নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস ডেস্ক : শ্রীলঙ্কা সফরটা স্বপ্নের মতই কাটছিল জিম্বাবুয়ের। ৫ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ জয়ের পর একমাত্র টেস্টেও সিংহভাগ সময়ই ছড়ি ঘুরিয়েছে সফরকারী দলটি। কিন্তু কলোম্বো টেস্টের শেষ দিনে এসে তাদের অশ্রুবদনে মাঠ ছাড়তে হয়েছে ভারতীয় থার্ড আম্পায়ার ছেত্তিছড়ি শামছুদ্দিনের একটি ভুল সিদ্ধান্তের কারণে। যে সিদ্ধান্তকে পুঁজি করে এশিয়ার মাটিতে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড গড়েছে শ্রীলঙ্কা।
এশিয়ায় রান তাড়া করে জয়ের আগের রেকর্ডটি ছিল ভারতের দখলে। ২০০৮-০৯ মৌসুমে চেন্নায় টেস্টে ইংল্যান্ডের দেওয়া ৩৮৭ রান টপকে গিয়েছিল ভারত। ২০১৫ সালে পেল্লেকেলেতে ইউনিস খানের বীরত্বে ৩৭৭ তাড়া করে লঙ্কান রেকর্ড গড়ে জিতেছিল পাকিস্তান। সব রেকর্ডকে পিছনে ফেলে এবার ৪ উইকেট অক্ষত রেখে এশিয়ার মাটিতে ৩৮৮ রান তাড়া করে জয়ের নতুন রেকর্ড গড়ল দিনেশ চান্দিমালের শ্রীলঙ্কা। লক্ষ্য তাড়ায় টেস্ট ইতিহাসেরও পঞ্চম সর্বোচ্চ এটি। এ নিয়ে তৃতীয়বার ৩০০ থেকে ৪০০ রানের মধ্যে চারটি ইনিংস দেখল টেস্ট ক্রিকেট। এমন ঐতিহাসিক ম্যাচ দিয়েই টেস্ট অধিনায়কত্বের অভিষেক হয়েছে চান্দিমালের।
তবে চান্দিমালদের এমন ঐতিহাসিক জয়ে মিশে থাকল কলঙ্কও। জয়ের প্রধান ভিত রচিত হয় মূলত ষষ্ঠ উইকেটে আসলে গুনারতেœ ও নিরোশান ডিকভেলার ১২১ রানের জুটিতে। ম্যাচের সবচেয়ে কলঙ্কিত সময়টি আসে দিনের প্রথম ভাগে। ডিকভেলা তখন ব্যক্তিগত ৩৭ রানে, শ্রীলঙ্কার স্কোর ৫ উইকেটে ২৩৭। সিকান্দার রাজার স্পিন বলে লাইন মিস করেন ডিকভেলা। স্টাম্পের বেল ফেলে দেন উইকেটরক্ষক চাকাভা, আপিলও করেন। সেই আপিল গিয়ে পৌঁছে টিভি আম্পায়ার সামসুদ্দিনের দরবারে। দেখতে কঠিন সিদ্ধান্ত বলে মনে হলেও বেশ স্পষ্টই দেখা যায় ডিকভেলার বুট লাইন ছেড়ে উপরেই ছিল। শরীরের ভারসম্যও তখন ব্যাটসম্যানের অনুকূলে ছিল না। এমন পরিস্থিতিতে আউট ঘোষনাই ছিল একমাত্র কাম্য। কিন্তু সবাইকে চমকে ডিকভেলাকে নট আউট ঘোষনা করেন সামসুদ্দিন। সেই ডিকভেলার ব্যাট থেকে আসে ইনিংস সর্বোচ্চ ৮১ (১১৮ বলে) রান।
এরপরও ম্যাচে ফেরার সুযোগ ছিল জিম্বাবুয়ের সামনে। শেন উইলিয়ামসের বলে উইকেটের পিছন থেকে সেই ডিকভেলারই ক্যাচ ফেলে দেন চাকাভা। জয় থেকে তখনও ১০২ রান দূরে স্বাগতিকরা। জিম্বাবুয়ে ম্যাচ বের করে আনার তৃতীয় সুযোগটিও হাতছাড়া করেন চাকাভা। ক্রেমারের বলে গুনারতেœর স্টাম্পিং মিস করেন তিনি। গুনারতেœ তখন ৫৪ রানে। এই গুনারতেœই দিলরুয়ান পেরেরাকে (২৯*) নিয়ে সপ্তম উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ৬৭ রানের জুটিতে জয় নিশ্চিত করেন। তার নামের পাশে তখন ১৫১ বলে ৮০* রানের হার না মানা ইনিংস।
ক্রেমারদের পঞ্চম দিনের শুরুতেও ছিল জয়ের আভাস। ৩ উইকেটে ১৭০ রান নিয়ে দিন শুরু করা লঙ্কানদের ইনিংস ৫ উইকেটে ২০৩ হয়ে যায় ক্রেমারের হাত ধরেই। আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান কুসল মেন্ডিস (৬৬) ও অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসকে (২৫) ফেরান এই লেগ স্পিনার। এত কাছে গিয়েও লঙ্কানদের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট জয়ের ইতিহাসটা রচনা করতে পারল না জিম্বাবুয়ে।
শ্রীলঙ্কানরা তো বটেই এই ম্যাচ ক্রিকেটপ্রেমিকদের মনে থাকবে দীর্ঘদিন। যে ম্যাচে তিন তরুণের হাতেই লেখা হলো লঙ্কানদের বিজয়গাথা। গুনারতেœ ও ডিকভেলা, যাদের মিলিত টেস্ট ম্যাচের সংখ্যা ১২ এবং ২২ বছর বয়সী মেন্ডিস। তবে ম্যাচের নায়ক তাদের কেউ নন, দুই ইনিংস মিলে ১১ উইকেট নেয়া রঙ্গনা হেরাথ।
টেস্টে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়
জয়ী দল স্কোর প্রতিপক্ষ ভেন্যু সাল
উইন্ডিজ ৪১৮/৭ অস্ট্রেলিয়া সেন্ট জোস ২০০৩
দ.আফ্রিকা ৪১৪/৪ অস্ট্রেলিয়া পার্থ ২০০৮
অস্ট্রেলিয়া ৪০৪/৩ ইংল্যান্ড লিডস ১৯৪৮
ভারত ৪০৬/৪ উইন্ডিজ পোর্ট অব স্পেন ১৯৭৬
শ্রীলঙ্কা ৩৯১/৬ জিম্বাবুয়ে কলম্বো ২০১৭
সংক্ষিপ্ত স্কোর
জিম্বাবুয়ে : ৩৫৬ ও ৩৭৭।
শ্রীলঙ্কা : ৩৪৬ ও (লক্ষ্য ৩৮৮) ১১৪.৫ ওভারে ৩৯১/৬ (করুনারতেœ ৪৯, থারাঙ্গা ২৭, মেন্ডিস ৬৬, চান্দিমাল ১৫, ম্যাথিউস ২৫, ডিকভেলা ৮১, গুনারতেœ ৮০*, পেরেরা ২৯*; উইলিয়ামস ২/১৪৬, ক্রেমার ৪/১৫০)।
ফল : শ্রীলঙ্কা ৪ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা : রঙ্গনা হেরাথ (শ্রীলঙ্কা)।
সিরিজ : একমাত্র টেস্টে জয়ী শ্রীলঙ্কা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।