নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস রিপোর্টার : বাংলাদেশ জাতীয় দলে টেস্ট স্পেশালিস্ট হিসেবে খ্যাত মুমিনুল হক। যদিও সীমিত ওভারের ম্যাচগুলো তিনি খারাপ খেলেন না। ছোট ফরম্যাটে বাংলাদেশ জাতীয় দলের অনেক খেলোয়াড়ের চেয়ে গড় এবং স্ট্রাইক রেটে এগিয়ে এ ব্যাটসম্যান। তারপরও শুধু টেস্ট এলেই ডাক পড়ে বাংলাদেশের লিটল মাস্টারের! সামনে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে দেশের মাটিতে দুই টেস্টের সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। তাই আবারও টেস্ট ভরসার প্রতীক মুমিনুলকে স্মরণ।
তার হাতে আছে চোখ আর মনকে প্রশান্তি দেওয়া ড্রাইভ। তার এক একটি পুল শটে ফুটে উঠে শৌর্য, একেকটি লফটেড শট প্রমাণ করে সাহসিকতার। টেস্ট ক্রিকেটে দারুণ এক অর্জনে সমৃদ্ধ তার ক্যারিয়ার। অথচ মুমিনুল হককে একটা আক্ষেপ তাড়া করে এখন। বাংলাদেশের শততম টেস্টের দল থেকে তিনি বাদ পড়েছিলেন বাজে পারফরম্যান্সের কারণে। পুরোনো ব্যথা ভুলে মুমিনুল নিজেকে প্রস্তুত করছেন অস্ট্রেলিয়া সিরিজের জন্য।
টানা ১১ টেস্টে হাফসেঞ্চুরি করে ভিভ রিচার্ডসের মতো কিংবদন্তির পাশে নাম লিখিয়েছেন তিনি। মুমিনুলের জন্য দেশের শততম টেস্টে খেলতে না পারার দুঃখ তাই একটু বেশিই। সর্বশেষ দুই টেস্টে ভালো করতে পারেননি, চার ইনিংসে রান করেছিলেন ১২, ২৭, ৭ ও ৫। তবে তার আগের দুই টেস্টেই তার ব্যাট থেকে এসেছিল ৬৬ ও ৬৪ রানের দুটো ঝকঝকে ইনিংস।
উপেক্ষার জবাব অবশ্য ব্যাট হাতেই দিয়েছেন মুমিনুল। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে গাজী গ্রæপ ক্রিকেটার্সের হয়ে ১৬ ম্যাচে ৫৮৪ রান করেছেন তিনি। কিন্তু এমন দারুণ পারফরম্যান্সও তাকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি, ‘গত লিগে যেমন উইকেট ছিল তাতে আমার আরও ২৫০ থেকে ৩০০ রান করা উচিত ছিল। সেই সঙ্গে আরও দুটি সেঞ্চুরি।’
মুমিনুলের সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ ছিল গত মার্চে, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গল টেস্ট। এরপর টাইগাররা আয়ারল্যান্ড ও ইংল্যান্ড সফরে গেলেও তিনি ছিলেন দেশেই। ২০১৫ বিশ্বকাপের পর ওয়ানডে দলের বাইরে থাকা মুমিনুলকে আবার হয়তো জাতীয় দলে দেখা যাবে আগামী মাসের শেষ দিকে, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম টেস্টে। এত দীর্ঘ দিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে থাকার অনুভূতি জানতে চাইলে তার দার্শনিকসুলভ প্রতিক্রিয়া, ‘আগে অনেক কষ্ট হতো। এখন তেমন হয় না। চেষ্টা করি বিষয়টা মাথায় না রাখার।’
২২ টেস্টে ৪টি সেঞ্চুরি সহ ১ হাজার ৬৮৮ রান করা করা মুমিনুলের লক্ষ্য একটাই, সুযোগ পেলে যতটা সম্ভব ইনিংস বড় করা, ‘টেস্ট ক্রিকেটে ৫০-৬০ রান তেমন বড় কিছু নয়। ১০০ বা তার বেশি হলে দলের জন্য অবদান রাখা যায়। আমি সেই মানসিকতা নিয়েই অনুশীলন করে যাচ্ছি। দলের প্রয়োজনে বড় ইনিংস খেলতে চাই।’
বাংলাদেশ যখন ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি নিয়ে ব্যস্ত থাকে, মুমিনুল হক তখন থাকেন দলের বাইরে। অনেক দিন ধরে ‘টেস্ট ব্যাটসম্যান’ তকমা নিয়ে এগোচ্ছেন তিনি। বাংলাদেশ যেহেতু টেস্ট খেলে কম, মুমিনুলের দলে ফেরার উপলক্ষও তৈরি হয় কম। কিন্তু এ সময়ে তিনি নিজেকে উদ্বুদ্ধ করেন কীভাবে? এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে বিষয়টি মনে না করিয়ে দিতেই অনুরোধ করলেন ২২ টেস্ট, ২৬ ওয়ানডে ও ৬ টি-টোয়েন্টি খেলা মুমিনুল, ‘শুরুতে বুঝতাম না। এখন একটু বুঝি। চেষ্টা করি এটা যেন মাথায় না ঢোকে। যদি কিছু মনে না করেন, বিষয়টি যদি মনে না করিয়ে দেন, আমার জন্য ভালো।’
যেহেতু আগস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ, নিশ্চয়ই দলের অপরিহার্য সদস্য হয়ে উঠবেন মুমিনুল। গত বেশ কিছু দিনে তাঁর সতীর্থরা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভালো খেলার কথাই বলছেন। কিন্তু বাঁহাতি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান ঘুরিয়ে নয়, খেললেন স্ট্রেট ড্রাইভ, ‘আমার লক্ষ্য ২-০ ব্যবধানে জেতা। সর্বশেষ টেস্টগুলো আমরা যেভাবে খেলেছি, দুই ম্যাচই জিততে পারি। ১-১ হলেও ভালো। কিন্তু আমাদের টেস্ট দল আগের চেয়ে ভালো।’ সিরিজ জেতার কথা বললেও মুমিনুল ইংল্যান্ডের চেয়ে অস্ট্রেলিয়াকে কঠিন প্রতিপক্ষ মানছেন। কেন হবে, সেটির একটি ব্যাখ্যা দিলেন তিনি, ‘ইংল্যান্ডের চেয়েও অস্ট্রেলিয়া কঠিন হবে মনে হয়। আমাদের এখানে আসার আগে ইংল্যান্ড ভারতে খেলেনি। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া এরই মধ্যে ভারতে খেলেছে।’
২০১৪ সালের নভেম্বরে চট্টগ্রাম টেস্টে সর্বশেষ সেঞ্চুরি করেছিলেন মুমিনুল। গত আড়াই বছরে ১০ টেস্টে আর তিন অঙ্কের দেখা পাননি। পেয়েছেন চার ফিফটি। ফিফটির এই বৃত্ত থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করছেন মুমিনুল, ‘টেস্টে ৫০-৬০-৭০ করলে সেটা দলের জন্য নিরাপদ নয়। আপনি যদি ১০০-২০০ করেন, সেটা দলের জন্য নিরাপদ। আমি লম্বা ইনিংস খেলার অনুশীলন করছি।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।