নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
জাহেদ খোকন : বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের (বাহফে) বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির মেয়াদ শেষ হচ্ছে আজ। অথচ নতুন কমিটি গঠনের লক্ষ্যে এখনো নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করেনি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। ফলে হকিবোদ্ধাদের মনে প্রশ্ন জেগেছে, আসন্ন এশিয়া কাপকে সামনে রেখে কোন কমিটির অধীনে চলবে হকি ফেডারেশনের কার্যক্রম। তবে বিশ্বস্ত সুত্র জানায়, বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষের দিন আজই এনএসসি ঘোষণা করতে পারে এই ফেডারেশনের নির্বাচনী তফসিল।
২০১৩ সালের জুলাই মাসের শেষ দিকে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলো হকি ফেডারেশনের নির্বাচিত কমিটি। তখন নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন খাজা রহমতউল্লাহ। এরপর পানি কম ঘোলা হয়নি। নির্বাচনী জটিলতায় বেঁকে বসে বিদ্রোহী খ্যাত প্রিমিয়ার লিগের পাঁচ দল যথাক্রমে ঢাকা মোহামেডান, মেরিনার ইয়াংস, বাংলাদেশ স্পোটিং, ওয়ারী ও ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাব। খাজা রহমতউল্লাহ’র অধীনে ফেডারেশনের কোন কার্যক্রমে অংশ নিবে না এমন সিদ্ধান্তই ছিলো তাদের। যে কারণে দুই বছর গভীর সংকটে ছিলো দেশের হকি। এই সময় বিদ্রোহীরা (ওয়ান্ডারার্স বাদে) প্রিমিয়ার লিগসহ ঘরোয়া কোন টুর্নামেন্টেই খেলেনি। ফলে দেশে হকির জনপ্রিয়তা কমতে থাকে। তবে দেরীতে হলেও সংকট কেটে যায়। সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব ছেড়ে অনেকটা বাধ্য হয়েই সহ-সভাপতির চেয়ারে বসেন খাজা রহমত উল্লাহ। ২০১৫ সালের ২৩ অক্টোবর তিনি পদত্যাগ করলে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হন আবদুস সাদেক। এরপরই অবশ্য বিদ্রোহীরা নিজেদের অবস্থান থেকে সরে আসে। বেগবান হয় হকির কার্যক্রম। এই কমিটিরই মেয়াদ শেষ হচ্ছে আজ। এই দিনটিকে সামনে রেখে প্রায় দেড় মাস আগে হকি অঙ্গনে শুরু হয় নির্বাচনী আবহ। এবার সবচেয়ে বেশী আলোচনায় আসছে সাধারণ সম্পাদক পদটি। আভাস মিলেছে এই পদে লড়বেন বর্তমান কমিটির দুই সহ-সভাপতি খাজা রহমতউল্লাহ ও আবদুর রশিদ শিকদার। খাজা রহমতউল্লাহ কিছুটা নীরব ভুমিকায় থাকলেও ইতোমধ্যে গণসংযোগে নেমেছেন রশিদ শিকদার। তবে হকিবোদ্ধাদের ধারণা রহমতউল্লাহ’র এই নীরব ভুমিকার কারণে আগামী নির্বাচনে ঘটতে পারে অনেক কিছুই। অনেকেই জানেন তার মুলধন হচ্ছে হাইকমান্ড। যে কারণে তিনি নির্বাচনী মাঠ গরম করছেন না। অর্থাৎ বলা যায় হাইকমান্ডের আদেশ এখনও পাননি বিধায় চুপচাপই রয়েছেন রহমতউল্লাহ।
অন্যদিকে নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন রশিদ শিকদার। যেখানে সেখানে পার্টি দিয়ে নির্বাচনী শো-ডাউন করছেন। তার সঙ্গে রয়েছেন হকির একঝাঁক তারকা সংগঠকরা। এক সময়ের মাঠ কাঁপানো খেলোয়াড়রাও রশিদকে সমর্থন দিচ্ছেন। বিশ্বস্থ সুত্র মতে, বাহফে কর্তারা রশিদ শিকদারের গনসংযোগে একটু ভীতই হয়ে পড়েছেন। যে কারণে সব মনোযোগ এখন এশিয়া কাপের দিকেই দিচ্ছেন তারা। যার অধীনে এতোবড় একটি টুর্নামেন্ট টার্ফে গড়াবে, মূল্যায়ন তো তারই হবে। ফলে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা হলো কী না, বা কেন হচ্ছে না সেদিকে নজর নেই কোন কর্মকর্তার। কমিটির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। যদি তফসিল ঘোষণা না হয় তবে কার অধীনে চলবে ফেডারেশন। নির্বাচন হবে? নাকি সেই অ্যাডহক কমিটির যাতাকলে পড়বে হকিও। এমন সব প্রশ্ন যখন হকিপ্রেমীদের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে তখন খাজা রহমতউল্লাহ বলেন,‘ ফেডারেশনের বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হচ্ছে কাল (আজ)। এরপর কোন কমিটির অধীনে চলবে হকি ফেডারেশন তা একমাত্র এনএসসি বলতে পারবে। তারা যেভাবে চালাবে সেভাবেই চলবে। তবে আমার ধারণা হকি ফেডারেশনের কার্যক্রম সচল রাখার জন্য এনএসসি বর্তমান কমিটিকেই দৈনন্দিন কাজ চালিয়ে যেতে বলতে পারে। এক্ষেত্রে হয়তো কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা থাকবে না এই কমিটির। তবে কাজ তো চলবে।’ তিনি যোগ করেন,‘আবার এমনও হতে পারে নির্বাচন ও এশিয়া কাপকে সামনে রেখে এনএসসি এডহক কমিটি গঠন করবে। আসলে পুরো ব্যাপারটাই এনএসসি’র আওতাধীন। তারা যখন নির্বাচন দিবে তখনই সেটা আমাদের মেনে নিতে হবে। এশিয়ান হকি ফেডারেশন থেকে এমন কোন বিধি-নিষেধ নেই যে, এশিয়া কাপের আগেই নির্বাচন করতে হবে।’
তবে রশিদ শিকদার বললেন অন্য কথা। তার ধারণা নির্বাচনের সব প্রক্রিয়া চুড়ান্ত করতে আজই তফসিল ঘোষণা করতে পারে এনএসসি। তিনি বলেন,‘আমরা গত মার্চ মাসে নির্বাহী কমিটির সভায় আসন্ন নির্বাচনের ব্যাপারে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ ধারাবাহিকতায় নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু করতে এনএসসিকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি ৩০ জুলাই বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তাদের কাছে কাউন্সিলরশীপের তালিকাও পাঠানো হয়েছে।’ রশিদ আরও বলেন,‘ আমার জানা মতে নির্বাচনের ব্যাপারে এনএসসি ইতিবাচক ভুমিকা রাখতে তফসিল ঘোষণা ছাড়া অন্য সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। এতোদিনে তফসিল ঘোষনাও করে ফেলা উচিত ছিলো। কেন করা হয়নি জানিনা। তবে আমার আশা আজই এনএসসি হকি ফেডারেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে। যদি তা না করা হয় তবে ফেডারেশনের বর্তমান সভাপতি ও বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল আবু এসরার নিজ ক্ষমতাবলে ফেডারেশনের কার্যক্রম চালাবেন।’ রশিদ শিকদার ফেডারেশনের বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি ছাড়াও এশিয়ান হকি ফেডারেশনের সদস্যও। আসন্ন নির্বাচনের ব্যাপারে এশিয়া হকি ফেডারেশনের কোন ভুমিকা নেই বলে জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।