বিশেষ সংবাদদাতা : পুলিশের টিয়ারশেলের আঘাতে তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিকুর রহমানের আহত হওয়ার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, এ ঘটনা তদন্তে পুলিশের গঠিত কমিটির প্রতিবেদন সন্তোষজনক না হলে মন্ত্রণালয় থেকে আরেকটি কমিটি গঠন করা হবে। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচার বিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, এটা দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে, আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। যেভাবেই হোক সে আহত হয়েছে। তার চক্ষুটা থাকবে কি থাকবে না সেই প্রশ্নটা আসছে। এটা সত্যিই একটা দুঃখজনক ঘটনা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পুলিশের অসাবধানতায় হোক বা ইচ্ছা করে হোক, কোন গাফিলতি আছে কিনা সেজন্য পুলিশ কমিশনার তাৎক্ষণিকভাবে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি করে দিয়েছেন। তারা কাজ করছেন। তাদের রিপোর্টে যদি আমরা সন্তুষ্ট না হতে পারি, আমরা আরেকটি কমিটি করে দেব প্রয়োজনে। যে কার গাফিলতি, কেন করেছে সেই পুলিশ, কেন এই ধরনের ঘটনা ঘটে। সেই কমিটির তথ্য পেলেই আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব। যার গাফিলতি থাকুক তাকে আমরা বিচারের আওতায় নিয়ে আসব। এটা যেমন সুস্পষ্ট, পুলিশ কমিশনার পুলিশকে আরও সংযত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সেটাও আপনারা জানেন। মন্ত্রী বলেন, তার চিকিৎসার সম্পূর্ণ দায়ভার পুলিশ কমিশনার নিয়েছেন। তার সুচিকিৎসা হচ্ছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন তার সুচিকিৎসার জন্য তাকে ভারতের চেন্নাইতে পাঠাবেন।
শাহবাগে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জনসভা করলে বাধা দেয়া হয় না। কিন্তু কোন উস্কানি না থাকার পরও পুলিশ ছাত্রদের উপর হামলা করেছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, শাহবাগের মোড়টি এমনই একটি জায়গা এটি যদি এক ঘণ্টা বন্ধ থাকে তবে সারা ঢাকা শহরে এমন তীব্র যানজট হয় তা আপনারা উপলব্ধি করতে পারেন নিশ্চয়ই। তাই আমরা মনে করছি শাহবাগের এই জায়গায় জনসভা না হয়, থমকে না যায়, আটকে না যায় এজন্য পুলিশ সব সময় অবস্থানে থাকে। আমরাই বলেছি শাহবাগ যাতে সবসময় ক্লিয়ার থাকে। যাতে যানজট সৃষ্টি না। সরকারি বেসরকারি জনসভা সেটা কথা নয়। যান চলাচল সচল রাখার জন্যই আমাদের এ সিদ্ধান্ত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন করে অধিভুক্ত ঢাকার সাতটি কলেজের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার সময় সূচি ঘোষণার দাবিতে গত বৃহস্পতিবার শাহবাগে কলেজগুলোর শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের সময় লাটিপেটা ও কাঁদুনে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। তখন তিতুমীর কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সিদ্দিকুরের চোখে টিয়ার শেলের আঘাত লাগে। সিদ্দিকুর রহমানের দুই চোখে আর আলো ফেরার ‘সম্ভাবনা কম’ বলে জানিয়েছেন আগারগাঁওয়ের জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিকিৎসকরা।