Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা দেখলেও কিছু দেশ চুক্তির সফলতা নিয়ে শঙ্কিত

টিপিপি বাস্তবায়ন নিয়ে সদস্য দেশগুলো এখনো দ্বিধাবিভক্ত

| প্রকাশের সময় : ১৭ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিপিপি) থেকে যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয়ার পর চুক্তিটির ভবিষ্যত নিয়ে দুদিনের বৈঠক করেছেন বাকি ১১ দেশের শীর্ষ আলোচকরা। গত বৃহস্পতিবার জাপানে বৈঠক শেষেও বিস্তৃত পরিধির এ চুক্তি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে মতভেদ রয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের চলে যাওয়ায় কোনো কোনো দেশ লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা দেখলেও কিছু দেশ আবার চুক্তির সফলতা নিয়ে শঙ্কিত। বৈঠক শেষে জাপানের শীর্ষ আলোচক কাজুইয়োশি উমেমোতো সাংবাদিকদের জানান, ১১টি দেশ চুক্তির দ্রুত বাস্তবায়নে অঙ্গীকারবদ্ধ। একই সঙ্গে দেশগুলো একটি নতুন আন্তর্জাতিক চুক্তির আহŸান জানিয়েছে। তবে নতুন চুক্তির ধরন নিয়ে এখনো কোনো কিছু স্পষ্ট নয় বলে উমেমোতো জানান। বিশেষ করে বাণিজ্য চুক্তির মূল বিষয়বস্তুর কতটা পরিবর্তন প্রয়োজন এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগ-সংক্রান্ত নিয়ম পর্যালোচনার প্রয়োজন পড়বে কিনা, ১১ দেশের মধ্যে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা বাকি রয়েছে। বৈঠকে আলোচকরা একটি বিষয়ে কেবল সম্মত হয়েছেন, তা হলো নতুন কোনো চুক্তির ক্ষেত্রে মূল টিপিপির নিয়মগুলো একটি ভবিষ্যত নির্দেশিকা হতে পারে। চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তুতিমূলক কাজ নভেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করতে চায় সদস্য দেশগুলো। ফলে ইস্যুগুলো নিয়ে আরো আলোচনার জন্য অস্ট্রেলিয়ায় আগস্টের শেষে বা সেপ্টেম্বরের শুরুতে পুনরায় বৈঠকে মিলিত হবেন আলোচকরা। নভেম্বরে ভিয়েতনামে অনুষ্ঠিতব্য এশিয়া প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন (এপেক) সম্মেলনের পাশাপাশি ১১ দেশের নেতারা বৈঠকে বসবেন বলে আশা করা হচ্ছে। বর্তমান নিয়ম অনুসারে, টিপিপি বাস্তবায়নের জন্য অন্তত ছয়টি মূল স্বাক্ষরকারী দেশের সম্মতির প্রয়োজন। যাদের সমন্বিত জিপিডির পরিমাণ ১২টি স্বাক্ষরকারী দেশের মোট জিডিপির ৮৫ শতাংশ হবে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের একারই টিপিপি জিডিপির ৬০ শতাংশ থাকায় এবং চুক্তি থেকে দেশটি নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয়ায়, বর্তমান নিয়মের অধীনে চুক্তির বাস্তবায়ন অসম্ভব হয়ে পড়েছে। টিপিপি বাস্তবায়নের জন্য বাকি সদস্যগুলোর মধ্যে জাপানসহ কয়েকটি দেশ চুক্তির অন্যান্য অংশ পর্যালোচনা ছাড়া কেবল প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনতে আগ্রহী। অন্যদিকে কয়েকটি দেশ বিনিয়োগ বিষয়ে নতুন আলোচনার আহŸান জানিয়েছে। টিপিপির মূল ১২টি দেশের মধ্যে রয়েছেÍ অস্ট্রেলিয়া, ব্রুনাই, কানাডা, চিলি, জাপান, মালয়েশিয়া, মেক্সিকো, নিউজিল্যান্ড, পেরু, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাষ্ট্র ও ভিয়েতনাম। পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে আলোচনার পর গত বছরের ফেব্রæয়ারিতে ১২টি দেশের মন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে টিপিপি স্বাক্ষর করেন। চলতি বছরের শুরুতে বিশ্বের সর্ববৃহৎ বাণিজ্য চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নাম প্রত্যাহার করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তা সত্তে¡ও চুক্তিটি এখন পর্যন্ত টিকে আছে। মে মাসে ওয়াশিংটনকে ছাড়াই চুক্তি এগিয়ে নিতে সম্মত হয় বাকি দেশগুলো। কিন্তু চুক্তিটি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ মতভেদ একটি বড় বাধা হয়ে উঠেছে। ইকোনমিস্ট করপোরেট নেটওয়ার্কের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিচালক এন্ড্রু স্ট্যাপলস বলেন, একদিকে জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড কেবল প্রয়োজনীয় পরিবর্তন এনে চুক্তিটি এগিয়ে নিতে চাপ দিচ্ছে। অন্যদিকে মালয়েশিয়া ও ভিয়েতনামের মতো দেশ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশাধিকার ছাড়া চুক্তির সফলতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয়ার আগে চুক্তির শীর্ষ সুবিধাভোগীর মধ্যে কুয়ালালামপুর ও হ্যানয়ের নাম ছিল। টিপিপির ফলে প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ ও রফতানি বৃদ্ধির আশা করছিল দেশ দুটি। যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্য প্রধান আমদানিকারকদের শুল্ক অব্যাহতির ফলে ভিয়েতনামের বস্ত্র শিল্প এবং মালয়েশিয়ার ইলেকট্রনিকস খাত সবচেয়ে বেশি লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। স্ট্যাপলস জানান, মার্কিন বাজারের সুবিধা পাওয়ার জন্য উভয় দেশের সরকার ব্যবসায়িক পরিবেশে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে সম্মত হয়। সিনহুয়া, সিএনবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ