Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মাছের সব বিস্ময়কর কাহিনী

| প্রকাশের সময় : ২৮ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

কে. এস সিদ্দিকী

সমগ্র সৃষ্টি জগতের সবকিছুই বিশ্ব¯্রষ্টার একেকটি মহা বিস্ময়, একেকটি আজব বস্তু এবং সৃষ্ট প্রতি বস্তুই তার অস্তিত্ব ও মহা কুদরতের সাক্ষ্য বহন করে। খালেকে কায়েনাত বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের ¯্রষ্টা খোদ ঘোষণা করেছেন, আসমান-জমিন এবং এ উভয়ের মধ্যে যা কিছু বিদ্যমান সবই তিনি সৃষ্টি করেছেন এবং তিনিই রাব্বুল আলামিন, জগত-মহাজগত মÐলীর লালন-পালনকর্তা। কুন ফয়াকুন শক্তির অধিকারী মহান আল্লাহ তার অসীম অপূর্ব শক্তি-কৌশল বলে সব কিছুই নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করছেন এবং তার নির্দেশেই সবকিছু হচ্ছে, ঘটছে। সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী মহান আল্লাহ মাছের পিঠে গরু (বলদ) এবং গরুর শিং এর ওপর জমিন, দুনিয়া স্থিত অবস্থায় রেখেছেন এরূপ মতবাদ পোষণ করা কি তার মহা কুদরতকে অস্বীকার করা, নাকি প্রমাণ করা এ প্রশ্নের জবাব কি?
ওহাব ইবনে মোনাব্বেহ বর্ণনা করেন যে, আল্লাহ তাআলা যখন জমিন সৃষ্টি করেন, তখন তা নৌকার ন্যায় নড়াচড়া করতে থাকে এবং এদিক ওদিক ঘুরতে থাকে। আল্লাহ তাআলা তাকে জমাট ও স্থিতিশীল করার জন্য এক বিশাল শক্তিশালী ফেরেশতা সৃষ্টি করেন এবং তাকে নির্দেশ দেন, জমিনের তলদেশে গিয়ে তাকে নিজের কাঁধে বহন করতে। নির্দেশ অনুযায়ী ফেরেশতা তাই করেন এবং তা কাঁধে বহন করে নিজের এক হাত পূর্ব দিগন্ত এবং অপর হাত পশ্চিম দিগন্তে বের করে উভয় দিক দিয়ে শক্ত করে ধরে রাখেন। কিন্তু অধিক ভারের কারণে তার পায়ে শিহরণ ও কম্পন শুরু হয়ে যায় এবং ফেরেশতা কাঁপতে থাকেন, তখন আল্লাহ তাআলা জমিনকে জমাট ও স্থিতিশীল রাখার জন্য ইয়াকুত পাথরের একটি বিশাল ভূমি সৃষ্টি করেন। যার মধ্য ভাগে সাত হাজার ছিদ্র এবং প্রত্যেক ছিদ্রে এক মহাসাগর নির্গত করেন, যার দৈর্ঘ্য-প্রস্থের জ্ঞান কেবল মাত্র আল্লাহই অবগত। অতঃপর তাকে ফেরেশতার উভয় পায়ের মধ্যে প্রবেশের নির্দেশ দেন। নির্দেশ অনুযায়ী তা প্রবেশ করে, কিন্তু আবার সে পাথরে কম্পন দেখা দেয় এবং তাতে স্থিতিশীলতা ব্যহত হতে থাকে। তখন আল্লাহ তাআলা তার জন্য এক বিশাল বলদ সৃষ্টি করেন, যার চার হাজার চোখ এবং সম সংখ্যক কান, নাক, মুখ, জিহŸা ও পা ছিল এবং এক পা হতে অপর পা পর্যন্ত দূরত্ব ছিল পাঁচশ বছরের।
অতঃপর আল্লাহ তাআলা বলদকে নির্দেশ দেন পাথরখানা তার পিঠে বহন করতে। তাই সে পাথরখানার তলায় গিয়ে তা তার পিঠে ও শিং-এ উঠায়। এ বলদের নাম ছিল কিয়ুসা। কিন্তু আবার সে বলদের মধ্যে কম্পন শুরু হয়ে যায় এবং তা আর স্থিতিশীল থাকতে পারছিল না। এরপর আল্লাহ তাআলা এক বিরাট মাছ সৃষ্টি করেন, তার বিরাটত্ব ও তার চোখ দুটির চমক এবং প্রশস্ততার কারণে মানুষ তার দিকে তাকাতে সম্পূর্ণ অক্ষম। বলা হয়ে থাকে, যদি দুনিয়ার সমস্ত সাগরকে তার নাকের একটি ছিদ্রে রাখা হয়, তাহলে মনে হবে কোনো সু-প্রশস্ত, সুদীর্ঘ এবং বিজন প্রান্তরে একটি সরিষা বিচি। মাছটির নাম ‘বাহমূত’ বলা হয়েছে এবং ঐ মাছের অবস্থান কেন্দ্র করেছেন পানিকে। পানির তলদেশে রয়েছে বাতাস এবং বাতাসের নীচে পানি। আবার পানির নীচে কয়েক স্তরের অন্ধকার এবং এসব অন্ধকারের পর কি রয়েছে তা একমাত্র আল্লাহ ভালো জানেন; বান্দাগণের সে জ্ঞান নেই, আল্লাহ তাদেরকে তা দান করেননি। (মাসালেকুল আরমারফি মামালিকিল আসসার গ্রন্থের বরাতে হায়াতুল হায়ওয়ান।)
এ ঘটনার উল্লেখ কোনো হাদীসে আছে কিনা তা মোহাদ্দেসীনে কেরাম বলতে পারেননি, তবে মোসলিম শরীফের বরাতে ঘটনাটি ভিন্নভাবে উল্লেখ করা হয়ে থাকে। জনৈক ইহুদী রাসূলুল্লাহ (স.)-কে জিজ্ঞাসা করেছিল যে, জান্নাতবাসীদের খাদ্য কি হবে? রাসূলুল্লাহ (স.) জবাবে বলেছিলেন, মাছের কলিজা। এ সম্পর্কে হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) এর বরাতে হাকেম বর্ণিত হাদীসটির মর্ম এই- ‘তিনি বলেন, আল্লাহ তাআলা সর্বপ্রথম কলম সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর কলমকে বলেন, লিখ। কলম বলল কি লিখব? বললেন, কুদরত তকদির লিখ। কলম তখন ঐ দিন থেকে কেয়ামত পর্যন্ত যা কিছু ঘটবে সবকিছুর বিস্তারিত অবস্থা ও সকল বস্তু লিখে দেয়। ইবনে আব্বাস (রা.) বললেন, আল্লাহ তাআলার আরশ পানির উপর ছিল। তা পানি হতে বের হয় এবং বাষ্প হতে আসমান আত্মপ্রকাশ করে। অতঃপর আল্লাহ মাছ সৃষ্টি করেন এবং মাছের উপর জমিন বিছিয়ে দেয়া হয়, জমিন মাছের পিঠে ছিল। মাছ তার পরিবর্তন করতে চাইলে জমিন দুলতে থাকে। তাই পর্বতমালা সৃষ্টি করা হয় এবং এ পর্বতমালা জমিনের ওপর অধিকার বিস্তার করে। যার ফলে জমিনের কম্পন বন্ধ হয়ে যায়।
এ সম্পর্কে কাবুল আহŸার বলেন, ইবলিশ দ্রæত ঐ মাছের নিকট গমন করে এবং যার পিঠের সমস্ত জমিন রেখে দেয়া হয়েছে; তার অন্তরে কুমন্ত্রণা দেয় বা তাকে প্ররোচিত করে এই বলে যে, লুতিয়া তোমার জানা আছে কি, তোমার পিঠে কত লোক বসতে পারে এবং কত পশু এবং কত বৃক্ষ ও পর্বত ইত্যাদির ঠাঁই হতে পারে? তুমি যদি ঐ সবকিছু ঝেড়ে মুছে ফেলতে পারো এবং নিজের পিঠ হতে ফেলে দিতে পার তাহলে তুমি আরামে থাকতে পারবে। লুতিয়া এ ইচ্ছা পোষণ করা মাত্র আল্লাহ তাআলা তখনই তার নিকট একটি কীট প্রেরণ করেন, যা তার নাকের ভেতর প্রবেশ করে এবং তার মগজ পর্যন্ত পৌঁছে যায়। মাছটি ভীষণ কষ্টে আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি করতে থাকে। আল্লাহ তাআলা কীটকে বের করে দেন। কা’ব বলেন, আল্লাহর কসম, যার অধিকারে রয়েছে আমার প্রাণ, সে মাছ ঐ কীটকে এবং কীট মাছকে সমানভাবে দেখতে থাকে। মাছ যদি পুনরায় একাজের ইচ্ছা করে তা হলে কীট আবার তার মগজে প্রবেশ করবে যেভাবে প্রথমে প্রবেশ করেছিল। হজরত আলী (রা.) মাছটির নাম লুতিয়ার স্থলে বাহমূত বলে উল্লেখ করেছেন।
প্রথম বর্ণনাটি ওহাব ইবনে মোনাব্বেহর; যাতে বলা হয়েছে যে, বাহমূত মাছের ওপর বলদ দাঁড়িয়ে যার ওপর জমিন বা পৃথিবী স্থির হয়ে আছে। সূত্রহীন এ বর্ণনাকে উলামায়ে ইসলাম ইসরাইলিয়াতের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। যেমন পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে। পক্ষান্তরে হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) এর বর্ণনায় মাছের পিঠে জমিনের কথা আছে, পর্বতমালা যাকে শক্ত করে ধরে রাখে, তাতে বলদের উল্লেখ নেই। ইসরাইলিয়াত অর্থ হচ্ছে, ভিত্তিহীন, অতিরঞ্জন, অনির্ভরযোগ্য, কল্পকাহিনী ইত্যাদি। ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত যে, আসমানী কিতাবগুলোর মধ্যে কোরআনে তাওরাত, যবুর এবং ইঞ্জিলের (বাইবেল) নাম বারবার উচ্চারিত হয়েছে এবং এগুলোকে বিকৃত করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। ইতিহাস হতেও জানা যায় যে, এসব গ্রন্থের আসল দুনিয়া হতে প্রথমেই অস্তিত্বহীন হয়ে গেছে। পরবর্তীকালে যুগে যুগে ইহুদীরা এগুলো দারুণভাবে পরিবর্তন করেছে এবং এসব গ্রন্থের নামে নানা মনগড়া কাহিনী ও কল্প রচনা করে তা চালু করেছে।
ইসলামের ইতিহাসে এসব ভিত্তিহীন ঘটনার প্রভাব কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হওয়ার একাধিক কারণ রয়েছে। যেগুলো আলাদাভাবে লেখার বিষয়, তবে সত্যনিষ্ঠ উলামায়ে ইসলাম এবং সঠিক ইতিহাস রচয়িতাগণ গভীর, ব্যাপক এবং সূ² নানা যাচাই বাছাই করে ইসরাইলীদের বর্ণিত মনগড়া, ভিত্তিহীন ও কল্পকাহিনীকে ইসরাইলিয়াত আখ্যায়িত করেছেন। এসব ইসরাইলিয়াত বিভিন্নভাবে মুসলমানদের রচনা বলিতেও অনুপ্রবেশ করেছে এবং ইসলাম বিদ্বেষী অমুসলিম লেখকগণও সেগুলো সানন্দে লুফে নিয়েছেন। আর তাদের অনুসরণে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত কিছু মুসলিম লেখকও তাদেরই পদাংক অনুসরণ করেছেন। অথচ উলামায়ে ইসলামের নিকট মাছের পিঠে গরু এবং গরুর শিং এর ওপর জমিন স্থিত হওয়ার ঘটনাবলি ইসরাইলিয়াত কাহিনী হিসেবেই বিবেচিত।
মাছ সম্পর্কে ভিন্ন প্রকৃতির রহস্যময় বহু ঘটনা বিভিন্ন নবীর যুগে সংঘটিত হয়, কোরআনে তার বিবরণ রয়েছে যার সত্যতা নিয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। হজরত মুসা (আ.), হজরত দাউদ (আ.) এবং ইউনুস (আ.) এর যুগের ঘটনা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। হজরত মুসা (আ.) এর একটি ভাষণে আল্লাহ তাআলা অসন্তুষ্ট হয়ে তাকে একটি পরীক্ষার সম্মুখীন করেছিলেন এবং এক বিশেষ বান্দা হজরত খিজির (আ.) এর সাথে সাক্ষাৎ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। খিজির (আ.) এর সাথে দেখা করার জন্য যাত্রাকালে অন্যান্য সামগ্রীর সাথে একটি রান্না করা মাছও নিয়েছিলেন। যাত্রাপথে এক সময় মুসা (আ.) ও তার সঙ্গী ইউশা (আ.) এর অজান্তে মাছটি অলৌকিকভাবে জীবিত হয়ে যে পথ ধরে চলে যায়, সে গন্তব্যে হজরত খিজির (আ.) অবস্থান করছিলেন। পরবর্তী সময়ে মুসা (আ.) মাছটির পথ অনুসরণ করেই খিজির (আ.) এর সাথে সাক্ষাৎ লাভে সমর্থ হয়েছিলেন।
কথিত আছে যে, হজরত সুলায়মান (আ.) একবার তার সা¤্রাজ্যের সকল স্তরের সকল লোককে খাবারের দাওয়াত দিয়েছিলেন এবং এ উদ্দেশ্যে রাজকীয় খাবারের ব্যাপক আয়োজন করেন। সমস্ত খাবার প্রস্তুত হয়ে যায়। এমতাবস্থায় সাগর হতে এক মাছ উঠে আসে এবং সমস্ত খাবার একই গ্রাসে গিলে আবার সাগরে চলে যায়।
হজরত ইউনুস (আ.) আল্লাহর নির্দেশের অপেক্ষা না করে তার উম্মতের আজাব আগত দেখে চলে যান। তাতে আল্লাহ নারাজ হয়ে তাকে মহা পরীক্ষার মুখোমুখি করেন এবং নৌকার অপরাধী যাত্রী আখ্যায়িত করে নৌকা হতে তাকে সাগরে নিক্ষেপ করার সাথে সাথে একটি মাছ তাকে গিলে ফেলে। কোরআনে এ ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে। অবশেষে দোআ ইউনুস (মাছের পেটে) পাঠ করে তিনি মুক্তি লাভ করেন। এ জন্য কঠিন বিপদে দোআ ইউনুস পাঠ করার কথা হাদীসে বলা হয়েছে।
মাছ শিকারকে কেন্দ্র করে এক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষামূলক ঘটনা ঘটে হজরত দাউদ (আ.) এর সময়ে; কোরআনের নানাস্থানে তার উল্লেখ রয়েছে। এ ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ এই: আসমানী কিতাব যাবুর হজরত দাউদ (আ.) এর প্রতি নাজিল হয়েছিল। এতে বনি ইসরায়েলের প্রতি নির্দেশ ছিল শনিবার দিন খাঁটি এবাদতের জন্য নির্ধারিত। এদিন মাছ শিকার করবে না। ওইসব লোক ধোঁকা ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে শনিবারে মাছ শিকার শুরু করে তখন আল্লাহ তাআলা তাদের আকার বিকৃত করে বানরে পরিণত করেন।
ঘটনাটির বিবরণ অনুযায়ী আল্লাহ তাআলা ইহুদীদের ওপর শনিবারে শিকার করা হারাম করেছিলেন। আল্লাহর হুকুমের বিরুদ্ধাচারণ ও নাফরমানি করা ছিল ইহুদীদের অভ্যাস। এমতাবস্থায় আল্লাহর পক্ষ হতে তাদের আজমায়েশের সময় আসে। অবস্থা ছিল এই যে, শনিবার সাগরে মাছের প্রচুর সমাগম হতো, সাগরের ওপরভাগে যেগুলো উঠে আসতো, অন্যান্য দিনগুলোতে এরূপ পরিলক্ষিত হতো না, বিপুল পরিমাণে এরূপ মাছ দেখা যেতো না। এ অবস্থায় ইহুদীরা ধৈর্যধারণ করতে পারলো না, তারা আল্লাহর নির্দেশের স্পষ্ট বিরোধিতা করে ধোঁকাবাজির আশ্রয় গ্রহণ করে, তারা সাগরের পানি ভাগ করে ফেলে। যখন শনিবারে বিপুল পরিমাণে মাছ তাদের ঘেরা করা হাউজে প্রবেশ করে তখন বের হওয়ার পথ বন্ধ করে দিতো এবং পরে রবিবার আটকা পড়া মাছ ধরে নিয়ে যেতো, যাতে শনিবার মাছ শিকারে গণ্য না হয়। যেন এ কার্যকলাপ দ্বারা তারা আল্লাহকে ধোঁকা দিতে চাইতো।
তাদের এ অপকর্ম প্রত্যক্ষ করে শহরের বাসিন্দারা কয়েক শ্রেণিতে বিভক্ত হয়ে পড়ে। তাদের মধ্যে একদল লোক ছিল, যারা প্রতারণার আড়ালে আল্লাহর নির্দেশের প্রকাশ্যে বিরুদ্ধাচারণে লিপ্ত হয়। দ্বিতীয় দলটি ছিল উপদেশদাতা, যারা শেষ পর্যন্ত ওদেরকে বুঝাতে থাকে এবং সৎকাজের নির্দেশ দানে নিয়োজিত থাকে এবং তৃতীয় দলে ছিল সেসব লোক যারা দুই একবার সৎ উপদেশ দিয়ে নিরাশ হয়ে পড়েছিল এবং বিরুাদ্ধাচারণকারীদের নিন্দা তিরস্কারে অতিষ্ট হয়ে নীরবতা পালন করে। চতুর্থ দলের অন্তর্ভুক্ত লোকেরা এ ঘৃণ্য কার্যকলাপে অংশগ্রহণ করেনি নিষেধও করেনি। তারা মুখ বন্ধ করে একেবারে চুপ করে রোজা পালন করে অর্থাৎ সম্পূর্ণ নীরব ভূমিকা পালন করে। এ চার দলের মধ্যে শেষোক্তদল সর্বদা উপদেশ প্রদানকারীদের উদ্দেশ্যে বলতো ঐসব অবাধ্যদের সাথে কেন মগজ খরচ করে সময়ের অপচয় করছো, ওরা কখনো সত্য গ্রহণ করবে না। ওরা কখনো সঠিক পথে আসার নয়। পরিশেষে জালেমরা আল্লাহর কঠিন আজাবের শিকার হয় এবং বানরে রূপান্তরিত হয়ে ধ্বংস হয়ে যায়।
তফসীরে উসমানীর আলোকে শনিবারে মাছ আটক রেখে রবিবারে শিকার করার বর্ণনা ওপরে তুলে ধরা হয়েছে। আল্লাহর নির্দেশ অমান্যকারীদের পরিণাম সম্পর্কে আল্লামা উসমানী বলেন, ওইসব লোক যখন ধোঁকার মাধ্যমে শনিবারে মাছ শিকার আরম্ভ করে তখন আল্লাহ তাদেরকে বিকৃত বানরে পরিণত করেছেন। তাদের মধ্যে মানবীয় সমঝ ও অনুভূতি বিদ্যমান ছিল, তারা একে অপরকে দেখতো এবং ক্রন্দন করতো, কিন্তু কথা বলতে পারতো না। তিন দিন পর তারা সবাই মৃত্যুবরণ করে। এ ঘটনা হজরত দাউদ (আ.) এর যুগে ঘটেছিল।



 

Show all comments
  • রবিউল আলম ২৮ জুন, ২০২১, ৬:১১ পিএম says : 0
    পড়ে ভালো লাগলো। কন্টেন্টটি ফেসবুকে শেয়ার করতে চাই।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ