Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ডোকলামকে কেন্দ্র করে ভারত-চীন স্নায়ুযুদ্ধ

ভুটানের ওপর প্রভাব খাটানোর মাসুল গুনছে ভারত

| প্রকাশের সময় : ১৭ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : ছোট্ট শান্তিপ্রিয় বন্ধু দেশ ভুটানের অনুরোধে আপাতত চোখে সর্ষে ফুল দেখছে ভারতের নরেন্দ্র মোদির সরকার। ভুটানের ডোকলাম উপত্যকাকে কেন্দ্র করে ভারত-চীন স্নায়ুযুদ্ধ এখন তুঙ্গে। দুই দেশই বাড়তি সেনা মোতায়েন করেছে ওই এলাকায়। ভুটান ওই বাড়তি আড়াই হাজার সেনা প্রত্যাহার করে নেয়ার জন্য কূটনৈতিক চ্যানেলে অনুরোধ জানিয়েছে ভারতকে। চীনকেও একই অনুরোধ করেছে তারা। চীনের সঙ্গে এই দ্ব›েদ্ব ভুটান যে এভাবে বেঁকে বসতে পারে, তা ভাবতেই পারেননি ভারতের কূটনীতিকরা। হিমালয়ের কোলের এই রাষ্ট্রকে তার নিয়ন্ত্রণে থাকা দেশ বলেই মনে করে দিল্লি। ১৯৪৯ সালে ভুটানের সঙ্গে শান্তিচুক্তি করেছিলেন জওহরলাল নেহরু। সেই চুক্তিতে বলা হয়েছিল, পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে ভুটান ভারতের পরামর্শ মেনে চলবে। ২০০৭ সালে ভুটান যখন পুরোপুরি রাজতন্ত্র থেকে সংসদীয় গণতন্ত্রে যায়, তখন চুক্তিপত্র থেকে এই ধারাটি বাদ দেয়া হয়। যদিও কার্যক্ষেত্রে থিম্পুর ওপর দিল্লির প্রভাব খুব একটা খর্ব হয়নি। কিন্তু হঠাৎ করে দেশটির উল্টো কথা দিল্লি কাছে বেসুরো ঠেকেছে। কূটনীতিকদের মতে, প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সার্বিকভাবেই ভারতের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। ভারতের মোড়লিপনার কারণে নেপাল, শ্রীলংকাসহ বাংলাদেশের সঙ্গেও নানা বিষয়ে জটিলতা বাড়ছে। সেই সুযোগটাই নিচ্ছে চীন। তারা নেপাল, শ্রীলংকা, মিয়ানমার, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি ঘটিয়েছে। সেই সব দেশের সীমান্ত এলাকায় অবকাঠামো নির্মাণের কাজও করছে বেইজিং। ডোকলাম নিয়ে চীন ভারতকে জানিয়েছে, এটা তাদের সঙ্গে ভুটানের দ্বিপক্ষীয় বিষয়। দিল্লির সঙ্গে তারা আলোচনা করবে কেন? ভারত ওই এলাকা থেকে সেনা না সরালে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছে তারা। পাশাপাশি, মোদি সরকার এখন বুঝতে পারছে, চীনকে এতটা খোঁচানো ঠিক হয়নি। সেই কারণে সর্বদলীয় বৈঠক এবং বরফ গলানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু চীনের এতটা ক্ষুব্ধ হওয়ার কারণ কী? ভারত দীর্ঘদিন ধরেই তিব্বতকে চীনের অঙ্গ হিসেবে মেনে নিলেও গত লোকসভা ভোটের আগে অরুণাচল প্রদেশে গিয়ে ফের সেই বিতর্ক উসকে দেন মোদি। ভোটের পর চীনের আপত্তি সত্তে¡ও দলাই লামা অরুণাচল যান এবং সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিবৃতি দিয়ে বলেন, আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র তিব্বত (অর্থাৎ চীন নয়)। এর পাশাপাশি, পাক অধিকৃত কাশ্মিরের গিলগিট দিয়ে বেলুচিস্তানের গবদর বন্দর পর্যন্ত অর্থনৈতিক করিডোর গঠনে ভারতের বাধা দেয়া এবং বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে ভারত যোগ না দেয়ায় চীন ক্ষুব্ধ। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র অবশ্য বলছে, মোদি চীন সম্পর্কে ভারতের নীতির পুনর্গঠন করছেন। তাদের দাবি, রাজীব গান্ধী থেকে মনমোহন সিং, সবাই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের প্রভাব সহ্য করে এসেছেন। কিন্তু এই প্রথম চীনকে অস্বস্তিতে ফেলেছে মোদির কৌশল। যদিও অধিকাংশ কূটনীতিকই মনে করেন, সামরিক দিক থেকে চীন এখনও ভারতের চেয়ে শক্তিশালী। ভারতীয় কূটনীতিকদের আশঙ্কা, ভুটানের বিতর্কিত ভূখন্ড নিয়ে চীন যদি জাতিসংঘে যায়, সে ক্ষেত্রে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য রাশিয়া কতটা ভারতের পাশে থাকবে? দ্বিতীয়ত, শিলিগুড়ির কাছে চিকেন নেক অবরুদ্ধ হলে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে ভারতের মূল ভূখন্ডের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। তৃতীয়ত, ইসরাইল ভারতের পাশে থাকবে বলে আশা করা হলেও দেশটির প্রধানমন্ত্রী স¤প্রতি চীন সফরে গিয়ে বন্ধুত্বের অঙ্গীকার করে এসেছেন। এবিপি নিউজ।



 

Show all comments
  • কাওসার আহমেদ ১৭ জুলাই, ২০১৭, ১১:১৩ এএম says : 2
    সবাই পারলো। আমরা যে কবে পারবো ?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ