাড় দেয়ার প্রশ্নই আসে না। ভুটানের নামে চীনের সঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ বা দরকষাকষির চেষ্টার পরিবর্তে ভারতের জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তার সেনা প্রত্যাহার করাটাই হবে বিজ্ঞ সিদ্ধান্ত। এছাড়া আর কিছুই এই সমস্যার সমাধান করতে সাহায্য করবে না। গেøাবাল টাইমস।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ